লড়াই: বুধবার পঞ্চকুল্লায় দেবীলাল স্টেডিয়ামে বল দখলের লড়াই শিলং লাজং এফসি এবং মিনার্ভা এফসির ফুটবলারদের। ছবি: এআইএফএফ
মিনার্ভা এফসি ৩ : লাজং এফসি ২
মিনার্ভা এফসি বনাম লাজং এফসি ম্যাচে উত্তাপের আঁচ পৌঁছে গেল কলকাতা ময়দানেও!
বুধবার হরিয়ানার পঞ্চকুল্লায় দেবীলাল স্টেডিয়ামে ঘরের মাঠে লাজংকে ৩-২ হারিয়ে খেতাবের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল মিনার্ভা। কিন্তু এই ম্যাচ লাজংয়ের গোল বাতিলকে কেন্দ্র করেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল আবহ। ম্যাচের ৬ মিনিটে এরিক দানোর গোলে এগিয়ে যায় মিনার্ভা। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগে ব্যবধান বাড়ান বালি গগনদীপ। ৬০ মিনিটে লাজংয়ের হয়ে ব্যবধান কমান ড্যানিয়েল ওডাফিন। তিন মিনিটের মধ্যে গোল করে সমতা ফেরান দো। ৮১ মিনিটে ফের গোল করে মিনার্ভাকে এগিয়ে দেন গগনদীপ। কিন্তু ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে নাটকীয় ভাবে বদলে যায় পরিস্থিতি। ৯০ মিনিটে স্যামুয়েল লালমুনপুইয়ার সেন্টার থেকে আবদৌলে কোফির হেড মিনার্ভার জালে জড়িয়ে যায়। লাইন্সম্যান গোলের নির্দেশ দিলেও তা বাতিল করে দেন রেফারি তেজস নাগবেঙ্গর। ম্যাচের পরে ক্ষুব্ধ এক লাজং কর্তা ফোনে বললেন, ‘‘রেফারি জানিয়েছেন, কোফি নাকি হেড করার সময় মিনার্ভা গোলরক্ষককে ধাক্কা দিয়েছিল। সেই কারণেই গোল বাতিল হয়েছে। অথচ ওদের গোলরক্ষককে স্পর্শ পর্যন্ত করেনি কোফি। টেলিভিশনে রিপ্লে-তেই সেটা স্পষ্ট দেখা গিয়েছে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘পুরো ঘটনাটাই আমরা সরকারি ভাবে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে জানিয়েছি। যদিও তাতে কোনও লাভ হবে বলে মনে হয় না। মিনার্ভাকে চ্যাম্পিয়ন করানোই একমাত্র লক্ষ্য এআইএফএফ-এর।’’
ম্যাচের পর রেফারিং নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করে দিয়েছে লাল-হলুদ শিবিরেও। ১৩ ফেব্রুয়ারি ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ মিনার্ভা। যে ম্যাচের উপরেই নির্ভর করছে আই লিগে লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ। ক্লাবের অন্যতম প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকার বলে দিলেন, ‘‘ফেডারেশন যে মিনার্ভাকে বাড়তি সুবিধে দিচ্ছে, সেটা সব সময়ই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বারাসতে মিনার্ভার বিরুদ্ধে প্রথম পর্বের ম্যাচে এই তেজস-ই ন্যায্য পেনাল্টি দেননি। এ দিন লাজংয়ের গোল বাতিল করলেন।’’ ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ কর্তার তোপ, ‘‘ফেডারেশন যদি আগে থেকেই চ্যাম্পিয়ন ঠিক করে রাখে, তা হলে এ ভাবে লিগ চালিয়ে যাওয়া অর্থহীন।’’ খেতাবের দৌড়ে থাকা কলকাতার আর এক প্রধান মোহনবাগান দু’টো ম্যাচই খেলে ফেলেছে মিনার্ভার বিরুদ্ধে।
মিনার্ভা বনাম লাজং সংঘাত অবশ্য ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। লাজং শিবিরের অভিযোগ, ম্যাচের আগের দিন মূল স্টেডিয়ামে প্র্যাক্টিস করতে দেওয়া হয়নি তাদের। টিম হোটেল থেকে ঘণ্টাখানেক দূরের যে মাঠে কোফি-রা প্রস্তুতি সারতে গিয়েছিলেন, তার পাশেই ছিল মিনার্ভা অ্যাকাডেমির হস্টেল। এক কর্তা বললেন, ‘‘আমাদের প্র্যাক্টিস ওরা ভিডিও ক্যামেরায় রেকর্ড করেছে। ম্যাচ কমিশনারকে আগেই তা জানিয়েছিলাম। এ বার তো আমাদের ন্যায্য গোল বাতিল করা হল।’’
আই লিগের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুনন্দ ধর দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘রেফারিং নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে লাজংয়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’