নিরাপত্তা ভেঙে ধোনির পায়ে। মঙ্গলবার ব্রেবোর্নে। ছবি: পিটিআই
ধো..ও..নি....ধো..ও..নি....ধো..ও..নি।
সচিন তেন্ডুলকরের বিদায়ী টেস্টের পর এমন শব্দব্রহ্ম শেষ কবে কোন মাঠে উঠেছে মনে করা যাচ্ছে না।
দশ ফুটের ফেন্সিং টপকে ভক্তের দৌড়, দৌড়, দৌড়। ব্যাটিংরত নায়কের একটু পায়ের ধুলো নেওয়ার জন্য।
দৃশ্যগুলো দেখলে কে বলবে এটা ভারত-ইংল্যান্ডের কোনও ওয়ান ডে নয়। নেহাতই ভারত ‘এ’ আর ইংল্যান্ড একাদশের গা ঘামানোর ম্যাচ!
আসলে ব্রেবোর্নে এ দিনই ক্যাপ্টেন হিসেবে শেষ ম্যাচ ছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির। ১৫ জানুয়ারি থেকে ক্যাপ্টেনের টুপি খুলে রেখে টিম ইন্ডিয়ায় দেখা যাবে শুধু ক্রিকেটার ধোনিকে। তাই ব্রেবোর্নে কুড়ি হাজার দর্শক মঙ্গলবার ধোনিকে কুর্নিশ জানাতে কোনও কার্পণ্য করেনি। তিনি ব্যাট করতে নামা থেকে শুরু। যখন ইনিংস শেষ করে উঠে যাচ্ছেন তখনও প্রবল চিৎকারে ভেসে যাচ্ছে ব্রেবোর্ন।
এমন টগবগে আবহে ভক্তদের ঝোড়ো একটা ইনিংস উপহার দেবেন তিনি, সেটাই তো স্বাভাবিক। ধোনি সেটাই করলেন। অধিনায়ক হিসেবে নিজের শেষ ইনিংসে ১৭০ স্ট্রাইক রেটে আটটা চার আর দুটো ছক্কায় ধুন্ধুমার ৪০ বলে অপরাজিত ৬৮ করে গেলেন। যেন মনে করিয়ে দিলেন ডেথ ওভারে এখনও কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন তিনি।
ইনিংসের শেষ ওভারে ক্রিস ওকসের বোলিং যে ভাবে ধ্বংস করে দিলেন, তাতে যেন একটাই ইঙ্গিত— ভয়ডরহীন ব্যাটিংটা আবার পাওয়া যাবে তাঁর ব্যাট থেকে। অধিনায়কের বাড়তি ‘লাগেজ’ সরিয়ে রেখে তিনি এখন অনেক চাপমুক্ত।
৬-৪-৪-২-৬-১। ওকসের শেষ ওভারে ধোনির ব্যাট থেকে এল ২৩। মাঠের এক এক দিকে ছক্কাগুলো ছিটকে পড়ে ব্রেবোর্নের গ্যালারির বারুদে যেন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছিল। যার বিস্ফোরণে একটাই আওয়াজ ধোনি..ধোনি....ধোনি। ম্যাচ অবশ্য ধোনির টিম জেতেনি, কিন্তু তাতে আবেগ ফিকে হয়নি।
যুবরাজ সিংহ আগের দিনই বলেছিলেন, ধোনি আর তিনি যে রকম ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতেন সেটাই ফের আসন্ন সিরিজে খেলতে চান। যুবরাজ বলেছিলেন, ‘‘অনেকটা সেই পুরনো দিনের মতো। যখন আমরা ক্রিকেট কেরিয়ার শুরু করেছিলাম সেই সময়কার মতো। যখন আমরা একসঙ্গে খেলতাম কোনও ভয়, আতঙ্ক কাজ করত না। এই সিরিজে আবার আমরা একই ভাবে খেলব।’’ ওয়ার্ম আপ ম্যাচ সেই ইঙ্গিতই দিয়ে গেল।
এ দিন ব্রেবোর্নে হাফসেঞ্চুরি করলেন যুবরাজও। ৪৮ বলে ৫৬। এ ছাড়া অম্বাতি রায়ডুর (১০০) সেঞ্চুরি আর শিখর ধবনের ৬৩ রানের সৌজন্যে ৫০ ওভারে ভারত ‘এ’ তোলে ৩০৪-৫। জবাবে ইংল্যান্ড স্যাম বিলিংসের ৯৩ রানের দাপটে সাত বল বাকি থাকতেই ৩০৭-৭ তুলে জিতে যায়।
তবে স্টেডিয়ামের আবহ দেখলে বোঝার কোনও উপায় নেই ভারত হেরেছে। শেষ ম্যাচে ক্যাপ্টেন ধোনি যে ততক্ষণে ভক্তদের মন জিতে নিয়েছেন।