পূজারা
ভারত প্রথম ইনিংস ১৩০-৫
(চা বিরতিতে)
মঙ্গলবার গ্রস আইলেটে তৃতীয় টেস্টের শুরুতেই যে ধাক্কাটা খেল ভারত, তা যে খুব একটা অপ্রত্যাশিত ছিল, তা কিন্তু নয়। উইকেট বেশ জীবন্ত, বোঝা যাচ্ছিল শুরুতে পেসাররা ভাল সাহায্য পাবে, আর ভারত কি না চেতেশ্বর পূজারার মতো টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানকে বসিয়ে দিল। মনে রাখতে হবে, মুরলী বিজয়কে এই টেস্টেও পায়নি বিরাট কোহালি। তা সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্তটা সত্যি অবাক করার মতো। দলে হঠাৎ করে পরিবর্তন আর বিরাটের ব্যাটিং অর্ডারে বদল— এই দুটো ঘটনাই ভারতীয় দলের ব্যালান্সটা নষ্ট করে দিল। যার নিট ফল লাঞ্চের এক ঘণ্টা পরেই পাঁচ উইকেট হারায় ভারত।
টস হারার পর ছ’ওভারের মধ্যে ভারতের ১৯-২ হয়ে যাওয়া আর লাঞ্চে যখন ভারত ৮৭-৩, তখনই পূজারার অভাবটা টের পাওয়া যাচ্ছিল। এ রকম একটা ক্রাইসিসে পূজারার মতো ধরে খেলা ব্যাটসম্যানের প্রয়োজন খুব বেশি। ওর জায়গায় রোহিত শর্মা যে সঠিক বিকল্প নয়, তাও বোঝা গেল ও যখন কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে গেল। আসলে পূজারার মতো অর্থোডক্স ব্যাটসম্যানরা যখন উইকেটে টিকে থেকে বিপক্ষ বোলারদের হতাশ করে তোলে, তখনই চাপটা কাটানো যায়। পূজারা তো জামাইকায় খুব খারাপ খেলেনি। নিজে ৪৬ করেছে আর কে এল রাহুলের সঙ্গে একটা দামি ১২১-এর পার্টনারশিপও করেছে। তা সত্ত্বেও কেন ওকে এই ম্যাচে দলে নেওয়া হল না, বুঝলাম না।
রাহানে পূজারার কাজটাই করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু অফ স্পিনার রস্টন চেজের বলে ফিরে গেল ও। এই অবস্থায় ঋদ্ধিমানকে এই ইনিংসে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতেই হবে। ওর সামনে এটাই একটা বড় সুযোগ। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলে কিন্তু ওর টেস্ট ভবিষ্যৎ নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না।
আরও একটা ব্যাপার দেখে অবাক লাগল। ব্যাটিং অর্ডারে বিরাটের তিন নম্বরে উঠে আসা। এই সিরিজে চার নম্বরে ও ভালই খেলছিল। বলটা একটু পুরনো হওয়ার পর নামছিল। কিন্তু এ দিন তিন নম্বরে উঠে আসতে হল এমন উইকেটে যেখানে বল মুভ করছে। বিরাটের আউটটা ভারতকে বড় ধাক্কা দিয়ে গেল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জুনিয়র দলের এই পেস বোলার আলজারি জোসেফের কথা অনেক শুনেছি। ছেলেটা যে সত্যিই প্রতিভাবান, তা ওর বোলিং দেখে বুঝলাম। লেংথের জ্ঞান অসাধারণ। গতিও তেমন। কোহালিকে যে বলটাতে আউট করল, তাতে দুটোই নিখুঁত ছিল। বলটা হঠাৎ লাফিয়ে ওঠায় কোহালির মতো ব্যাটসম্যানকে চমকে দেয়। ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখার পক্ষে ওর মতো একজন বোলারই যথেষ্ট। আর শ্যানন গ্যাব্রিয়েলও কম যায় না।
গ্রস আইলেটের উইকেটটা বেশ জীবন্ত, বাউন্স রয়েছে। এই কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়েই ক্যারিবিয়ান বোলাররা সফল হল। এ রকম উইকেট দেখা যাচ্ছে যেখানে, সেখানে পূজারার মতো একজন ব্যাটসম্যানকে দলের বাইরে রেখে নামার ও ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে গবেষণা করতে যাওয়ার মাশুলই দিতেই হবে। কোহালিদের সেটাই দিতে হচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১২৬-৫ (রাহুল ৫০, বিরাট ৩, রাহানে ৩৫। জোসেফ ২-২০, চেজ ২-২১)।