হতাশ: গোল করতে না পেরে আফসোস সুমিতের। নিজস্ব চিত্র
তাঁকে দেখে বুধবার অনেক প্রবীণ মোহনবাগান সমর্থকের মুখেই প্রাক্তন তারকা বিদেশ বসুর নাম।
রেনবোর সুমিত দাসকে মোহনবাগান গ্যালারিতে দেখার পর ময়দানের পরিচিত কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বিদেশদা-র মতো একটা আউট সাইড করেই গতিটা বাড়ায়। বিপক্ষের গোলে ঢুকে পড়ার একটা প্রবনতা আছে। তবে অনুশীলন করে আরও তীক্ষ্ণ হতে হবে। খেলায় বৈচিত্র আনতে হবে।’’
যাঁকে নিয়ে বুধবার ম্যাচের পর এত হইচই সেই অশোকনগরের স্ট্রাইকার কাম অ্যাটাকিং মিডিও অবশ্য বিদেশকে চেনেননা। নামও শোনেননি। ম্যাচের পর সুমিত অবশ্য আফশোসে বারবার মুখ ঢাকছিলেন। ‘‘দু’দুটো গোলের সুযোগ তৈরি করলাম। একটাও করতে পারলাম না। কী আফশোস যে হচ্ছে! মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল করতে পারলে স্বপ্ন সফল হত। এ রকম সুযোগ তো বারবার আসে না। বড় ক্লাবের বিরুদ্ধে গোল না করতে পারলে কেউ চিনবে না।’’ আসলে গোল কারাটাই গত কয়েক বছরে যে দস্তুর করে ফেলেছেন সুমিত। দু’বছর আগে কাস্টমসের জার্সিতে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন প্রথম ডিভিশন লিগে। এ বছর তাঁকে রেনবো কোচ তড়িৎ ঘোষ প্রতি ম্যাচেই নামাচ্ছেন পরিবর্ত হিসাবে। এভাবে নেমেই আগের তিনটে ম্যাচে গোল করেছেন। এ দিন অবশ্য মোহনবাগান ডিফেন্সকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েও গোল করতে পারলেন না। টিমের গোলদাতা সুরজ মাহাতোর বদলি হিসাবে তাঁকে নামানো হয়েছিল। কেন এত দেরিতে নামালেন? রেনবো কোচ বললেন, ‘‘ওর শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা আছে। পুরো সময় খেলতে পারে না।’’ যা অবশ্য পুরোপুরি অস্বীকার করেলেন সুমিত। বললেন, ‘‘স্যার এ রকম কেন বললেন জানি না। আমার কোনও সমস্যা নেই। আমি তো পরিবর্ত হিসাবেই নামি। গোলও করি।’’
আরও পড়ুন: চোটে কাবু সুহেইর, তবু দমছে না ইস্টবেঙ্গল
রেনবো নেমেছিল ইয়াও বার্নার্ডকে একমাত্র স্ট্রাইকার করে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে। ফলে সুমিতকে খেলতে হল লেফট উইংয়ে। বার্নার্ডের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়াটা বেশ ভাল। বল ধরলেই গতি বাড়ান। বাবা শাড়ির দোকানে কাজ করেন। বর্তমান ক্লাব রেনবোর আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই সেভাবে মাইনেও পান না। বলছিলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য বড় টিমে খেলা। আইএসএলে যদি ডাক পাই। গোলটা করতে পারলে সবার চোখে পড়তাম।’’
কাস্টমসে তিন বছর খেলার পর এ বার রেনবোতে সই করেছেন সুমিত। ছোট ক্লাবে যা হয়, টাকা-পয়সা খুব একটা পান না। এ বারই উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছেন। বলছিলেন, ‘‘বড় দলে আমি খেলবই।’’ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর খেলা দেখেন রাত জেগে। নিজেকে উইং হাফের চেয়ে স্ট্রাইকার হিসাবে ভাবতেই ভালবাসেন। বলছিলেন, ‘‘পাড়ায় অসীম বিশ্বাসের সঙ্গে অনুশীলন করি। ওর মতোই খেলতে চাই।’’ দুই প্রধানে খেলা অসীম অবশ্য এ বার আইএসএল খেলছেন।