কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নয়, ভোট দিন প্যানেলকে। বর্ধমান শহরে প্রচারে এসে ক্লাবের ভোটারদের কাছে এই আর্জিই রাখলেন কলকাতার মোহনবাগান ক্লাবের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর প্রার্থীরা। রবিবার দুপুরে নির্বাচনী বৈঠকটি হয় বর্ধমান শহরের একটি হোটেলে। উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগানের ফুটবল সচিব পদপ্রার্থী সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সহ সচিব পদপ্রার্থী সৃঞ্জয় বোস, অর্থ সচিব পদপ্রার্থী দেবাশিস দত্ত, প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসু।
আগামী ১৭ মে মোহনবাগান ক্লাবের নতুন কর্মসমিতি তৈরির নির্বাচন। ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ভোটার সংখ্যা প্রায় নয় হাজার। দীর্ঘদিন ধরে ক্লাবের ক্ষমতায় রয়েছেন সৃঞ্জয় বোস-দেবাশিস দত্তদের গোষ্ঠী। এত দিন ক্লাবের ভিতর বিরোধীদের অস্তিত্বই প্রায় খুঁজে পাওয়া যেত না। কিন্তু এ বার মোহনবাগানের ‘ঘরের ছেলে’ বলে পরিচিত প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য বিরোধী গোষ্ঠীর প্যানেলে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় নির্বাচন জমে গিয়েছে। পাল্টা হিসেবে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী দাঁড় করিয়েছে ক্লাবের আরেক মুখ বলে পরিচিত সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। তবে সম্প্রতি মোহনবাগানের বিরোধী গোষ্ঠীর প্রার্থী তথা তৃণমূল নেতা অতীন ঘোষ, বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে।
বৈঠকে সত্যজিৎবাবু দাবি করেন, বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্যদের বাধার জন্য ক্লাবের উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কিছু সদস্য ক্লাবের ভোটে দাঁড়িয়ে এমন বিবৃতি দিচ্ছেন যেটা ক্লাবের সংস্কৃতির পরিপন্থী। গোষ্ঠ পাল, শৈলেন মান্নার ক্লাবকে তাঁরা আদালতে টেনে নিয়ে গিয়েছেন।’’ সত্যজিৎবাবুদের গোষ্ঠীর অন্যতম প্রার্থী বিদেশ বসু বলেন, ‘‘ভোটে দাঁড়ানোর জন্য বিরোধী গোষ্ঠী আমাকে ধান্দাবাজ বলছে। আমার ক্লাবের থেকে আর নতুন করে কিছু পাওয়ার নেই। যদি কিছু দিতে পারি তাই প্রার্থী হয়েছি।’’ সৃঞ্জয়বাবু দাবি করেন, বিরোধীরা ক্লাবের নির্বাচন নিয়ে আদালতে মামলা করেছিল। কিন্তু বিচারক সেই মামলাকে গুরুত্বই দেননি।
মোহনবাগান ক্লাব ফুটবল, ক্রিকেট খেললেও বেশ কয়েক বছর হকি দল তৈরি করে না। এই নিয়ে সদস্যদের একাংশের মধ্যে মৃদু ক্ষোভ রয়েছে। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত সদস্যরা নতুন করে হকি দল তৈরির দাবি করেন। তখন ক্লাবের বর্তমান অর্থ সচিব ও ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর অন্যতম মুখ দেবাশিস দত্ত জানান, কলকাতার মোহনবাগান মাঠে হকির উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। তাই হকি দল করা হয় না। তবে ক্লাবের গ্যালারি সংস্কারে কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এ দিনের বৈঠকের আয়োজক ছিলেন বর্ধমানের বাসিন্দা অমলেন্দু সরকার। তাঁর দাবি, ১৭ মে নির্বাচনে ক্লাবের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীই জয়লাভ করবেন। তবে চিন্তা শুধু জয়ের ব্যবধান নিয়ে। এখনও পর্যন্ত বিরোধী গোষ্ঠী বর্ধমানে কোনও সভা করেনি।