প্রস্তুতি: প্র্যাকটিসে মুগুরুজা ও ভিনাস। ছবি: এএফপি
গত পনেরো বছর ধরে উইম্বলডনে মহিলাদের কোনও না কোনও ফাইনালে উইলিয়ামসদের খেলতে দেখেছি। কখনও ভিনাস ও সেরিনা—দুই বোন এক সঙ্গে ফাইনালে গিয়েছে। কখনও এই দু’জনের মধ্যে কোনও এক জন। ২০১৭ তেও তার ব্যতিক্রম হতে দেখলাম না।
এ বার ফাইনালে উঠেছে ভিনাস উইলিয়ামস। ঘাসের কোর্টে ও সব সময়েই ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ। রজার ফেডেরারের মতো ভিনাসও দেখিয়ে দিয়েছে বয়স কেবলই একটা সংখ্যা মাত্র। দুরন্ত ফিটনেসকে কাজে লাগিয়ে ভিনাস এ বার ফাইনালে ওঠার পথে যাদের উড়িয়ে দিয়েছে, তাদের অনেকেই হয়তো ভিনাস যখন সার্কিটে এসেছে তখন হামাগুড়ি দেওয়ার বয়সে ছিল।
কোয়ার্টার ফাইনালে অস্তাপেঙ্কোর বিরুদ্ধে দুর্দান্ত খেলে ম্যাচ জিতেছে ভিনাস। সেমিফাইনালে ওর বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ফেভারিট ছিল ইয়োহানা কন্টা। শেষ আটে রোমানিয়ার সিমোনা হালেপকে মারাত্মক সব সার্ভ এবং গ্রাউন্ড স্ট্রোকে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল কন্টা। কিন্তু সেমিফাইনালে ভিনাসের সামনে সেই ছন্দ পেল কোথায়? ভিনাসই বরং সেমিফাইনালে কোনঠাসা করে রেখেছিল কন্টাকে।
আরও পড়ুন: ফাইনালে সহজ হবে না ভিনাসের চ্যালেঞ্জ
উল্টোদিকে অপর ফাইনালিস্ট স্পেনের গারবিনে মুগুরুজা সেমিফাইনালে বিধ্বংসী মেজাজে জিতেছে ম্যাগডালিনা রাইবারিকোভার বিরুদ্ধে। এটা মুগুরুজার তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল। বড় টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা ক্রমশঃ বাড়ছে। দু’বছর আগে এই উইম্বলডনেই সেরিনা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে ফাইনালে খেলেছিল মুগুরুজা। সে ম্যাচে কঠিন লড়াই করে হেরে গেলেও টেনিস বিশ্বকে নিজের উত্থান জানান দিয়েছিল মুগুরুজা।গত বছর ফরাসি ওপেনের ফাইনালে সেই সেরিনাকে হারিয়েই কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মুগুরুজা। শক্তিশালী গ্রাউন্ডস্ট্রোক এবং দুরন্ত সব সার্ভিস রয়েছে ওর ঝুলিতে। টেনিস বুদ্ধিও প্রবল। ফলে উইম্বলডন ফাইনালে ভিনাসের প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্তু বেশ শক্তপোক্ত।
এ বারের উইম্বলডনে সেরিনা নেই সন্তানসম্ভবা হওয়ায়। নেই মারিয়া শারাপোভাও। যা নিয়ে টুর্নামেন্টে শুরুর আগে থেকেই জোর আলোচনা এ বারের উইম্বলডনে। তা সত্ত্বেও কিন্তু মুগুরুজা বা কন্টার মতো নবীন প্রতিভা তাদের ধারাবাহিক ভাল পারফরম্যান্সের জন্য নজর কেড়েছে। আশা রাখি, আগামী দিনে আরও ঝলমলে হবে ওদের পারফরম্যান্স। ও সব কথা আপাতত যাক। ফের ঢুকে পড়া যাক, শনিবারের ফাইনালে। যে ফর্মে ভিনাস খেলছে, তা ধরে রাখতে পারলে ওকে হারানো বেশ কষ্টকর। তবে ঘাসের কোর্টে মুগুরুজাও কিন্তু বেশ ভাল খেলছে এ বার। শনিবার ভিনাসকে ফাইনালে হারিয়ে কনচিতা মার্টিনেজের পর দ্বিতীয় স্প্যানিশ হিসেবে উইম্বলডন খেতাবটা জিতে ও ইতিহাস গড়তেই পারে। ২০১৫-য় ফরাসি ওপেনে সেরিনার বিরুদ্ধে ফাইনালে ওর লড়াই স্মরণীয়। তার পর গত দু’বছরে কিন্তু ও আরও শক্তিশালী হয়েছে।