মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আগামী আইপিএলে আছেন? না নেই?
সুরেশ রায়নাকে চিরাচরিত হলুদ সিএসকে জার্সিতেই দেখা যাবে তো? নাকি আইপিএল নয়ে নতুন কোনও জার্সি?
স্টিভ স্মিথ— তাঁর ভাগ্যেও বা কী অপেক্ষা করছে আছে?
দু’টো বছর। ছাব্বিশ মাস। আটশো দিন। দু’বছর আগে যে ক্রিকেট-দুর্নীতির ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল দেশের ক্রিকেট-উপকূলে, যে সাসপেন্সের চাদর দিনের পর দিন ঘিরে ছিল দেশের ক্রিকেটমহলকে, তার পর্দা উঠছে আজ। মঙ্গলবার।
নয়াদিল্লিতে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছিল শান্তাকুমারণ শ্রীসন্থ-সহ তিন রাজস্থান রয়্যালস ক্রিকেটারকে। দিনটা ছিল, ১৬ মে ২০১৩। যে দিন থেকে আইপিএলকে ঘিরে একের পর এক ক্রিকেট-কলঙ্কের উন্মোচন শুরু।
নয়াদিল্লিরই লোধি রোডে দু’বছর পর সেই বৃত্ত মঙ্গলবার মোটামুটি শেষ হতে চলেছে। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বিচারপতি লোঢা কমিশন অভিযুক্ত দুই আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি চেন্নাই সুপার কিংগস এবং রাজস্থান রয়্যালস নিয়ে তাদের রায় জানাবে। জানাবে, গুরুনাথ মইয়াপ্পন ও রাজ কুন্দ্রার শাস্তির পরিমাণ কী হচ্ছে। তার চেয়েও বড়, জানা যাবে আইপিএলে এমএস ধোনি-স্টিভ স্মিথদের ভাগ্যে এ বার কী অপেক্ষা করে আছে? আইপিএল দুর্নীতিতে সিএসকে জড়িয়ে যাওয়ায় একবার তো ধোনি বলেছিলেন যে, সিএসকে না খেললে তিনি আর আইপিএল খেলবেনই না! বর্তমান পরিস্থিতিতেও তিনি একই মতবাদে অটুট থাকতে পারবেন তো? রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ, শেন ওয়াটসন, অজিঙ্ক রাহানেদেরও বা কী হবে?
রায় ঘোষণার চব্বিশ ঘণ্টা আগে ক্রিকেটমহল যে তুমুল চর্চায় ডুবে থাকবে, স্বাভাবিক। সিএসকের কিছু হয়ে গেলে পরোক্ষে সেটা প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনকে কতটা আঘাত করবে, সেটা নিয়েও জল্পনা চলছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি আলোচনাটা চলছে, ধোনি-রায়নাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ নিয়ে। লোঢা কমিশন যদি দুই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নির্বাসন-দণ্ড দিয়ে দেয়, তা হলে বলা হচ্ছে নতুন করে আইপিএল জীবন ভাবতে হতে পারে ধোনিদের। একপক্ষের মত ধরলে, সেটাই নাকি সম্ভাব্য। কঠিনতম রায়ই নাকি আসছে দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি ও তাদের সংশ্লিষ্ট মালিকদের ঘিরে। বিহার ক্রিকেট সংস্থার সচিব ও আইপিএল মামলার পিটিশনার আদিত্য বর্মা যেমন। ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই নাকি আসছে। বিপরীত মতও আছে। যেখানে মনে করা হচ্ছে, নির্বাসন নয়। বিশাল অঙ্কের জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হবে দুই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে।
কোনটা শেষ অবধি হচ্ছে, জানতে সিলভার ওকস হোটেলের দুপুর একটার ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা না করা ছাড়া উপায় নেই। দু’বছর ধরে ক্রিকেট-সাসপেন্সের অবসান তখনই হবে। শুধু একটা আগে হয়ে গেল।
ক্রিকেট-দুর্নীতির অভিযোগে মুম্বইয়ের রঞ্জি ক্রিকেটার হিকেন শাহকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে এ দিন নির্বাসিত করে দিল ভারতীয় বোর্ড।
আইপিএল আটের সময় ব্যাপারটা প্রথম জানাজানি হয়। হিকেনের নাম ওঠেনি। কিন্তু মিডিয়ায় বেরিয়ে পড়ে যে, মুম্বইয়ের এক ক্রিকেটার আইপিএলে তাঁরই রাজ্য দলের আর এক ক্রিকেটারকে দুর্নীতির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যা ওই ক্রিকেটার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতিদমন শাখাকে জানিয়ে দেওয়ায়, তদন্ত চালু করে দেয় বোর্ড। এ দিন সরকারি ভাবে জানা যায় যে, মুম্বই সতীর্থকে দুর্নীতির প্রস্তাব যে ক্রিকেটার দিয়েছিলেন, তিনি হিকেন শাহ। আর যাঁকে দিয়েছিলেন, তাঁর নাম প্রবীণ তাম্বে। যিনি আইপিলে রাজস্থান রয়্যালসে খেলেন। সোমবার বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর বিবৃতি পাঠিয়ে জানিয়ে দেন, হিকেনকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে এই মুহূর্তে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে।
যা শোনার পর মোটামুটি স্তব্ধ হয়ে যায় মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা। হিকেনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেন। বলে দেন যে, তাম্বেকে কোনও দুর্নীতির প্রস্তাব দিতে তিনি যাননি। গিয়েছিলেন, কোচিং সংক্রান্ত ব্যাপারে কথাবার্তা বলতে। ‘‘আমি শক্ড। এ সব কাজে কোনও দিন আমি ছিলাম না। যা বলার বোর্ডকে জানিয়েছি আমি। আর কিছু বলার নেই,’’ বলে দেন হিকেন।
দেশের ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ আবার মনে করছেন, হিকেন হলেন ‘টিপ অব দ্য আইসবার্গ।’ প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ এঁদের একজন। তাঁদের মনে হচ্ছে আসল রাঘববোয়ালদের নাম জানা যাবে মঙ্গলবারের পর থেকে।
নয়াদিল্লির লোঢা কমিশন রায় নাকি দীর্ঘদিনের ক্রিকেট-কলঙ্কের সমাপ্তি নয়, আগ্নেয়গিরির মুখটা ভাল করে খুলে দেবে আরও!
ক্রিকেট-দুর্নীতির অভিযোগে মুম্বইয়ের রঞ্জি ক্রিকেটার হিকেন শাহকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে এ দিন নির্বাসিত করে দিল ভারতীয় বোর্ড।...এ দিন সরকারি ভাবে জানা যায় যে, আইপিএলে মুম্বই সতীর্থকে দুর্নীতির প্রস্তাব যে ক্রিকেটার দিয়েছিলেন, তিনি হিকেন শাহ। আর যাঁকে দিয়েছিলেন, তাঁর নাম প্রবীণ তাম্বে। যিনি আইপিলে রাজস্থান রয়্যালসে খেলেন। সোমবার বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর বিবৃতি পাঠিয়ে জানিয়ে দেন, হিকেনকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে এই মুহূর্তে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে।