বাংলাকে জেতানোর পথে শ্রীবৎস।ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
রবিবাসরীয় সকালের ইডেনে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ছিলেন না। কিন্তু তাঁর ছায়া দেখা গেল ঝাড়খণ্ডের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। কারও স্ট্রাইক রেট ১৪৪, তো কারও ১৪১। শেষের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান তো দু’শো ও আড়াইশো পেরিয়ে গেলেন। গোটা পাঁচেক ছয়, বাইশটা চার।
বাংলাকে কুড়ি ওভারে ১৭৮ তোলার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে এ দিন জাতীয় টি-টোয়েন্টির পূর্বাঞ্চল পর্বে একমাত্র জয়ের শেষ চেষ্টা করেছিল ঝাড়খণ্ড। কিন্তু তাও হতে দিল না বাংলা। চারে চার করার নেশায় মরিয়া বাংলার তিন ব্যাটসম্যানের তোলা ঝড়েই সৌরভ তিওয়ারিদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। একটাও ম্যাচ জেতা হল না ধোনির রাজ্যের দলের।
শ্রীবৎস গোস্বামী এই টুর্নামেন্টে বাংলার সেরা ব্যাটসম্যান। চার ম্যাচে ২০২ রান করেছেন তিনি। ৬৭.৩৩-এর গ়ড়। চার দিন আগেই ৭১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ঋদ্ধিমান সাহার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে অসমকে হারিয়েছেন। এ দিন তাঁকে সঙ্গ দিলেন অভিষেক রামন (৩৭) ও প্রমোদ চাণ্ডিলা (৩৭)। প্রথমের রামনের সঙ্গে ৭৩ রানের পার্টনারশিপ ও পরে অপরাজিত চান্ডিলার সঙ্গে তাঁর ৭১ রানের জুটি বাংলাকে পাঁচ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা (৫) ও মনোজ তিওয়ারি (৪) ব্যর্থ হলেও অন্যদের লড়াই বিফলে যায়নি। ম্যাচের শেষে শ্রী বললেন, ‘‘সাদা বলে বরাবরই আমি ভাল ব্যাট করি। তবে আজ যে রকম উইকেট ছিল, তাতে ১৭০ থেকে ১৮০-র টার্গেট যে তোলা সম্ভব, তা জানতাম।’’ ঋদ্ধিমান সাহা কিপিংটা সামলে দেওয়ায় শ্রী খোলা মনে ব্যাটিং করতে পারছেন, এমন মনে করা হলেও তিনি নিজে কিন্তু উল্টোটাই বলছেন। তাঁর মতে, ‘‘আমার তো মনে হয়, কিপার-ব্যাটসম্যানের রোলে একসঙ্গে থাকাটাই আমার কাছে কম চাপের। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে থাকলে বেশি চাপ থাকে।’’
শ্রীবৎসের পারফরম্যান্সে তো ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারি স্বাভাবিক ভাবেই খুশি। তবে তিনি আরও খুশি দলের তরুণরা দায়িত্ব নিয়ে তাঁকে সঙ্গ দেওয়ায়। সন্ধেয় বললেন, ‘‘এই যে তরুণরা দায়িত্ব নিচ্ছে, এটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে খুশির খবর। সিনিয়রদের তো দায়িত্ব নেওয়ারই কথা। যেমন শ্রী নিল। সঙ্গে সঙ্গে জুনিয়রদেরও দায়িত্ববান হতে হবে। যেটা আজ রামন ও চান্ডিলা করে দেখাল। আশা করি এই পারফরম্যান্স বিজয় হাজারে ট্রফিতেও (জাতীয় ওয়ান ডে) দেখা যাবে। ওখানে আরও কঠিন লড়াই। সেই লড়াইয়ের জন্য যে আমরা অনেকটাই তৈরি, তা বোঝা গেল এই কয়েক দিনে। এর জন্য ভিশন ২০২০-রও কৃতিত্ব রয়েছে।’’
ক্রিকেটারদের ছন্দে রাখার জন্য বাংলার প্রস্তুতি শিবির শুরু হবে এই সপ্তাহেই। তার আগে সোমবার বেছে নেওয়া হবে প্রাথমিক দল।