নোভাক জকোভিচের সিংহাসনচ্যুত হওয়ার কারণ কী? ব্রিটিশ মিডিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে ব্যাখ্যা দিলেন কোচ বরিস বেকার।
প্রশ্ন: মরসুমের শুরুটা যে ভাবে হয়েছিল, শেষটা সে রকম হল না জকোভিচের। কেন?
বেকার: বছরের প্রথম ছ’মাসে অবিশ্বাস্য সফল জকোভিচ। ওর এত দিনের স্বপ্ন ফরাসি ওপেন জেতা, সেটাও এসেছে। কিন্তু মাদ্রিদ আর রোমে খেলার সময় সেই ব্যাপারটা আর ছিল না। যে কোনও খেলোয়াড়ের জীবনেই এটা হতে পারে। টানা সব কিছু জিততে থাকার পর একটা ক্লান্তি আসে। জকোভিচের ক্ষেত্রেও ফরাসি ওপেনের পর এটাই হয়েছে। ওর অধিকার আছে টেনিস থেকে সময় বার করে অন্য কিছু করার, পরিবারকে সময় দেওয়ার। কিন্তু এটা মানুষ ভুলে যায় যে জীবনে সফল হতে গেলে একবগ্গা মানসিকতা নিয়ে চলতে হয়। যে পথে চলতে চলতে কয়েক বছর পর নিজেকে একা লাগে। তা ছাড়া ফরাসি ওপেনের পর চোট আর অন্য সমস্যাও ছিল। আমাদের হাত-পা বাঁধা ছিল।
প্র: বিশ্বসেরার আসন কেন ধরে রাখতে পারলেন না জকোভিচ ট্যুর ফাইনালস জিতে?
বেকার: সেমিফাইনালে ও নিশিকোরির বিরুদ্ধে ঠিক সে ভাবে খেলেছিল যে ভাবে ও বছরের প্রথম ছ’মাস খেলেছে। কিন্তু ফাইনালে ওর খেলা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। সম্ভবত আমার কোচিংয়ে ওর সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। দু’সপ্তাহ পরেও বোধগম্য হচ্ছে না এর কারণটা কী।
প্র: অ্যান্ডি মারে যে ভাবে স্ট্রেট সেটে জকোভিচকে ফাইনালসে হারিয়ে এক নম্বর হিসেবে মরসুম শেষ করলেন, আপনার কী মনে হয় মারে জায়গাটা ধরে রাখতে পারবেন?
বেকার: মনে হয় এই ফর্মটা আসন্ন মরসুমের গোড়াতেও অ্যান্ডি ধরে রাখতে পারবে। হয়তো মে মাসের দিকে ও চাপটা বুঝতে পারবে। বুঝতে পারবে কিছু না হারানোর থাকলে পারফর্ম করা কী জিনিস আর প্রত্যাশার চাপ থাকলে সেটা কী রকম দাঁড়ায়। বিশ্বের এক নম্বর হিসেবে পারফর্ম করতে নামলে চাপটা অনেক বেশি থাকে।
প্র: আর জকোভিচ?
বেকার: গত মরসুমে একটা সময় কিন্তু জকোভিচকে কেউ হারাতে পারেনি। তাই এক নম্বরের জায়গাটা হারানো, যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে হার (স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কার কাছে) হয়তো ঠিক সময়ে ঠিক সংকেতটা জোগাবে। ওর যা বয়স তাতে আরও কঠিন পরিশ্রম করে ফের উঠে দাঁড়াতেই পারে। এটা বলছি না আসন্ন মরসুমে জকোভিচ সব কিছু জিতবে। তবে ও অনেক বেশি ফোকাসড থাকবে। যেটা এ মরসুমের শেষ ছ’মাসে ছিল না।
প্র: আগামী মরসুমে আপনি জকোভিচের কোচ থাকবেন না, এই নিয়ে জল্পনা চলছে। আপনি কী বলবেন?
বেকার: আমাদের মধ্যে কথা চলছে। এই মুহূর্তে এই প্রশ্নটার উত্তরে হ্যাঁ বা না কিছুই বলতে পারছি না।
প্র: জকোভিচকে তিন বছর কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
বেকার: খুব উপভোগ করেছি। দারুণ কেটেছে সময়টা। অবিশ্বাস্য একটা যাত্রা। কোনও আক্ষেপ নেই।
প্র: রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল চোট কাটিয়ে ফিরছেন। বলা হচ্ছে দু’জনেই পারফর্ম করতে মুখিয়ে আছেন। আপনার কী মনে হয় আসন্ন মরসুম ফের মাতাবে ‘ফ্যাব ফোর’?
বেকার: মনে হয় না। আমার ধারণা, নোভাক আর অ্যান্ডি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। তবে পরের প্রজন্মের মধ্যে অনেকে কিন্তু উঠে আসছে। ডমিনিক থিয়েম (অস্ট্রিয়ার ২৩ বছর বয়সি খেলোয়াড়, সিঙ্গলস র্যাঙ্কিং ৮), নিক কিরিয়স আছে এর মধ্যে। ডেভিড গফিন আর মিলোস রাওনিক কড়া নাড়ছে।