গুরু ম্যাকেনরো। উইম্বলডনে ছাত্র রাওনিককে নিয়ে। ছবি: রয়টার্স
উইম্বলডন! বরাবরের মতোই শান্তির মরুদ্যান। আমার ঘরে ফেরা। এ বারের এই গোটা ব্রিটেনের কাছেও যতই কৌতূহলের হোক না কেন!
নোভাক জকোভিচ! ওর কাছে উইম্বল়ডন স্পেশ্যাল, যেখানে ওর সাফল্য অনবদ্য। এ বারও তার কোনও বদলের সম্ভাবনা দেখছি না। নোভাক চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। সত্যিই ওর কেরিয়ারের সেরা সময় যাচ্ছে। ও গত বারের উইম্বল়ডন চ্যাম্পিয়ন। যদিও এ বার জিতবে, কোনও গ্যারান্টি নেই। যদিও আগের বছরের তুলনায় ওর খেলা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এই মুহূর্তে নোভাক যেমন রিটার্ন শটগুলো ভীষণ ভাল খেলছে। ঐতিহাসিক ভাবে ঘাসের কোর্টে বিগ সার্ভাররা খুব ভাল করে। কিন্তু সেটা পুরো সত্যি নয়। অনেক প্লেয়ার উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রিটার্ন শটকে মূলধন করে। নোভাক আর অ্যান্ডি মারে এখন সেরা রিটার্ন শট মারে। আর হয়তো সে জন্যই গ্র্যান্ড স্ল্যামে ওদের ভাল করার এত সম্ভাবনা। উইম্বলডনে তো আরওই বেশি। নোভাক গত কয়েক বছর ওর সার্ভিস নিয়েও প্রচুর খেটেছে। ওর স্লাইস সার্ভ ঘাসের সারফেসে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হবে। নোভাক দশ দিন আগে উইম্বল়ডন পৌঁছে গ্রাস কোর্টে নীরবে প্র্যাকটিস করে যাচ্ছে। উইম্বল়ডনের প্রস্তুতিতে সে রকম কোনও ওয়ার্ম আপ গ্রাস কোর্ট টুর্নামেন্ট ও খেলে না। প্যারিসে গত কয়েক বছরই নোভাক ফাইনাল খেলছে। তাই ওর জন্য উইম্বল়ডনের আদর্শ প্রস্তুতির উপায় হল নিজেকে খোলামেলা রাখো, খেলার বাইরে দিনকয়েক থাকো, সময় কাটাও। তার পরে প্র্যাকটিস কোর্টে ফেরো।
প্রস্তুতি ব্যাপারটা এক-একজনের জন্য এক-এক রকম। যেমন মারে সব সময় কুইন্স খেলে সেখানকার ভাল ফলের কুশন পিঠে উইম্বলডনে পৌঁছবে। পাঁচ বার কুইন্স জিতল মারে। ওকে আমি এ বারের শক্তিশালী দাবিদার মনে করছি। নোভাকের সঙ্গে মারের প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা সত্যিই স্পেশ্যাল। ফরাসি ওপেন থেকে ফেডেরারের সরে দাঁড়ানো আর নাদালের চোট পাওয়াটা নীরবে কিন্তু নিশ্চিত ভাবে এটাই বুঝিয়ে দিয়েছে যে, বিগ ফোর জমানা শেষ। যদিও আমি মনে করি, রজার হয়তো আর একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবে। হয়তো উইম্বল়ডন। তবু নোভাক-মারে যুদ্ধের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বেশির ভাগ। এর সঙ্গে যোগ করুন একঝাঁক তরুণ প্লেয়ার। ইদানীং কিরগিওস, জেরেভ আর থিয়েম খুব ভাল পারফর্ম করেছে। যা ওদের উইম্বলডনের দ্বিতীয় সপ্তাহে তুলতে পারে। যদিও নোভাককে হারানোই সবার কাছে আসল ব্যাপার। আর নোভাক ওর খেতাব অটুট রাখতে একটা করে গেম ভেবে তৈরি হচ্ছে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার ভাবনা এখনই নেই। সেই প্রশ্ন আসবে উইম্বল়ডনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ও ঢুকলে। অপরিণত প্লেয়ারই এখনই অতটা দূর পর্যন্ত ভাববে।
এসডব্লিউ ১৯ এখন চ্যাম্পিয়ন আর হবু চ্যাম্পিয়নদের ভিড়ে ঝলমল করছে। আর আমাদের মতো কিছু পুরনো লোকজন। চেঞ্জ রুমে লেন্ডল ও ম্যাকেনরোকে পাওয়াটা দুর্দান্ত। ম্যাকেনরো এখন রাওনিকের কোচ। লেন্ডল মারের কাছে ফিরেছে। তবে আমি আগ্রহী ম্যাকেনরো প্লেয়ার্স বক্সে কী ভাবে কাটায় সেটা দেখতে!