ইউক্রেন থেকে সেনা না সরালে ’১৮ বিশ্বকাপ হারাতে পারে রাশিয়া

ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন না থামালে ২০১৮ বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের অধিকার হারাতে পারে রাশিয়া। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও ইউক্রেন অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনড় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপর চাপ সৃষ্টির নবতম চেষ্টায় বিশ্বকাপ ফুটবল-সহ প্রথম সারির সমস্ত খেলার আসরকে হাতিয়ার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় গোষ্ঠী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫২
Share:

ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন না থামালে ২০১৮ বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের অধিকার হারাতে পারে রাশিয়া।

Advertisement

প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও ইউক্রেন অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনড় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপর চাপ সৃষ্টির নবতম চেষ্টায় বিশ্বকাপ ফুটবল-সহ প্রথম সারির সমস্ত খেলার আসরকে হাতিয়ার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় গোষ্ঠী। একটি প্রথম সারির ব্রিটিশ দৈনিকের খবর অনুযায়ী, শুক্রবারের মধ্যে পুতিন ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহার না করলে রাশিয়ার উপর কঠোর অর্থনৈতির নিষেধাজ্ঞা বসবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবে রাশিয়ার সম্মান খর্ব করার লক্ষ্যে সংস্কৃতি ও খেলার জগতের সমস্ত আন্তর্জাতিক আসর থেকেও বহিষ্কার করা হবে।

সেনা প্রত্যাহারে পুতিনকে বাধ্য করার জন্য ঠিক কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা দরকার, তার রূপরেখা ঠিক করতে আজ থেকে ব্রাসেলসে বসেছেন ইউরোপীয় গোষ্ঠী অন্তর্ভূক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রদূতেরা। এ দিন যে গোপন খসড়া তৈরি হয়েছে, তার প্রতিলিপি হাতে এসেছে বলে দাবি করে ব্রিটিশ দৈনিকটি জানিয়েছে, ক্রীড়াক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ২০১৮ বিশ্বকাপ ফুটবল ছাড়াও রয়েছে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল, উয়েফার অন্য সব খেলা, ফর্মুলা ওয়ান রেসিংয়ের মতো বেশ কিছু হাই প্রোফাইল স্পোর্টস।

Advertisement

এমনিতে বিশ্বকাপ ফুটবল কেড়ে নেওয়া হলে রাশিয়ার যে শুধু সম্মানহানি হবে তাই নয়, বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতিও হবে। বিশেষ করে এই মুহূর্তে রুশ মূদ্রা, রুবলের দাম যেখানে রেকর্ড পরিমাণ পড়ে গিয়েছে। ফর্মুলা ওয়ানও পুরো একশো বছর পর সবে ফিরতে চলেছে রাশিয়ায়। ১৯১৪ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গের সার্কিটে শেষ রেস হয়েছিল। তার পর এ বছর অক্টোবেরের গোড়ায় সোচির নতুন তৈরি সার্কিটে হওয়ার কথা ফর্মুলা ওয়ান। কৃষ্ণ সাগরের তটে বছরের একটা বড় সময় বরফে ঢাকা সোচির পর্যটনকে নতুন করে গড়েই তোলা হয়েছে এই ফর্মুলা ওয়ান রেসকে কেন্দ্র করে। সেই রেস না হওয়াটা বড় ধাক্কা হবে রাশিয়ার জন্য। একই সঙ্গে ইউরোপীয় ফুটবলের থেকেও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে রুশ ফুটবল। জেনিথ সেন্ট পিটার্সবার্গ ও সিএসকেএ মস্কোর এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার কথা, সূচিও ঠিক হয়ে গিয়েছে। শাখতার দনেস্কের মতো প্রথম সারির ক্লাবও সমস্যায় পড়বে।

সব মিলিয়ে খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হলে অনেকটা বর্ণবৈষম্যের যুগের দক্ষিণ আফ্রিকার মতো হাল হতে পারে বিশ্বের অন্যতম ক্রীড়া-শক্তি রাশিয়ার।

ফিফা, উয়েফা বা আন্তর্জাতিক অটোমোবাইল সংগঠনের মতো সংস্থার তরফে অবশ্য নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। তবে ক’দিন আগে ইউক্রেন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সোচি রেস বাতিলের দাবি ওঠায় ফর্মুলা ওয়ান প্রধান বার্নি একলেস্টোন জানিয়েছিলেন, ফর্মুলা ওয়ান রাজনীতিতে জড়াবে না। তবে নিষেধাজ্ঞা লাগু হলে তিনিও অবস্থান পাল্টাতে বাধ্যই হবেন।

আন্তর্জাতিক খেলার জগতে রাশিয়া আগামী দিনে থাকবে না বহিষ্কারের লজ্জা মাথায় বিশ্বকাপ আয়োজনের গরিমা হারাবে, সবই নির্ভর করছে ভ্লাদিমির পুতিনের উপর। রুশ প্রেসিডেন্ট এর পরেও অনমনীয় থেকে যান, না শুক্রবারের মধ্যে সেনা সরিয়ে নেন, সেটাই দেখার অপেক্ষায় ক্রীড়া দুনিয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement