রাখি হালদার।
এশিয়াডে ব্যর্থ হয়েছিলেন। নির্ধারিত ওজন তুলতে না পেরে ছিটকে গিয়েছিলেন জাকার্তায়। পণ করেছিলেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সের ছাড়পত্র জোগাড় করবেনই। দেশের অন্যতম সেরা ভারোত্তোলক রাখী হালদারের সামনে সেই দরজা খুলতে চলেছে। জুলাইতে কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপ ও ডিসেম্বরে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে প্রথম তিনে থাকতে পারলেই নদিয়ার মেয়ে নামতে পারবেন অলিম্পিক্সে। চিন থেকে ফোনে বৃহস্পতিবার সকালে রাখী বলে দিলেন, ‘‘টোকিয়ো যাওয়ার সত্তর ভাগ রাস্তা পেরিয়ে এসেছি। বাকিটা শেষ দুটো প্রতিযোগিতায় করে ফেলব। ওই দুটোতেই আগে আমি পদক জিতেছি। আশা করছি সোনাই পাব ওখানে’’
চিনের নিংবোতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে বুধবার রাতে নেমেছিলেন রাখি। পদক পাবেন না জানতেন। তাঁর লক্ষ্যই ছিল প্রথম বারো জনের থেকে অলিম্পিক্সের রাস্তা খোলা। মেয়েদের ৬৪ কেজি বিভাগে ২১২ কেজি ওজন তুলে সপ্তম হয়েছেন রাখী। বলছিলেন, ‘‘এশিয়ার সেরা ২০ জন ভারোত্তোলক ছিল আমার বিভাগে। তার মধ্যে সাতে থাকতে পেরে খুশি। এটাই ছিল আমার কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলে আমার টোকিয়ো যাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।’’
টোকিয়োতে এ বার মেয়েদের ভারোত্তোলনে দু’জন মেয়ে নামতে পারবেন ভারত থেকে। চিনে এ বার ব্যর্থ হলেও ইতিমধ্যেই মীরাবাঈ চানু টোকিয়ো যাওয়ার যোগ্যতামান পেরিয়ে গিয়েছেন। দ্বিতীয় প্রতিযোগী হিসাবে যাওয়ার লড়াইতে ছিলেন দু’জন—বাংলার রাখী হালদার এবং উত্তরপ্রদেশের স্বাতী সিংহ। স্বাতী ৫৯ কেজি বিভাগে অষ্টম হয়েছেন। রাখী বলছিলেন, ‘‘আমি আর স্বাতী দু’জনেই চোট নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম। কিন্তু ওর বিভাগে প্রতিযোগী ছিল কম। আমার বিভাগে ছিল কুড়ি জন। সেটাই আমাকে এখন এগিয়ে দিয়েছে।’’টোকিয়ো যাওয়ার জন্য প্রায় দু’বছর নিজের বাড়িতে যাননি রাখী। কঠোর পরিশ্রম করেছেন জাতীয় শিবিরে। বাবা-মা অসুস্থ। তাই দেশে ফিরে মে মাসের শুরুতে দু’তিন দিনের জন্য যাবেন নদিয়ার বাড়িতে। বলছিলেন, ‘‘কমনওয়েলথে আমার সোনা আছে। সাউথ এশিয়ান গেমসেও পদক পেয়েছি। তা সত্ত্বেও কোনও ঝুঁকি নেব না। বাড়ি থেকে ফিরেই ফের নামব অনুশীলনে। টোকিয়োর টিকিটের জন্য বাকি কাজটা শেষ না করলে সারা জীবন আফসোস থেকে যাবে।’’