হতাশ: দেশের মাটিতে পেরুর সঙ্গে ড্র করে বিষণ্ণ লিওনেল মেসি। বৃহস্পতিবার বুয়েনস আইরেসে। ছবি: এএফপি।
রাশিয়ায় ২০১৮ বিশ্বকাপে লিওনেল মেসিকে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আরও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় অধিক রাতে পেরুর সঙ্গে ০-০ ড্র করেছে মেসির আর্জেন্তিনা। ম্যাচ জিততে না পেরে কনমেবল গ্রুপে ষষ্ঠ স্থানে পড়ে রয়েছেন তাঁরা। রাশিয়ায় যাওয়া নিশ্চিত করতে হলে কঠিন অঙ্কের মুখে পড়তে হবে তাঁদের। নিজেদের দোষেই পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুললেন আর্জেন্তিনার খেলোয়াড়রা। পেরুর বিরুদ্ধে ৯০ মিনিট ধরে গোল করার প্রচুর সুযোগ পেয়েও তাঁরা কাজে লাগাতে পারেননি। একেবারে গোলের সামনে থেকে পোস্টে মারেন স্বয়ং মেসি। প্রথমার্ধে তাঁর একটি বাঁকানো শট পোস্টের অনেক দূর দিয়ে চলে যায়। রাশিয়াতেই শেষ বিশ্বকাপ হতো মেসির। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, অধরা বিশ্বকাপ জেতার সুযোগই তিনি পাবেন কি না, অনিশ্চিত।
আর্জেন্তিনার কোচ জর্জে সাম্পাওলি স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘‘আমাদের পরিস্থিতি মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। তবে আমি এখনও আত্মবিশ্বাসী, বিশ্বকাপে আমরা খেলব।’’ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে সংশয় তৈরি হলেও কোচ পাশে দাঁড়ান খেলোয়াড়দের। বলেন, ‘‘ওরা সব ম্যাচে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছে। যদি এর পরেও বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন না করতে পারে, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক হবে।’’ সাম্পাওলি মেনে নেন যে, ম্যাচে আগাগোড়া আধিপত্য রেখেও গোলের মুখ খুঁজে পাননি তাঁর ফুটবলাররা। নতুন কোচের অধীনে শেষ তিনটি ম্যাচে মাত্র একটি গোল করেছে আর্জেন্তিনা। যা সাম্পাওলির উপরেও চাপ বাড়িয়ে তুলছে। যদিও আর্জেন্তিনার নতুন কোচ মনে করছেন, পেরুর বিরুদ্ধে যেমন খেলেছে তাঁর দল, সেরকম খেলতে পারলে ইকুয়েডরে গিয়ে তাঁরা জিতবেন। ‘‘চেঞ্জ রুমেও সকলে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল এটা জানতে পেরে যে, ইকুয়েডরের সঙ্গে জিততে পারলেই বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে,’’ বলছেন সাম্পাওলি। দ্রুত যোগ করছেন, ‘‘আমাদের সামনে এই পরিস্থিতি রয়েছে। এটাকে কঠিন বলা যেতেই পারে। আমরা কিন্তু সুবিধেজনক হিসেবে ধরছি কারণ জিতলেই আমরা যোগ্যতা অর্জন করে যাব। আমাদের দলের ফুটবলাররাও ইতিবাচক দৃষ্টিতে এই কঠিন পরিস্থিতিকে দেখার চেষ্টা করছে।’’ খাদের কিনারে দাঁড়িয়েও এতটা আত্মবিশ্বাসী কীভাবে হতে পারছেন? এমন প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে সাম্পাওলি-কে। তিনি বলেন, ‘‘যেরকম দায়বদ্ধতা ফুটবলারদের থেকে আশা করেছিলাম, সেটা ওরা দেখাচ্ছে। যেরকম খেলার মান ওদের থেকে প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটা ওরা দেখাতে পেরেছে। সেটাই আমাকে আত্মবিশ্বাসী আর ইতিবাচক করে তুলেছে।’’ যদিও অনেকের পাল্টা প্রশ্ন, তিন ম্যাচে মাত্র একটি গোল করা এই আর্জেন্তিনা দলকে দেখে কোচের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে কী করে? যদি মেসিরা রাশিয়ার রাস্তা থেকে হড়কে যান, তাহলে সেই ১৯৭০-এর পর এই প্রথম আর্জেন্তিনা বিশ্বকাপে খেলবে না।
মেসির খেলা নিয়েও তিনি সন্তুষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন সাম্পাওলি। বলেন, ‘‘লিও সারাক্ষণ প্রতিপক্ষের উপর চাপ রেখে গিয়েছে। এক সেকেন্ডের জন্যও ওকে দাঁড়াতে দেখিনি। অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। ওর থেকে আর কী চাওয়ার থাকতে পারে!’’ ১৯৭০-এ শেষ বার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করেনি আর্জেন্তিনা। আর ইকুয়েডরে গিয়ে ইকুয়েডরকে শেষ বার হারিয়েছে কবে? না, ১৯৬০ সালে!