আগমন: ফাইনাল খেলতে দিল্লি পৌঁছে গেলেন শামি। ফাইল চিত্র
রাজধানীতে বিজয় হজারে ট্রফি ফাইনাল খেলতে নামার আগে বাংলা শিবিরে নতুন অতিথি যোগ দিলেন রবিবার। ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এই তারকা অতিথির আগমনে বাংলা শিবিরে উত্তেজনা আর প্রতিপক্ষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে যাওয়ার কথা। কারণ, অতিথির নাম যে মহম্মদ শামি।
ভারতের সেরা পেস-অস্ত্র আজ, সোমবার ফিরোজ শা কোটলায় নামছেন বাংলার হয়ে। প্রায় নিঃশব্দেই তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে। যদিও ফাইনালে উঠে বাংলা শিবির থেকে তড়িঘড়ি শামিকে উড়িয়ে আনা হল, এমন ব্যাপার মোটেও ঘটেনি। উল্টে শামিকে খেলতে পাঠাচ্ছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। হাঁটুর চোটে ভুগছেন বলে শামি এখন ভারতীয় দলের হয়ে খেলছেন না। তিনি বেঙ্গালুরুতে জাতীয় অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাব করছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে দলের সঙ্গে যোগ দিতে বলা হয় রাঁচী টেস্টের জন্য। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, কোচ অনিল কুম্বলে কথা বলেন জাতীয় নির্বাচকদের সঙ্গে। তার পরেই শামিকে বাংলার হয়ে খেলতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিরাট কোহালিদের সঙ্গে রাঁচীতেই ছিলেন শামি। সেখানে ভারতীয় দলের ফিজিওর কাছ থেকে শুনতে চাওয়া হয়, শামির ফিটনেস এখন কেমন আছে। ফিজিও বলেন, সম্পূর্ণ ফিট হয়ে গিয়েছেন পেসার। তার পরেই টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করে, তা হলে বিজয় হজারে ফাইনালে শামিকে খেলতে পাঠানো হোক। তিনি বাংলার হয়ে খেললেই তো বোঝা যাবে কতটা ফিট হয়েছেন। সম্ভবত চতুর্থ টেস্টের জন্য শামিকে দলের সঙ্গে যোগ করতে চাইছে ভারতীয় শিবির। সেই ভাবনা থেকেই এমন উদ্যোগ।
যদিও ভারতীয় দল থেকে কোনও খেলোয়াড়কে পাঠানো হচ্ছে রাজ্য দলের হয়ে খেলার জন্য, এমন ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না। বরং এটাই প্রথা যে, কাউকে দরকার পড়লে এবং সেই খেলোয়াড় যদি জাতীয় দলের প্রথম একাদশে না থাকেন, রাজ্য দল থেকেই তাঁকে চেয়ে পাঠানো হয়। শামির ক্ষেত্রে কিন্তু বাংলা বা সিএবি থেকে ভারতীয় বোর্ড বা ভারতীয় দলের কাছে অনুরোধ যায়নি। সেটা নিয়ে তাই কোনও কোনও মহলে বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডাবল সেঞ্চুরির সঙ্গে একাধিক রেকর্ডে নাম লিখিয়ে ফেললেন পূজারা
কারণ, শামিকে খেলাতে হলে ফাইনালে তরুণ কোনও সদস্যকে বসাতে হবে। শোনা যাচ্ছে, সায়ন ঘোষ-কে বসিয়ে শামিকে খেলানো হবে। সমস্যা হচ্ছে, সায়ন এই টুর্নামেন্টে ভাল বল করেছেন এবং বাংলার উঠতি মিডিয়াম পেসার হিসেবে তিনি অনেকের নজরেও পড়েছেন। তাঁকে কলকাতার মালিঙ্গাও বলা হচ্ছে বোলিং অ্যাকশনের ধরনে শ্রীলঙ্কার পেসারের সঙ্গে মিল থাকার জন্য।
ক্রিকেটীয় মতে এ নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ থাকার অবকাশই নেই যে, শামি আসায় বাংলার বোলিং আক্রমণে অনেক তেজ বাড়বে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, শুধু ফাইনালের জন্য এমন পরিবর্তন করাটা বাদ যাওয়া ক্রিকেটারের ওপর অবিচার করা হবে কি না? বিশেষ করে কোপ পড়া ক্রিকেটার যদি হন কোনও প্রতিশ্রুতিমান তরুণ।
দিল্লি থেকে যদিও খবর, শামি বাংলা দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ফেলেছেন রবিবার সন্ধেতেই। তিনি খেলছেনও। জাতীয় নির্বাচকেরাও রাজধানীতে পৌঁছে গিয়েছেন। একই সঙ্গে ফাইনাল দেখবেন, আবার শামির ফিটনেস যাচাইও করা হবে। তামিলনাড়ু গত দু’বার ফাইনালে হারিয়েছে বাংলাকে। যদিও এই নেতিবাচক তথ্য মাথা থেকে বের করে দিতে চাইছে বাংলা শিবির। তাদের রিংটোন হচ্ছে, এই টুর্নামেন্টে যে রকম ফর্মে আমরা খেলেছি, ট্রফি না নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।