আমেরের প্রত্যাবর্তন নিয়ে ফুটছে পাকিস্তান

পাকিস্তান ক্রিকেটে বিতর্কের নাম এখন মহম্মদ আমের! লর্ডসের ওই টেস্টে স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ওর সাময়িক বিদায় জুড়ে কম বিতর্ক হয়নি। আর এ বার যে নির্বাসন কাটিয়ে আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, এখনও বিতর্ক ওর পিছু ছাড়ছে না।

Advertisement

শাহিদ হাশমি

করাচি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:০১
Share:

পাকিস্তান ক্রিকেটে বিতর্কের নাম এখন মহম্মদ আমের!

Advertisement

লর্ডসের ওই টেস্টে স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ওর সাময়িক বিদায় জুড়ে কম বিতর্ক হয়নি। আর এ বার যে নির্বাসন কাটিয়ে আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, এখনও বিতর্ক ওর পিছু ছাড়ছে না।

আমাদের দেশের সর্বকালের সেরা দুই ক্রিকেট আইকন আমেরের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এ দিনই একটা টক শো-এ ইমরান খান আর ওয়াসিম আক্রম তাঁদের স্টান্স পরিষ্কার করে দিয়েছেন। ইমরানের মত, আমেরকে এখনই দলে ফিরিয়ে আনা উচিত। তাঁর বরং দুঃখ হচ্ছে আমের-বিরোধী শিবিরের কথা ভেবে। আক্রম আবার বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমেরই দেশের সেরা বোলার।’’

Advertisement

তাই বলে আমেরের সামনে রাস্তা যে গোলাপের পাপড়ি বেছানো, সেটা মোটেও নয়। জাতীয় দলের যে দু’জন ক্রিকেটার ওর বিরুদ্ধে সবচেয়ে সরব ছিল, সেই মহম্মদ হাফিজ বা আজহার আলি কিন্তু আমের নিয়ে এখনও সুর নরম করেননি। পাক বোর্ড প্লেয়ারদের দিয়ে একটা মুচলেকা সই করাতে চায় যে, আমেরের দলে ফেরা নিয়ে কারও আপত্তি নেই। তা আজহার বা হাফিজ কেউই ওটা সই করতে চাইছেন না।

এই দু’জনের মধ্যে বেশি সরব ওয়ান ডে অধিনায়ক আজহার আলি। আজ, মঙ্গলবার বোর্ড ও প্লেয়ারদের বৈঠক হওয়ার কথা। সূত্রের যা খবর, তাতে ওই বৈঠকে আজহার বোর্ডকে বলে দিতে পারেন, যে টিমে আমেরের মতো কলঙ্কিত ক্রিকেটার রয়েছে, সেই টিমকে আমি নেতৃত্ব দিতে পারব না। এ-ও শোনা যাচ্ছে যে, প্রতিবাদ হিসেবে ওয়ান ডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে পারেন আজহার।

পাক বোর্ড এটা জানে বলে হয়তো শোয়েব মালিককে বিকল্প অধিনায়ক হিসেবে প্রায় তৈরি রেখেছে। এ দিনই বোর্ডের তরফে জানানো হয় যে, দলে আমেরের মেন্টর হবেন শোয়েব। দু’জনে পাকিস্তান সুপার লিগে একই টিমে (করাচি) খেলেন। শোয়েব প্রকাশ্যে বলেওছেন যে, আমের তাঁর ছোট ভাইয়ের মতো।

একটা টিভি টক শো-এ যখন ইমরান আর ওয়াসিম তরুণ পেসারের সমর্থনে একমত, তখন আর একটা টক শো-তেই আমের-প্রসঙ্গে ধুন্ধুমার বেধে গেল অন্য দুই প্রাক্তনের মধ্যে। রামিজ রাজা এবং মহম্মদ ইউসুফ, দুই প্রাক্তন অধিনায়কের ঝগড়া ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে নেমে এল!

রামিজ বরাবরই আমের-বিরোধী। ইউসুফ আবার আমেরের পক্ষে। তো এই প্রসঙ্গে আলোচনা চলতে চলতে ইউসুফ হঠাৎ বলে বসেন, ‘‘রামিজ কোনও ক্রিকেটারই নয়। ও তো জাতীয় দলে সুপারিশে ঢুকেছিল।’’ যা শুনে ক্ষিপ্ত রামিজ পাল্টা বলেন, ‘‘ইউসুফের মিথ্যেয় পাক ক্রিকেটের অনেক ক্ষতি হয়েছে।’’

এত কিছুর পরেও কিন্তু আমেরের প্রত্যাবর্তন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। নতুন বছরে টিম যে নিউজিল্যান্ড যাচ্ছে, সেখানে ও না থাকলেই অবাক হব। কারণ আর কিছুই নয়। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পাক বোর্ডের অন্যতম পেট্রন নওয়াজ শরিফ স্বয়ং আমেরকে ফেরানোর পক্ষে। বিদেশের ভিসা নিয়ে আমের সমস্যায় পড়তে পারেন, এমন একটা গুজব ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু সে সব কিছুই হয়নি। নিউজিল্যান্ড অভিবাসন দফতর বলে দিয়েছে, আমেরকে ভিসা দিতে ওদের কোনও আপত্তি নেই।

আর একটা কথা বলি। আমাদের দেশের মানুষ কিন্তু মনপ্রাণ দিয়ে আমেরের প্রত্যাবর্তন চায়। উনিশের আমের যে ভুল করেছিল, সেটা কেউ মনে রাখতে চায় না। দেশবাসী বরং মনে রেখেছে ওর প্রতিভা। যা ক্রিকেট মাঠে নতুন করে দেখতে মুখিয়ে আছে গোটা দেশ।

এই সংক্রান্ত আরও খবর...

কেঁদে ফিরলেন আমের, নির্বাসন ইয়াসিরের

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement