চমক ধরানো সব সাফল্য। দরজা খুলেছিল জাতীয় দলেরও। এক সময় নিয়মিত সদস্য ছিলেন। কিন্তু, সুযোগ সে ভাবে কাজে লাগাতে পারেননি। বাদ পড়েন দল থেকে। আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে থাকেন নির্বাচকদের রাডার থেকেই। এরকমই একজনের কথা বলব আজ।
ইনি রাহুল সাংভি। তিন বছরের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের প্রথম বছরেই দশটি একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে তাঁর রেকর্ড ছিল সবচেয়ে ভাল। ১৯৯৮ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজে তাঁর পারফর্ম্যান্স দেখে মুগ্ধ ছিলেন নির্বাচকরা। কিন্তু স্ফুলিঙ্গের মতো উদয় হয়েই নিভে যান তিনি।
১০টি ম্যাচে ১০ ইনিংসে ৮৩ ওভার বল করে ১০টি উইকেট পেয়েছিলেন মোট। শারজাতে কোকা কোলা কাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা বাঁ হাতি এই অর্থোডক্স স্পিনারকে খেলতে বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন।
কিন্তু পরবর্তীতে জাতীয় দলে আর সুযোগই পাননি তিনি। অথচ বলা হয়েছিল, তিনি বিশ্বকাপে খেলার ক্ষমতা রাখেন। দিল্লির হয়ে ঘরোয়া ম্যাচে ক্রমাগত ভাল পারফর্ম্যান্সের কারণে ২০০১ সালে সুযোগ মেলে টেস্ট দলে।
একটি মাত্র টেস্ট খেলে ৭৮ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। মুম্বইয়ে ২০০০-২০০১ সেশনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই টেস্ট খেলার পর তিনি আর সুযোগ পাননি। ১০ উইকেটে সেই টেস্টে হেরে গিয়েছিল ভারত।
অনূর্ধ্ব ১৯-এ ১৯৯৪ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় রাহুলের। ব্যাটসম্যানবান্ধব পিচে ব্যাটসম্যানদের কাছে তিনি ত্রাসের কারণ হতে চলেছেন, তখন বলা হত এমনটাই।
বিষাণ সিংহ বেদীর সুযোগ্য ছাত্র রাহুল লাইন, লেন্থ, টার্ন ও ফ্লাইটে নিয়ন্ত্রণ সবটাই শিখেছিলেন বেদীর থেকে। দিল্লি, নর্থ জোন ও রেলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন নিয়মিত।
রঞ্জি ট্রফিতে তাঁর রেকর্ড ছিল চোখে পড়ার মতোই। ১৯৯৭-১৯৯৮ মরসুমে বাঁ হাতি স্পিনার রাহুল হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে ১৫ রানে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। ২০ বছর পর্যন্ত এই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেননি।
তিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ২০০৬ সালে। ১৪ ওভার বলে করে ৫৪ রান দেন তিনি। তবে পাননি কোনও উইকেট।
অবসর নেওয়ার পর ইন্ডিয়া মাস্টার্সের হয়ে পরবর্তীতে বার্বাডোজে খেলেছেন তিনি। ২০১০ সালে সেই ম্যাচে তিন ওভার বল করে একটি উইকেট পান তিনি।
২০১৮ সালে ডিডিসিএ অর্থাৎ দিল্লির ক্রিকেট কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসাবে নাম ছিল রাহুলের। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রাখেন নিয়মিত। মুম্বই ইন্ডিয়ানসের ম্যানেজারও ছিলেন তিনি।
রাহুলের স্ত্রী ও দুই কন্যা রয়েছে। বর্তমানে মুম্বইয়ে থাকেন তিনি।