জাডেজার মারকাটারি মেজাজ। মোহালিতে। ছবি: পিটিআই
ইটের বদলে পাটকেল আর কাকে বলে!
মোহালি টেস্টে বেন স্টোকস বনাম বিরাট কোহালি যুদ্ধে নতুন নাটকীয় মশলা জুড়ে গেল সোমবার। স্টোকসের অঙ্গভঙ্গির পাল্টা এ বার দিয়ে রাখলেন কোহালি।
পুরো ঘটনাটা কী?
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ইংরেজ অলরাউন্ডার এ দিন আউট হওয়ার পর অভিনব একটা ঘটনা ঘটাতে দেখা যায় কোহালিকে। স্টোকস আউট হওয়ার পরে প্যাভিলিয়নের দিকে ফিরছেন যখন, ভারত অধিনায়ককে দেখা যায় হাতের ইশারা করে কাউকে ডাকছেন। নিজের দিকে ইঙ্গিত করছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এর পর যাবতীয় ক্যামেরার লেন্স তাঁর দিকে ঘুরে যায়। এবং তার পর অদ্ভুত একটা কাজ করেন ভারত অধিনায়ক।
সোজা ঠোঁটে আঙুল চেপে দাঁড়িয়ে পড়েন!
সরাসরি বিতর্কিত যাকে বলা যাবে না ঠিকই, কিন্তু এটা যে ইংরেজ অলরাউন্ডারের প্রতি চরমতম নীরব বিবৃতি বুঝতে অসুবিধে হয় না। আসলে টেস্টের একদম প্রথম দিন থেকে স্টোকস আর কোহালির মধ্যে লেগে গিয়েছিল। প্রথম ইনিংসে স্টোকস আউট হওয়ার পরে কোহালি তাঁকে ইঙ্গিত করেন বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। স্টোকসও চুপ থাকেননি। তিনি মাঠ থেকে বেরনোর বদলে ফিরে গিয়ে উত্তেজিত ভাষায় জবাব দিতে শুরু করেন কোহালিকে। এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আইসিসির ই-মেল হজম করতে হয় ইংল্যান্ড অলরাউন্ডারকে। আইসিসি পরিষ্কার বলে দেয়, স্টোকসকে সতর্ক করা হচ্ছে মাঠে আপত্তিকর ভাষা ব্যবহারের জন্য।
দু’জনের মধ্যে উত্তেজনা এতে থেমে যেতে পারত। কিন্তু থামেনি। উল্টে গত কাল ভারতের প্রথম ইনিংসে কোহালি আউট হওয়ার পর আবার শুরু হয়। ভারত অধিনায়ককে আউট করার পর দেখা যায় স্টোকস মুখে হাত চাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে। পাশে অ্যান্ডারসন উল্লাস করছেন অবিকল কোহালির ভঙ্গিমায়। কিন্তু তিনি স্টোকস, মুখে হাত চেপে দাঁড়িয়ে। যেন বুঝিয়ে দেওযা, আইসিসির কড়কানিতে মুখ বন্ধ রাখছি। কিন্তু তাই বলে চুপ থাকছি না। বিরাটও চুপ থাকেননি। বরং স্টোকসেরই কায়দায় সোমবার তাঁকে পাল্টা জবাবটা দিয়ে রাখলেন।
দু’জনের এই লড়াই অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বনাম অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফ বিতর্ককে। সেই জার্সি ওড়ানোর পাল্টা। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে জনি বেয়ারস্টোকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটা তো বিরাটের ব্যাপার। ও যা করতে চায় করুক না। আমরা আমাদের নিজেদের কাজটা করতে চাই।’’
টিমের অধিনায়কের উত্তেজনা যে শুধু তাঁর মধ্যেই থেকে গেল, মনে করার কারণ নেই। বরং সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে যে রবীন্দ্র জাডেজাকে পাওয়া গেল, তাতে বোঝা গেল টিমেও তার সংক্রমণ ঘটেছে। জাডেজা কখনও এ দিন ইংল্যান্ডের স্ট্র্যাটেজিকে, কখনও বা তাঁর সমালোচকদের বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দিলেন। এ দিন ৯০ করে গেলে কী হবে, ব্যাটসম্যান জাডেজার পারফরম্যান্স নিয়ে মাঝেমধ্যেই প্রশ্ন ওঠে। সোমবার যার জবাবে তাচ্ছিল্য সহ জা়ডেজা বলে দেন, ‘‘আমি নিজেকে ব্যাটসম্যান হিসেবে ভাবি না। আমি ব্যাটসম্যানই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে গড়টা দেখুন। ৫৩। ’’ ইংল্যান্ডের একঘেয়ে লাইনে বল করা নিয়েও বলতে ছাড়েননি তিনি। বলে দেন, ‘‘অফস্টাম্পের বাইরে বিরক্তিকর লাইনে ওরা বল করে যাচ্ছিল। তাই ভাবলাম, দিই ওদের লাইনের বারোটা বাজিয়ে। লেগসাইডে দু’টো ফিল্ডার রেখেছিল ওরা। ওখান দিয়েই ওকসকে এক ওভারে চারটে বাউন্ডারি মেরে দিলাম!’’
টিমের মেজাজ নিয়ে এর পর আর সন্দেহ থাকে?