শুক্রবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নামার কিছুক্ষণ আগে এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, যার জেরে তাঁর গর্বের ফুটবল জীবনে কিছুটা হলেও দাগ লেগে থাকতে পারে। যেমন লেগে রয়েছে লিয়োনেল মেসির জীবনেও।
মেসির মতো স্পেনে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিলেন রোনাল্ডো। শুধু স্বীকারই করলেন না, এই অপরাধে দু’কোটি ১৮ লক্ষ ডলার বা এক কোটি ৮৮ লক্ষ ইউরো জরিমানা দিতেও রাজি হয়ে গিয়েছেন তিনি। শুক্রবার স্পেনের বিরুদ্ধে মাঠে নামার কিছুক্ষণ আগেই তাঁর আইনজীবীদের দল স্পেন সরকারের কর সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই চুক্তি করেন।
এই চুক্তির ফলে দু’বছরের জেল এড়াতে পারেন পর্তুগিজ অধিনায়ক। স্পেনের আইন অনুযায়ী, যদি কারও বিরুদ্ধে প্রথমবার অভিযোগ প্রমানিত হয় ও সে ক্ষেত্রে তার দু’বছরের কারাদণ্ড হলে তার জেলে না থাকলেও চলে। একই অভিযোগ উঠেছিল বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন তারকা লিয়োনেল মেসির বিরুদ্ধেও এবং তিনিও একই ভাবে কারাদণ্ড এড়িয়েছিলেন এমনই মোটা অঙ্কের জরিমানা দিয়ে। এ বার সেই পথ অনুসরণ করলেন ফুটবলবিশ্বে তাঁর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীও।
গত আর্থিক বছরে ৯ কোটি ৩০ লক্ষ ডলার আয় করে যিনি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী খেলোয়াড়ের আখ্যা পান, সেই রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে স্পেনে এক কোটি ৬৫ লক্ষ ডলার কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তাঁর এজেন্ট মারফৎ এই অভিযোগ অস্বীকার করেন রিয়াল মাদ্রিদের সেরা তারকা। কিন্তু অবশেষে তাঁকে অভিযোগ স্বীকার করতেই হল এবং মোটা জরিমানাও দিতে হচ্ছে। এই চুক্তি হলেও তাতে সিলমোহর পড়েনি এখনও। তবে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এর পরে সমস্যায় পড়তে হবে না রোনাল্ডোকে।
কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য তিনি ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থার সাহায্য নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ‘ইমেজ রাইট’ বা নিজের নামের সত্ত্ব বিক্রি করে আয়ের অঙ্ক প্রতি বছর তিনি ঘোষণাও করেননি বলে অভিযোগ উঠেছিল। গত বছর থেকেই তাঁর আইনজীবীরা বিষয়টি নিয়ে রফার চেষ্টা শুরু করেন। অবশেষে তাঁরা রোনাল্ডোর কারাদণ্ড রুখতে পারলেন। বিষয়টা এখানে থেমে না গেলে পর্তুগিজ তারকাকে আরও বড় সমস্যায় পড়তে হত হয়তো। এমনকী তাঁকে জেলেও যেতে হত হয়তো। স্পেন সরকারের কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনই রফাসূত্র বার করা না গেলে ফুটবল কিংবদন্তির হয়তো সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড ও দু’কোটি ৮০ লক্ষ ইউরো জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। যা তাঁর পক্ষে মোটেই সুখকর হত না।
আর্জেন্টিনার তারকা মেসিকেও ২০১৬-য় কুড়ি লক্ষ ইউরো জরিমানা ও ২১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে ওই অঙ্কের জরিমানার সঙ্গে আরও দু’লক্ষ ৫২ হাজার ইউরো দিয়ে মেসিকে কারাদণ্ডের শাস্তি বাঁচাতে হয়।
শুক্রবার মাঠে নামার আগেই হয়তো সুখবরটা পেয়ে যান রোনাল্ডো। তার পরেই ম্যাচে নেমে গোলও পেয়ে যান পেনাল্টি থেকে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে আসা এই খবরে কি ভাল সময়ের ইঙ্গিত ছিল?