দুই ‘বস’। ভারতের প্র্যাক্টিসে ফ্লেচারের সঙ্গে শাস্ত্রীর মাঠ-বৈঠক। শুক্রবার ট্রেন্টব্রিজে। ছবি: গেটি ইমেজেস।
কার্ডিফে জয়ের সুখকর রেশ আটচল্লিশ ঘণ্টাও টিকল না। আবার মেঘ জমতে শুরু করল ভারতীয় শিবিরে।
রোহিত শর্মা— যিনি কার্ডিফ যুদ্ধে লড়াকু হাফসেঞ্চুরি উপহার দিয়েছিলেন দলকে, তাঁকে বাকি সিরিজের জন্য আর পাচ্ছে না ভারত। ওয়ান ডে শেষে একমাত্র টি-টোয়েন্টিতেও রোহিত নেই। তাঁর ডান হাতের মধ্যমা ভেঙেছে। তাঁর জায়গায় আসছেন মুরলী বিজয়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তৃতীয় ওয়ান ডে-তে শিখর ধবনের সঙ্গে এ বার ওপেনিংয়ে যাবেন কে?
নটিংহ্যামে শুক্রবারের ভারতীয় প্র্যাকটিস যদি সূচক হয়, তা হলে নামটা অজিঙ্ক রাহানে হওয়া উচিত। এ দিনের প্র্যাকটিসে অবশ্য রাহানে নন, সবার আগে নেটে ঢুকতে দেখা গেল বিরাট কোহলিকে। কোহলি এর আগে ভারতের হয়ে ওপেন করেছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁর যা ফর্ম চলছে, তাতে আচমকা তাঁকে ওপেন করতে হয়তো পাঠানো হবে না। আরও শোনা যাচ্ছে, অম্বাতি রায়াডু টিমে ঢুকতে পারেন। আর কার্ডিফের চেয়ে নটিংহ্যাম উইকেট পাটা আর শক্ত বলে উমেশ যাদবকে খেলানো হতে পারে।
সুরেশ রায়না আবার ভারতীয় সমর্থককুলকে আশ্বস্ত করে গেলেন, টিমের ব্যটিং শক্তির প্রসঙ্গ তুলে। কার্ডিফ যুদ্ধে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে হইচই ফেলে দেওয়া ভারতীয় মিডল অর্ডারের বাঁ হাতি মেনে নিচ্ছেন, রোহিতকে এ ভাবে হারানোটা নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। বিশেষ করে ইংল্যান্ড ওপেন করাটা যখন মোটেও সহজ কাজের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু রায়না এটাও মনে করেন, টপ অর্ডারে প্রচুর অপশন আছে। ভারতের হাতে এমন ক্রিকেটার আছে যে কি না রোহিতের অনুপস্থিতিতে তাঁর জায়গা নিতে পারবে।
“মুরলী বিজয় আসছে। অম্বাতি রায়াডু আছে। সঞ্জু স্যামসন আছে। আমাদের পজিটিভ থাকতে হবে। মাঠে বুঝে নিতে হবে। টিম মিটিংয়ে ঠিক করতে হবে কাকে ওপেন করতে পাঠানো হবে,” এ দিন বলে দিলেন রায়না। সঙ্গে যোগ করলেন, “দলে প্রচুর তরুণ ক্রিকেটার আছে। অর্থাৎ, অপশন প্রচুর। এত চিন্তার কিছু নেই।”
মেঘ সরিয়ে নীল আকাশ উঁকি দিচ্ছে ট্রেন্টব্রিজে।
শুক্রবার প্র্যাক্টিসের ছবি। ছবি: টুইটার।
রায়নাকে বাড়তি ভরসা দিচ্ছে তাঁর নিজের ফর্ম। উপমহাদেশের বাইরে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন বারবার। পাশাপাশি বলছেন, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে তিনি বরাবরই পছন্দ করে এসেছেন। “ফরিদাবাদে ওদের বিরুদ্ধে নেমেই সাফল্য পেয়েছিলাম। সেটা আমার প্রথম ম্যাচ ছিল। ইংল্যান্ড বনাম ভারত সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং হয়। গত ম্যাচে আমরা ভাল করায় ড্রেসিংরুমের পরিবেশও ভাল। তবে আমরা এটাও জানি যে কাজ এখনও অনেক বাকি। এখনও তিনটে ম্যাচ আছে। টিম মিটিংয়ে বসে আমরা কিছু লক্ষ্য তৈরি করেছি। এ বার লক্ষ্যপূরণ করতে হবে।” এশিয়া কাপের সময় থেকে যিনি নিয়ম করে বসে পড়তেন নিজের ব্যাটিং নিয়ে। জঘন্য ফর্মের কারণে এশিয়া কাপের দলে তিনি ছিলেন না। “তিরিশ-চল্লিশ করে দিচ্ছিলাম। কিন্তু বড় রান পাচ্ছিলাম না। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছি তার পর। আইপিএল খেলেছি। অনেক খাটাখাটনি করে ফিরতে হয়েছে। এ বার টিমের জন্য আরও আমাকে খাটতে হবে।”
রায়না যখন ওয়ান ডে ক্রিকেটে প্রায় নিজের ‘পুর্নজন্ম’ দেখছেন, তখন ইংরেজ শিবিরে এক জন বসে আন্তর্জাতিক অভিষেকের অপেক্ষায়। নটিংহ্যামেরই ছেলে। কাউন্টির হয়ে প্রচুর রান করেছেন। ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটমহল তাঁর সঙ্গে কেভিন পিটারসেনের অভিষেকের তুলনা টানা শুরু করেছে। উচ্চতা প্রায় একই রকম, কেপি-র মতো ইনিও নাকি স্টাইলিশ। বলেও দিয়েছেন, “উত্তেজিত লাগছে। ভারতকে পাল্টাটা দিতেই হবে।”
নাম— অ্যালেক্স হেলস। বিপর্যস্ত ইংল্যান্ডের কাছে তিনিই নাকি এখন এক এবং একমাত্র ‘পরমাণু বোমা’।