যত আইপিএল এগোবে লেগ স্পিনাররা আরও ভয়ঙ্কর হবে

বোলারদের মধ্যে এক মাত্র স্পিনারদেরই হয়তো শারীরিক দিক থেকে অনেক সময় খাপছাড়া লাগে। সবাইকে নয় অবশ্যই। তবে আকারে যাই মনে হোক সেটা কিন্তু তাদের একেবারে হিসেবের বাইরে ফেলে দেয় না। প্রসন্ন, পওয়ার, কিছুটা ওয়ার্নও, যখন কেরিয়ার শুরু করেছিল, বেঢপ দেখাত। মিশ্র আর তাম্বের চেহারাও যে পাথর কুঁদে তৈরি করা, নিশ্চয়ই এমন ধারণার সঙ্গে এক মত হবেন না। ছোট হাত, বেঁটে বেঁটে আঙুল— দেখলে মনেই হবে না হইচই ফেলে দিতে পারে এরা।

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৭
Share:

বোলারদের মধ্যে এক মাত্র স্পিনারদেরই হয়তো শারীরিক দিক থেকে অনেক সময় খাপছাড়া লাগে। সবাইকে নয় অবশ্যই। তবে আকারে যাই মনে হোক সেটা কিন্তু তাদের একেবারে হিসেবের বাইরে ফেলে দেয় না। প্রসন্ন, পওয়ার, কিছুটা ওয়ার্নও, যখন কেরিয়ার শুরু করেছিল, বেঢপ দেখাত। মিশ্র আর তাম্বের চেহারাও যে পাথর কুঁদে তৈরি করা, নিশ্চয়ই এমন ধারণার সঙ্গে এক মত হবেন না। ছোট হাত, বেঁটে বেঁটে আঙুল— দেখলে মনেই হবে না হইচই ফেলে দিতে পারে এরা।

Advertisement

তবে আকার, আকৃতি বা অ্যাপিয়ারেন্সটাই তো সব নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্পিনারদের অনেক সময় ঠিকঠাক পড়া যায় না। সাত আর আটের দশকের শেষের দিকে যখন ফাস্ট বোলারদের দাপট চলছে, স্পিনাররা সেভাবে পাত্তাই পেত না। ওয়ান ডে ক্রিকেটেও পাটা পিচের জন্য স্পিনারদের দলে নেওয়াটা বিলাসিতার পর্যায়ে পড়ত। ভুল ধারণা আরও ছিল। ফিঙ্গার স্পিনারদের নিখুঁত বলে ধরা হত যদিও সবচেয়ে কৃপণ বোলিং করত সব সময় লেগ স্পিনাররাই— গ্রিমেট, গুপ্তে, বেনো, ওয়ার্ন আর কুম্বলে।

তবে চলতি আইপিএলে কিন্তু লেগ স্পিনাররা একটা থিম। আটটা দলের মধ্যে যে কোনও একটায় খুঁজে দেখুন, এক জন লেগ স্পিনার পাবেনই। যার বোলিং অ্যাকশনে প্রচুর আঙুল, কবজি আর বাহুর ব্যবহার রয়েছে। যেটা তাকে স্পিন আর বাউন্স দু’টোই করানোর সুযোগ এনে দেয়। এতেই বিপদে পড়ে যায় ব্যাটসম্যান। সঙ্গে ফ্লাইট আর ডিপের ব্যাপারটাও আছে। সব ব্যাটসম্যানই আই লেভেলের নীচে বল মারতেই বেশি পছন্দ করে। যে আরামটা এক জন লেগ স্পিনারের বিরুদ্ধে ব্যাট করার সময় পাওয়া যায় না। কোনও লেগস্পিনার তাই লং হপ ফেলেও অনেক সময় মার খাওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায়। যেটা অফস্পিনারের ক্ষেত্রে বাঁচা কঠিন।

Advertisement

তাই মিশ্র, চাওলা বা নতুন আসা এম অশ্বিন যে টুর্নামেন্টের প্রথম সপ্তাহেই ব্যাটসম্যানদের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। এদের সবাই যেমন উইকেট নিয়েছে, তেমনই তার সঙ্গে মানানসই ইকনমি রেটও রাখতে পেরেছে। গড়ে প্রতি ওভারে পাঁচ রান। আরও একটা ব্যাপার কিন্তু লক্ষ্য করার মতো। লেগ স্পিনারদের প্রায় সবাই ভারতীয়।

শুক্রবার রাতে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে মিশ্র আসে সাত নম্বর ওভারে। প্রথম বলেই শন মার্শ বিট হয়ে স্টাম্পড হয়ে গেল। এক ওভার পর মিলার আর ম্যাক্সওয়েল দু’জনকেই তুলে নিল ও। এরা তিন জনই কিন্তু আগ্রাসী শট খেলতে গিয়েছিল— তিন জনকেই ফাঁদে ফেলে ডাগ আউটে ফেরত পাঠানো হল। ওভারের মতোই উপভোগ্য ছিল ম্যাচটা।

যত টুর্নামেন্ট এগোবে এই ধীর গতির বোলারদের ধার তত বাড়বে। তীব্র গরম আর বহু ব্যবহারে ক্ষয়ে যাওয়া পিচ এদের প্রিয়। তার উপর এই সাহসী ক্রিকেটাররা স্পিন শিল্পের ভাল বিজ্ঞাপনও।

তবু ব্যাটসম্যানরা তাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসী হবে। তবুও বিশ্বাস করবে ভারী ব্যাট নিয়ে নামলে মিসহিটগুলো আর হবে না। তার উপর ক্লোজ ইন ফিল্ডার না থাকায় লাইসেন্স তো রয়েছেই। আর এ সবের মধ্যে সেই বেঢপ চেহারার লোকগুলো অপর প্রান্তে হাসতে হাসতে নিজেদের শিকারের সংখ্যা দ্বিগুন করে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement