মণিপুরের নতুন ক্লাব ট্রাউ এ বার খেলবে আই লিগে। ছবি: ট্রাউয়ের ফেসবুক পেজ থেকে।
কলকাতা লিগের ডার্বিতে দু’ প্রধানের প্রথম একাদশে বাঙালি ফুটবলারের সংখ্যা ছিল মাত্র চার। একসময়ে ইস্ট-মোহন ম্যাচে বাঙালি ফুটবলাররাই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতেন। এখন বাঙালি ফুটবলারই খুঁজে পাওয়া যায় না ডার্বিতে।
আই লিগের নতুন ক্লাব ট্রাউ ভিন্ন রাস্তায় হেঁটে ছয় বাঙালি ফুটবলার ও এক বাঙালি ফিজিক্যাল ট্রেনারকে নিয়েছে। মণিপুরের ক্লাবে এই সংখ্যক বাঙালি ফুটবলারের উপস্থিতি কিন্তু বেশ ভালই। রাহুল বৈষ্ণব জয়দেব দাস, অবিনাশ রুইদাস, তন্ময় ঘোষ, সায়ন রায়, অভিষেক দাস, মিঠুন সামন্তরা এ বারের আই লিগে ট্রাউয়ের জার্সি পরে খেলবেন। ইতিমধ্যে তাঁরা সইও করে ফেলেছেন। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অবিনাশ রুইদাস আইএসএল-এও খেলেছেন। লাল-হলুদের প্রাক্তন ব্রাজিলীয় কোচ মার্কোস ফালোপা তো অভিষেক দাসের নাম দিয়েছিলেন ‘কাফু’। নিজেদের মেলে ধরার জন্য অবিনাশ-অভিষেকরা পাচ্ছেন পাহাড়ের নতুন ক্লাব।
সব জায়গায় যখন বাঙালি ফুটবলারের সংখ্যা কমছে, তখন ট্রাউ বঙ্গ ফুটবলারদের উপরে আস্থা রাখল কেন? ট্রাউয়ের সচিব ফুলেন মিতেই বললেন, ‘‘আমরা অভিজ্ঞ ফুটবলার খুঁজছিলাম। সেই কারণেই অবিনাশ রুইদাস, অভিষেক দাসের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলারকে দলে নিয়েছি। আমাদের ক্লাবের টাইটেল স্পনসর কলকাতার একটি সংস্থা। তারা আমাদের তিন কোটি টাকা দিচ্ছে। কলকাতার বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ফুটবলারের কথা আমাদের জানায় স্পনসরই।’’ সাত বাঙালির পাশাপাশি দলের ম্যানেজার সুজয় ভৌমিকও কলকাতা ময়দানে পরিচিত মুখ। সমীরণ নাগ গতবার মোহনবাগানের ফিজিক্যাল ট্রেনার ছিলেন। এ বার ঠিকানা বদলাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ মাথায় রেখে টি-২০ থেকে অবসর নিলেন মিতালি
ট্রাউয়ের দলে বাঙালি ফুটবলারের উপস্থিতি দেখে জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার কৃষ্ণেন্দু রায় বলছেন, ‘‘মণিপুরের ক্লাবে এত জন বাঙালি ফুটবলারকে সই করানো হয়েছে, এ তো ভাল ব্যাপার বলতেই হবে। অবিনাশ-অভিষেকরা যে সুযোগ পেয়েছে, তার সদ্ব্যবহার যেন করে। আই লিগে ওরা যদি ট্রাউয়ের হয়ে ভাল খেলতে পারে, তা হলে বাংলার ফুটবলেরই সুনাম হবে। এখানকার ক্লাবও বাঙালি প্লেয়ার নেওয়ার কথা ভাববে ভবিষ্যতে।’’ বাঙালি ফুটবলারের পাশাপাশি ১৮ জন স্থানীয় ফুটবলারকে সই করিয়েছে ট্রাউ।
ভারতের ফুটবলে এখন স্পেনের হাওয়া। সাফল্যের খোঁজে কলকাতার দু’ প্রধানে স্পেনীয় কোচ ও ফুটবলারের ভিড়। ট্রাউ এ ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রমী। জার্মান কোচ জর্জ স্টেইনব্রানারের হাতে রিমোট কন্ট্রোল তুলে দেওয়া হচ্ছে দলের। সহকারী কোচ করা হয়েছে ইংল্যান্ডের মাইক ইরাস্লেয়াসকে। ত্রিনিদাদ-টোব্যাগোর মিডফিল্ডার জেরার্ড উইলিয়ামসকে ইতিমধ্যেই সই করিয়েছে ট্রাউ। উগান্ডার স্টপার আইজ্যাক ইসিন্দেকে সই করিয়েছে মণিপুরের ক্লাব। আরও বেশ কয়েকজন বাঙালি ফুটবলারের জীবনপঞ্জী পাঠানো হয়েছে জার্মান কোচকে। ফুটবলার ট্রান্সফারের জন্য দ্বিতীয় উইন্ডো খুললে আরও কয়েকজন বাঙালি ফুটবলারকে সই করাতে পারে ট্রাউ।