মাথায় বোতল পড়ার পর মেসি। ছবি: টুইটার
একে বার্সেলোনার জয়ের রাত! তার উপর ক্লাবের একশো পনেরোতম জন্মদিবসের পরের রাতই! অথচ নায়কের শিরোনামে নেই বার্সার দুই মহাতারকার কেউই!
মেসি অথবা নেইমার।
ভুল লেখা হল বোধহয়! দুই নক্ষত্রই রবি-রাতের লা লিগার ম্যাচেও শিরোনামে। তবে বিতর্ক ঘটিয়ে এবং বিতর্কের কেন্দ্রে থেকে!
নেইমার এবং মেসি।
এবং কাকতালীয় ভাবে যদি এক দিকে ম্যাচের শেষে মাথায় বোতলের আঘাত পেয়ে থাকেন মেসি, তা হলে অন্য দিকে আবার সেই মাথা দিয়েই বিপক্ষকে হেডবাট করেছেন নেইমার।
সের্জিও বুস্কেতসের গোলে ভ্যালেন্সিয়াকে হারিয়ে ঝুলিতে পুরো তিন পয়েন্ট। স্প্যানিশ লিগ খেতাবের দৌড়ে থাকা। গত কাল এ সবই যেমন বার্সার পক্ষে ঠিকঠাক গিয়েছে, তেমনই বিতর্কের মাত্রাও কম ছিল না মেসি-নেইমারের মেগা ক্লাবে।
খেলার প্রায় শুরু থেকেই মাঠ যেন পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে! নেইমারকে করা ট্যাকল করেন ভ্যালেন্সিয়া ওটামেন্ডি। জবাবে রাগের মাথায় বিপক্ষের আর্জেন্তাইন ফুটবলারের চোখ-নাকের মাঝের অংশে মাথা দিয়ে গুঁতো মারেন বার্সার ওয়ান্ডারকিড।
নেইমারের হেডবাটের প্রতিবাদে ভ্যালেন্সিয়ার প্রতিটা ফুটবলার ঘিরে ফেলেন রেফারিকে। পিকে, দানি আলভেজদের সঙ্গেও প্রায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন জনাকয়েক ভ্যালেন্সিয়া ফুটবলার। নেইমারকে লাল কার্ড দেখানোর জন্য তীব্র দাবি উঠলেও রেফারি এড়িয়ে যান ভ্যালেন্সিয়া দলের আবেদন। তবে তার পরে বাকি ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়ার ঘরের মাঠের গ্যালারি ঠাসা সমর্থকেরা তীব্র গালিগালাজ দিয়ে গিয়েছেন বার্সা ফুটবলারদের। বিশেষ করে নেইমারের উদ্দেশ্যে।
এ রকম গনগনে আবহে ইনজুরি টাইমে ভ্যালেন্সিয়া গোল খাওয়ায় গ্যালারি আরও তেতে ওঠে। বুস্কেতসের শেষ মুহূর্তের গোলটার পাস আবার মেসির ছিল বলে ঘরের মাঠে ভ্যালেন্সিয়া সমর্থকদের এ বার টার্গেট হয়ে দাঁড়ান এলএম টেন-ই। এতক্ষণের টার্গেট নেইমারের পরিবর্তে!
গোলের উত্সব পালন করতে গিয়ে দর্শকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন মেসি। যে দৃশ্য আজ পর্যন্ত কোনও দিন বিশ্বফুটবলে দেখা যায়নি বার্সেলোনার রাজপুত্রকে গ্যালারি থেকে বোতল ছুড়ে মারা হচ্ছে! এমনকী একটা বোতল এসে মেসির মাথায়ও লাগে। অন্য ক্লাবে যেতে ভারতীয় মুদ্রায় চারশো কোটি টাকা দর হাঁকা এলএম টেন যদিও সৌভাগ্যক্রমে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন। তবে ক্ষুব্ধ বার্সা কর্তৃপক্ষ শোনা যাচ্ছে, প্রতিবাদপত্র দিতে চলেছে স্প্যানিশ ফুটবল সংস্থাকে।
নেইমারের হেডবাট। ছবি: গেটি ইমেজেস
বার্সা কোচ আবার সাংবাদিকদের সামনে এসে ফুটবলের বাইরে কিছু নিয়ে মন্তব্য করেননি। হয়তো বিতর্ক থেকে দূরে থাকতেই! লুই এনরিকে বরং বলেন, “আমরা খুব ভাল একটা ম্যাচ খেললাম। এবং শেষে যোগ্য দল হিসেবেই জিতলাম। তবে বার্সাকে আমার খেলানোর ধরনে হয়তো আমার ফুটবলারদের মানিয়ে নিতে অসুবিধে হচ্ছে। কিন্তু ঠিক সময় মতো এই দল শক্তিশালী হয়ে উঠবে।”
মেসির সতীর্থরাও যেন বিতর্কের থেকে দূরে থাকতে চাইলেন। বার্সার একশো পনেরোতম জন্মদিনের পরের রাতে মেসি গোল না পেলেও তাঁর সাজানো বলেই জয়ের গোল আসায় টিমের নয়নের মণির প্রশংসায় পঞ্চমুখ পিকে। বলেছেন, “মেসির প্রতিভার মতো আর একটাও প্রতিভা নেই বিশ্বফুটবলে। ও মাঠে যা করে, অন্য ফুটবলারদের সেটা করা সম্ভব নয়। মেসির পা থেকে ফুটবলটা কাড়াটাই বিপক্ষের কাছে বিরাট চ্যালেঞ্জ।”