লিওনেল মেসির আকাশে এখনও দুঃস্বপ্নের বজ্রপাত হয়েই চলেছে।
কোপা ফাইনালে হারের হতাশায় জাতীয় দলের জার্সি খুলে রাখার দেড় সপ্তাহের মধ্যে ফের ধাক্কা খেলেন এলএম টেন। এ বার অবশ্য মাঠে নয়, মাঠের বাইরে।
স্পেনে কর ফাঁকি কাণ্ডে বুধবার বার্সেলোনার মহাতারকার ২১ মাস জেলের শাস্তি হল। সঙ্গে কুড়ি লক্ষ ইউরো জরিমানা (প্রায় ১৫ কোটি টাকা)। পাশাপাশি মেসির বাবা জোর্জেরও ২১ মাসের জেলের শাস্তি দিয়েছে বার্সেলোনার আদালত ও পনেরো লক্ষ ইউরো জরিমানা (প্রায় ১১ কোটি)। তবে শাস্তির বিরুদ্ধে স্প্যানিশ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন মেসি।
অবশ্য এই শাস্তি বজায় থাকলেও মেসি বা তাঁর বাবাকে জেলে যেতে হবে না। স্প্যানিশ আইন অনুযায়ী দু’বছরের কম জেলের শাস্তি হলে হাজতবাস করতে হয় না। জেলের বাইরে থেকেই শাস্তি ভোগ করা যায় কিছু শর্তাবলি মেনে চললে। তাই মেসিকে হয়তো কিছু কড়া বিধি-নিষেধে থাকতে হবে একুশ মাস।
স্প্যানিশ সরকার মেসির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ আনার পর থেকেই বড়সড় শাস্তির আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কিন্তু তাতে যে একেবারে আর্জেন্তিনার রাজপুত্রকে ২১ মাস কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হবে ভাবা যায়নি। মনে করা হচ্ছিল বিশাল জরিমানা দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হবে। তাই বার্সেলোনার আদালতের রায়ে স্তম্ভিত ফুটবল বিশ্ব।
বার্সেলোনা তড়িঘড়ি অবশ্য জানিয়েছে তারা মেসির পাশেই আছে। ‘মেসি ও তাঁর বাবাকে যে কোনও রকম সাহায্য করতে আমরা তৈরি,’ বিবৃতিতে জানিয়েছে মেসির ক্লাব।
২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে মোট ৪১ লক্ষ ইউরো কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ছিল মেসি ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে। যে মামলার শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষের কোপায় আর্জেন্তিনার শিবির চলার মাঝেই স্প্যানিশ আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছিল মেসিকে। আদালতে মেসি বলছিলেন, ‘‘এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমার বাবা আর আইনজীবীদের উপর বিশ্বাস করেছিলাম। ওরাই এই দিকটা দেখত।’’ তাতেও বার্সার মহাতারকা অবশ্য ছাড় পেলেন না। স্পেনের আদালত রায়ে বলেছে, ‘মেসি দায় এড়াতে পারেন না।’
ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। যেখানে মেসি ভক্তদের অধিকাংশের মত, ‘শাস্তি হলেও মেসিকে যে জেলে যেতে হচ্ছে না এটাই স্বস্তি।’ আরও এক পক্ষের বক্তব্য, ‘যতই জেলে যেতে না হোক এই কলঙ্কের দাগ কী ভাবে মেটাবেন মেসি?’