কলকাতা ডার্বি সব সময়ই নতুন তারকার জন্ম দিয়ে এসেছে। এটা কোনও নতুন ঘটনা নয়। গত কয়েকটি ডার্বি তেমনভাবে নতুন মুখ তুলে আনতে পারেনি ঠিকই কিন্তু আবার ফিরেছে সেই ঐতিহ্য। এ বার মোহনবাগানের হাত ধরে। বাগানের ১৯ বছরের আজহারউদ্দিন মল্লিক এই ডার্বির নতুন মুখ। শিলিগুড়ির মাটিতে আই লিগের ফিরতি ডার্বিতে গোল করে সনি নর্দের সঙ্গে নাম লিখিয়ে ফেললেন তিনিও। দ্বিতীয় গোলটি এল এই মিড ফিল্ডারের পা থেকেই।
ডানকুনি থেকে কলকাতা ময়দান। নামটা পরিচিত হয়েছে বেশ কয়েক বছর হল। কিন্তু সাফল্য আসলে এটাই। ডানকুনি থেকে সোজা শিলিগুড়ি সাই। সেই শিলিগুড়িতেই এই সাফল্য তাঁর জন্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ১৩ বছর বয়সে শিলিগুড়ি সাইতে যাওয়া। সোনার দোকানের সামান্য কর্মচারী বাবার আয়ে বেশ টানাটানির সংসার। সেখান থেকেই ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখার শুরু। পরিবারে এর আগে কেউ কখনও ফুটবল খেলার কথাও ভাবেনি। আট ভাইয়ের সংসারে এটা ছিল অলীক স্বপ্ন। কিন্তু আজহার ও ওয়াসিম আক্রম দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন। বাংলা ফুটবলে আজহার পরিচিত হয়ে ওঠে ইউনাইটেড স্পোর্টসের হাত ধরে। যে দলের হাত ধরে অনেক বাঙালি আজ প্রতিষ্ঠিত এই ভারতীয় ফুটবলে। কিন্তু সে বার সন্তোষ ট্রফির বাংলা দলে সুযোগ আসেনি। ২০১৪-১৫র আইএফএ শিল্ডে উঠে আসেন আজহার। এর পর একাধিক গোল করেছেন বিভিন্ন বড় দলের বিরুদ্ধে। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে এর আগেও গোল করেছেন আজহারউদ্দিন। সেটা ছিল আইএফএ শিল্ড। অনূর্ধ্ব-১৯ ইস্টবেঙ্গল দলের বিপক্ষে। এর পর মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন তাঁকে নিয়ে আসেন সবুজ-মেরুনে।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে সমর্থকদের হাতাহাতিতে সরগরম ডার্বি
গত বছর থেকেই রয়েছেন। কিন্তু তারকার ভিড়ে তেমনভাবে সুযোগ আসেনি। বলবন্ত, জেজেদের ছায়ায় ঢেকে ছিলেন এতদিন। সুযোগ পেতেই বাজিমাত। আইএসএল সৌজন্য যখন বড় নামরা অনুপস্থিত তখন কলকাতা লিগে খেলার সুযোগ পান তিনি। আই লিগে ঢুকে পড়েন অনূর্ধ্ব-২২ কোটায়। আই লিগেও যে তেমনভাবে খেলার সুযোগ পেয়েছেন তেমনটা নয়। কিন্তু সুযোগ পেয়ে যে গোলটি তিনি করলেন সেটা কোনও অংশেই সনি নর্দের থেকে কম নয়। এ বার পালা এই সাফল্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।