স্লোভাকিয়া ম্যাচে রয় হজসন যে সব বদল করেছিল, অনেক ইংল্যান্ড প্লেয়ারদের যে প্রথম ইউরো ম্যাচে নামিয়ে দিয়েছিল, তার জন্য ওকে দোষ দেওয়া খুব সহজ। কিন্তু আমার মনে হয় একটা নির্দিষ্ট ছক মাথায় রেখে ও এগুলো করেছিল। ও ভেবে রেখেছিল, প্রথম প্ল্যানটা কাজ না করলে পরে ওয়েন রুনি আর ডেলে আলিকে নামাবে। যেটা ও করলও। যদিও তাতে কাজ হয়নি। আফসোস একটাই। ইংল্যান্ড গ্রুপ শীর্ষে থাকলে টুর্নামেন্টের বাকি পথটা হয়তো কিছুটা মসৃণ হত। তবু আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমাদেরই জেতা উচিত। ‘উচিত’ বলছি কারণ এখন পর্যন্ত আইসল্যান্ড ভয়ডরহীন, দুর্দান্ত ফুটবল খেলছে।
একটু গোলকিপারদের কথা বলি। জার্মানি ম্যাচে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের গোলকিপার মাইকেল ম্যাকগভার্নকে দেখে দারুণ লাগল। সময় সময় প্রায় একা হাতে ও জার্মান আক্রমণ রুখে দিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে মারিও গটজের যে শটটা বাঁচাল, সেটা ওর সেরা সেভ।
দুর্দান্ত ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের প্রসঙ্গে রোনাল্ডোর উল্লেখ করতেই হবে। ও-ই সম্ভবত এখন বিশ্বের সেরা ফুটবলার। দুর্ভাগ্যের হল, পর্তুগালের টিমে এগারো জন রোনাল্ডো নেই। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ওর প্রথম গোলটা নিয়ে বহু বছর আলোচনা হতে পারে। রাইট উইং থেকে আসা নিচু ক্রসে ব্যাক হিল দিয়ে নিখুঁত ফিনিশ করল। টিম যে দেশ-ফেরত বিমানে ওঠেনি, তার কারণ রোনাল্ডোর সিংহহৃদয় পারফরম্যান্স।
সপ্তাহের দুটো অঘটনের কথায় আসি। ক্রোয়েশিয়া যে ক্লান্ত স্পেনকে হারাল, তাতে আমি অবাক হইনি। ক্রোয়েশিয়া এমনিতেই আমার ডার্ক হর্স। ইতালির বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের জয়ে আমি খুব খুশি। দেখে আশ্চর্য হয়ে যাই যে, এত বছরে ইতালি প্রায় কিছুই পাল্টায়নি। ওদের ফুটবল ঘরানা দুর্দান্ত। আমি নিজে বহু বার ওদের খেলেছি। কিন্তু ইতালিকে খেলা খুব বিরক্তিকর। ওরা এক বার এগিয়ে গেলে গোটা ম্যাচ ডিফেন্ড করেই খুশি। পেনাল্টি এরিয়াতেও। আর ওরা ইতালি বলে মাঝে মাঝে রেফারিরাও এ সব দেখেন না।ইউরোর সবচেয়ে বড় হতাশা হল রাশিয়া। ওয়েলস ম্যাচে ওদের দেখে মনে হল ফুটবলাররা দেশে ফিরতে পারলে বাঁচে। ওয়েলসকে ছোট করছি না। কিন্তু রাশিয়াকে দেখে মনেই হয়নি ওরা টুর্নামেন্টে আছে।