El Clasico

‘আমাদের ক্রিকেট, স্পেনের ফুটবল’

Advertisement

কৌশিক দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০৩:৫১
Share:

স্মরণীয়: রিয়াল মাদ্রিদের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বের্নাবাউয়ে লা লিগার দূত রোহিত শর্মা। দেখলেন এল ক্লাসিকো।

ফুটবল জগতের বাইরে তিনিই প্রথম খেলোয়াড় যাঁকে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ বানিয়েছে লা লিগা। দিন কয়েক আগে মাদ্রিদে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে এল ক্লাসিকো দেখাতে। যেখানে গিয়ে একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ভারতের এই তারকা ক্রিকেটারের। সান্তিয়াগো বের্নাবাউয়ে বসে দেখেছেন রিয়াল মাদ্রিদের জয়। স্প্যানিশ ফুটবলের আঁচ কেমন লাগল? এল ক্লাসিকোর কোন কোন ঘটনা তিনি ভুলতে পারেন না? জানালেন রোহিত শর্মা। লা লিগা থেকে আনন্দবাজারকে পাঠানো ই-মেল মারফত।

Advertisement

প্রথম মাদ্রিদ সফরের অভিজ্ঞতা: এই প্রথম মাদ্রিদে এলাম। খুব বেশি ঘুরতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু যা দেখেছি দারুণ লেগেছে। খেলা দেখার অভিজ্ঞতাটাও দারুণ। এখানে এসে বুঝতে পেরেছি এল ক্লাসিকোর আসল উত্তাপটা কী রকম।

লা লিগা ভাল লাগার কারণ: অনেক বছর ধরে আমি লা লিগার খেলা দেখে আসছি। সব দলগুলোর মধ্যে এখানে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সেরা দলগুলো একে অন্যের সঙ্গে খেলে। আমি নিজে খেলোয়াড়। আর এমন একটা খেলার সঙ্গে যুক্ত যেখানে লড়াকু মেজাজের খুবই প্রয়োজন। যে কারণে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মেজাজটা খুব উপভোগ করছি।

Advertisement

লা লিগার পছন্দের দল: আমার পছন্দের দলের নাম রিয়াল মাদ্রিদ। গত ১৪ বছর ধরে আমি রিয়ালের ভক্ত। ওরা যে ভাবে ফুটবলটা খেলে, সেটা আমার দারুণ পছন্দের। রিয়াল বা ওদের ফুটবলারদের নিয়ে আমার বিশেষ কিছু বলার নেই। যারা ফুটবল ভালবাসে, তারা এই ঐতিহাসিক ক্লাবটা সম্পর্কে সমস্ত কিছু জানে। ওদের খেলায় একটা আগ্রাসী ব্যাপার থাকে। একটা আত্মবিশ্বাস থাকে। যেটা দেখতে আমার দারুণ লাগে।

মাঠে বসে ক্লাসিকো দেখার অনুভূতি: ক্লাসিকো বাদ দিন, আমি এর আগে ফুটবল স্টেডিয়ামে বসে কোনও ম্যাচ দেখিনি। ক্লাসিকো অনেক দেখেছি, কিন্তু সে সব টেলিভিশনে। আমার স্বপ্নই ছিল কোনও দিন মাঠে বসে এল ক্লাসিকো দেখব। সেই স্বপ্ন এত দিনে পূরণ হল।

কী আশা নিয়ে এসেছিলেন: আমি এখানে এসেছিলাম এক জন ফুটবল ভক্ত হিসেবে। চেয়েছিলাম, রিয়াল যেন জেতে। বেঞ্জেমা বা কেউ যেন গোল করে রিয়ালকে জেতায়। মাঠে বসে এ রকম খেলা দেখার সুযোগ তো বারবার হয় না। তাই একটা আশা নিয়ে ক্লাসিকো দেখতে গিয়েছিলাম। যেন রিয়াল জেতে। (ক্লাসিকোয় রিয়াল ২-০ গোলে হারায় বার্সেলোনাকে। গোল করেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং মারিয়ানো )।

সেরা ক্লাসিকো মুহূর্ত: অনেক আছে। মেসির হ্যাটট্রিকের কথা এখনও ভুলিনি। বার্সেলোনার রোনাল্ডিনহোকে উঠে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তরা— এই দৃশ্য এখনও চোখে ভাসে। প্রতিপক্ষ ক্লাবের সমর্থকরা অন্য দলের কাউকে ও রকম ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে, এই ঘটনা খুবই বিরল। আলাদা করে একটা মুহূর্ত বেছে নেওয়া বেশ কঠিন।

মোরিয়েন্তেসদের সঙ্গে দেখা: ওঁদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে আমি সম্মানিত। ওঁরা এক এক জন কিংবদন্তি (যে তালিকায় আছেন মোরিয়েন্তস, মেনদিয়েতা, কার্লোস পুয়োলরা)। কিন্তু আমাকে দারুণ ভাবে স্বাগত জানালেন। ওঁরা আমাকে একটা টি-শার্টও দিয়েছেন। যা আমি ভুলব না। ভারত আর স্পেনের ক্রীড়া সংস্কৃতি অনেকটা এক রকম। আমাদের যেমন ক্রিকেট, এখানে সে রকম ফুটবল। তবে ফুটবলের ইতিহাস অনেক পুরনো।

ফুটবল-ক্রিকেটের তুলনা: ক্রিকেটের তুলনায় ফুটবল অনেক বেশি প্রাচীন খেলা। কিন্তু দু’দেশের ভক্তদের মধ্যে আবেগটা একই রকম দেখলাম। খেলা দেখার ব্যাপারে প্রচণ্ড উৎসাহী। নিজের দলকে সব সময় সমর্থন করে যায়। তবে সমালোচনাও করতে ছাড়ে না। আমার মনে হয়, তাতে কোনও সমস্যা নেই। সমালোচনা ওরা করতেই পারে। কেউ যখন মাঠে নামে, তখন সমালোচনার মুখে পড়ার জন্য তাকে তৈরি থাকতে হয়। ফুটবলই হোক বা ক্রিকেট— খেলোয়াড় জীবনে সমালোচনা একটা বড় জায়গা জুড়ে থাকে। আমরা এটা টের পেয়েছি, ফুটবলাররাও নিশ্চয়ই সেটা বুঝতে পারে। দু’দেশের ক্রীড়া সংস্কৃতি অনেকটা একই রকমের। তবে ফুটবল অনেক পুরনো খেলা।

ভারতীয় ফুটবল সমর্থকদের বার্তা: লা লিগার খেলা উপভোগ করুন। আমার বিশ্বাস, এটাই বিশ্বের সেরা লিগ। বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের এই লিগে খেলতে দেখা যায়। আমি তো এই লিগ সব সময় দেখি। আর কখনও যদি ক্লাসিকো দেখার সুযোগ হয়, তা হলে লুফে নেবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement