জীবনে এত কষ্ট খুব কমই পেয়েছি। জানালেন নেমার।
ব্রাজিলের মহাতারকা ফুটবলার নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র) বললেন, রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পরে তাঁর আর ফুটবলের দিকেই তাকাতে ইচ্ছে করত না। এমনকি প্রতিযোগিতার বাকি ম্যাচগুলো দেখারও কোনও উৎসাহ তাঁর ছিল না। এক সাক্ষাৎকারে নেমার তাঁর বিশ্বকাপ-পরবর্তী অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে মন্তব্য করলেন, ‘‘এতটা বলছি না যে আবার কখনও ফুটবল খেলার ইচ্ছেটা আমার চলে গিয়েছিল। কিন্তু বিশ্বাস করুন আর ওই বলটার দিকেই তাকাতে চাইতাম না।’’
প্যারিস সাঁ জারমাঁর স্ট্রাইকার কথা বলছিলেন ‘নেমার প্রাইয়া গ্রান্দে ইন্সটিটিউট’-এ। সেখানে তাঁর নামাঙ্কিত একটি ‘ফাইভ-আ-সাইড’ ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছে। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘‘মনে হচ্ছিল আমার জীবনে কোনও গভীর শোকের সময় যাচ্ছে। জীবনে এত কষ্ট খুব কমই পেয়েছি। কিন্তু সবাই জানেন, আমার ছেলে আছে। আছে পরিবার, বন্ধুরা। ওরা চায়নি এত কষ্টে আমার সময় বয়ে যাক। নিজেকে তাই অনেক বুঝিয়ে শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করলাম, আমার জীবনে এই শোকের চেয়েও অনেক বেশি আনন্দ করার মতো বিষয় আছে।’’
এই অনুষ্ঠানে নেমারকে প্রশ্ন করা হয় তাঁর পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার আদৌ কোনও সম্ভাবনা আছে কি না। তিনি এমন প্রশ্নে একটু বিরক্তই হয়েছেন। বলেছেন, ‘‘বিশ্বাস করুন এ সবের পুরোটাই সংবাদ মাধ্যমের জল্পনা। এর কোথাও কোনও সত্যতা নেই।’’ ব্রাজিল ও ক্লাব দলে অতিরিক্ত প্রত্যাশা কী তাঁকে বার বার চাপে ফেলে দিচ্ছে না? এই প্রশ্নে নেমারের জবাব, ‘‘না না। বড় ফুটবলারদের এমন চাপ নিয়েই তো খেলতে হয়। আমি নিজে এই ব্যাপারটা নিয়ে খুবই সচেতন। আসলে ১৭-১৮ বছর বয়সে যখন খেলতাম তখন থেকেই আমার উপর লোকের প্রত্যাশা বড্ড বেশি ছিল। দেশ ও ক্লাবের হয়ে এত দিন খেলতে খেলতে সেই চাপ সামলে নিতে শিখে গিয়েছি। এখন আর তাই কোনও অসুবিধে হয় না।’’
কসরত: আবার ফুটবল পায়ে নেমার। সাও পাওলোয় নিজের ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ত্রাণমূলক ফাইভ আ সাইড ম্যাচের আগে। শনিবার রাতে। ছবি: এএফপি।
এই সাক্ষাৎকারেও যথারীতি এসেছে বিশ্বকাপে তাঁর ‘প্লে-অ্যাক্টিং’ প্রসঙ্গ। নেমার দুঃখ করে বলেছেন, ‘‘অবাক হয়ে দেখছি, লোকে যে ফাউল করেছে তার সমালোচনার দিকে যাচ্ছেই না। বেশি সমালোচনা হচ্ছে যাকে ফাউল করা হয়েছে তার। মনে রাখবেন, আমি বিশ্বকাপে ফুটবলটা খেলতে গিয়েছিলাম। লোকের লাথি খেতে যাইনি। আমার সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে তা আসলে অতিরঞ্জন। তবে আমি এখন যথেষ্ট পরিণত। এই ধরনের পরিস্থিতি কী করে সামলাতে হয় তা ভাল করে শিখে নিয়েছি। তবু মাঝে মাঝে মনে হয়, যদি একইসঙ্গে ফুটবল খেলা ও রেফারির কাজ করতে পারতাম তা হলে বড় ভাল হত। কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়! কী আর করা যাবে।’’
এমনিতে নতুন মরসুমে পিএসজি-র নতুন কোচ থোমাস টুশেলকে নিয়ে প্রবল আশাবাদী নেমার। এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘নতুন কোচ আমাদের ক্লাবে দারুণ একটা সংযোজন।’’