অস্ত্র: ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা কে এল রাহুল। —ফাইল চিত্র।
এই সিরিজটা এমন অনেক নায়কের উত্থান দেখল, যাদের কথা আমরা ভাবিইনি। অস্ট্রেলীয় স্পিনার বা উমেশ যাদব— কেউ আলোচনায় ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ব্যাটসম্যানরা বা ভারতের কে এল রাহুল, এরা শিরোনামে ছিল না। প্যাট কামিন্স বা কুলদীপ যাদবকে আমরা ভাবনাতে রাখিইনি। আর কে ভেবেছিল অস্ট্রেলিয়া এমন একটা পিচে সিরিজ হারবে, যে ধরনের পিচে সাধারণত ওরা ক্রিকেট জীবনের বেশির ভাগ দিনেই প্রায় খেলে এসেছে? বা, ভারত যখন সিরিজ জিতছে, বিরাট কোহালিকে দেখা যাবে ড্রেসিংরুমে স্লিভলেস জার্সিতে ‘দর্শক’ হিসেবে থাকতে?
ধর্মশালার পিচটা দুর্দান্ত ছিল। বল পিচে পড়ে ছুটেছে, লাফিয়ে উঠেছে, স্পিন করেছে। ব্যাটসম্যানদের দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি ওদের ভাগ্য পরীক্ষাও করেছে। বার বার ব্যাটসম্যানরা পরাস্ত হয়েছে। উইকেটকিপারের হাতে বলগুলো এমন ভাবে পৌঁছেছে যেন দোনলা বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে। যারা যুদ্ধটা জিততে পেরেছে, তারাই পুরস্কৃত হয়েছে।
এই সিরিজ থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে কে এল রাহুল। বিপক্ষের প্রাথমিক গোলাগুলি ও-ই সামলেছে। ও প্রয়োজনে সুইপ করেছে বা জায়গা বানিয়ে অফ ড্রাইভ মেরেছে। ও ফ্লিক মারতে পারে বা সোজা অফ ড্রাইভ। আক্রমণ এবং রক্ষণের মধ্যে সূক্ষ্ম ভারসাম্যটা ও বজায় রেখেছে। গত কয়েক সপ্তাহের দমবন্ধ করা চাপটা ও ভালই সামলেছে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ হারলেও ওদের ভেঙে পড়ার কিছু নেই। লো স্কোরিং ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের হারকিউলিস হয়ে উঠেছিল স্টিভ স্মিথ।
ওদের স্পিনাররা কখনওই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বিশাল রান তুলতে দেয়নি। যারা বদলি হিসেবে অস্ট্রেলিয়া দলে এসেছিল, সেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং প্যাট কামিন্সও নিজেদের ভূমিকা ভালমতোই জানত।
জাডেজার ক্রিকেট জীবনে এই সিরিজটা একটা বড় ভূমিকা নিতে চলেছে। নিজের বোলিং এবং ব্যাটিং ক্ষমতার ওপর জাডেজার আস্থা আরও বাড়বে। অশ্বিন হয়তো লম্বা টেস্ট মরসুম শেষে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। সেই জায়গাটা ভালমতো সামাল দিয়েছে জাডেজা। রাহানের পক্ষেও মরসুমটা এর চেয়ে ভাল ভাবে শেষ হতে পারত না। এমন সময় রাহানে দায়িত্ব পেল, যখন সিরিজটা একেবারে ফিনিশিং লাইনে এসে পড়েছে।