উদ্বিগ্ন: টানা ম্যাচ খেলার ক্লান্তি ভাবাচ্ছে আমনাকে। ফাইল চিত্র
সোমবারের মিনার্ভা পঞ্জাব বনাম আইজল ম্যাচের ফলের দিকে তাকিয়ে ছিলেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। বিশেষ করে খালিদ জামিলের পুরো টিম।
পঞ্চকুল্লায় মিনার্ভা ২-০ গোলে জিতে যাওয়ায় ইস্টবেঙ্গলের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। লিগ টেবলের এখন পরিস্থিতি যা, তাতে মিনার্ভা বাকি দুটি ম্যাচের একটিতে জিতলে এবং একটিতে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। তবে সেই অঙ্ক কাজ করবে যদি ইস্টবেঙ্গল বাকি দুটি ম্যাচ জেতে তবেই। আর খালিদের দল যদি পয়েন্ট নষ্ট করে তা হলে একটা ম্যাচ জিতলেও খেতাব পেয়ে যাবে গিলসেন চেঞ্চোরা। মিনার্ভার পয়েন্ট ১৬ ম্যাচে ৩২। ইস্টবেঙ্গলের সম সংখ্যক ম্যাচে ২৯।
নেরোকাকে টপকে সোমবার মিনার্ভা ফের লিগ শীর্ষে চলে যাওয়ায় চাপ বেড়েছে লাল-হলুদের। তারা হতাশও। তা সত্ত্বেও আল আমনা থেকে অর্ণব মণ্ডল সবাই মনে করেন, এখনও খেতাব মুঠোর বাইরে চলে যায়নি। বাকি দু’টি ম্যাচে অনেক কিছু ঘটতে পারে।
লাল-হলুদের হৃৎপিণ্ড আল আমনা এ দিন ফোনে বলে দিলেন, ‘‘লিগ টেবলে মিনার্ভা আমাদের চেয়ে তিন পয়েন্টে এগিয়ে। ওরা অ্যাডভান্টেজ পজিশনেও আছে। আজকের ম্যাচের পর মিনার্ভার খেতাব জেতার সম্ভাবনা সত্তর শতাংশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও বলছি, লিগে সব কিছু ঘটতে পারে। এখনও তো দু’দলেরই দুটি করে ম্যাচ বাকি। কে বলতে পারে অঘটন ঘটবে না।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘যতদূর মনে পড়ছে পাঁচ-ছয় বছর আগে ই পি এলের খেতাবেরও ফয়সলা হয়েছিল শেষ ম্যাচে। এ বারও সে রকম কিছু হলেও হতে পারে। তবে সে জন্য আমাদের শিলং লাজং ম্যাচ জিততেই হবে। কিছুতেই লড়াই ছাড়া চলবে না।’’
সিরিয়ান মিডিওর সঙ্গে একমত দলের অধিনায়ক অর্ণব মণ্ডলও। বলে দিলেন, ‘‘দুটো ম্যাচ আমাদের জিততে হবে। আমাদের লক্ষ্য যা ছিল তাই আছে। কিন্তু মিনার্ভা কি চেন্নাই আর চার্চিলকে হারাতে পারবে? দুটো টিমই কিন্তু অবনমনের আওতায় আছে। ওরা পয়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা তো করবেই।’’ এ দিন মিনার্ভার দুটো গোলই হয় বিরতির পর। করেন আকাশ সংগোয়ান ও বাজি আর্মান্ড। ইস্টবেঙ্গলের বাতিল বিদেশি বাজি পরিবর্ত হিসাবে নেমে ইনজুরি টাইমে গোল করেন। আইজল তিন দিন আগে ইন্ডিয়ান অ্যারোজকে তিন গোল দিয়েছে। সন্তোষ কাশ্যপের দল এ দিন অবশ্য মিনার্ভার বিরুদ্ধে সেই আগুনে মেজাজ দেখাতে পারেনি। দুই বিদেশি-সহ পাঁচ নিয়মিত ফুটবলারকেও খেলায়নি তারা। যা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
আল আমনা এ দিন পুরো ম্যাচ দেখলেও অর্ণব দেখেননি। মিনার্ভার প্রথম গোল দেখার পরই টিভি বন্ধ করে দেন লাল-হলুদ স্টপার। বলছিলেন, ‘‘আইজল জেতার মতো খেলছিল না বলে গোল হওয়ার পর টিভি বন্ধ করে দিয়েছি।’’ আমনা অবশ্য তাঁর পুরনো দলের খেলা দেখে অবাক হননি। বলে দেন, ‘‘আইজল শুক্রবার ম্যাচ খেলে পনেরো ঘণ্টা ধরে চণ্ডীগড় এসেছে। আমাদেরও একই অবস্থায় পড়তে হয়েছিল। ক্লান্তিটা একটা বড় ফ্যাক্টর। তবে আইজলের কয়েক জন ভাল ফুটবলার এ দিন খেলেনি। জানি না হয়তো চোট রয়েছে।’’ ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ইতিমধ্যেই সূচি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ফেডারেশনে কর্তাদের কাছে। মিনার্ভা যে সূচির সুবিধা পাচ্ছে, এ দিন শান্ত স্বভাবের আল আমনাও সেই অভিযোগ তুলেছেন। বললেন, ‘‘আইজল দু’দিন আগে ম্যাচ খেলে চণ্ডীগড় এসেছিল খেলতে। আর মিনার্ভা পাঁচ দিন পর খেলল। মিনার্ভা এ বার সূচির সুবিধা পাচ্ছে। লিগের শেষ দিকে একটু বেশি বিশ্রাম পেলে সব টিমই লাভবান হয়। আমাদেরও তো বাকি দুটি ম্যাচের মধ্যে ব্যবধান মাত্র দু’দিনের।’’
এ দিন ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন ছিল না। খালিদ-সহ টিমের সব ফুটবলারই দুপুর থেকে চোখ রেখেছিলেন টিভিতে। মিনার্ভা জিতে যাওয়ায় ফুটবলারদের মতো লাল-হলুদ তাঁবুতেও হতাশার চোরাস্রোত।