কলকাতার চক্রব্যূহে মেন্ডি।
আটলেটিকো দে কলকাতা-১ (গার্সিয়া-পেনাল্টি)
চেন্নাইয়ান এফসি-১ (এলানো-পেনাল্টি)
আইএসএলের সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল ম্যাচ বলা হচ্ছিল। টিভিতে খেলা দেখতে বসে মনে হচ্ছিল, যুদ্ধটা সীমাবদ্ধ থাকবে লুই গার্সিয়া বনাম এলানোর টিমের ফুটবল স্কিলেই। কিন্তু দু’টো পেনাল্টি, দু’টো লালকার্ড অন্য দিকে নিয়ে গেল ম্যাচের অভিমুখ। ফলে যতটা তৃপ্তি পাব ভেবেছিলাম ততটা পেলাম না।
কলকাতার জেতা উচিত ছিল
বল পজেশন আর আক্রমণাত্মক খেলা, দু’টোতেই এগিয়ে ছিল চেন্নাইয়ান। তবু বলব ম্যাচটা কলকাতার জেতা উচিত ছিল। ট্যাকটিক্যালি গার্সিয়া-অর্ণবরা তুলনায় ভাল খেলেছে। তবে চেন্নাই দশ জন হয়ে যাওয়ার সুযোগটা কাজে লাগানো উচিত ছিল হাবাসের টিমের। উল্টে হোফ্রে লালকার্ড দেখল। সব ওলটপালট হয়ে গেল। ম্যাচে ২২ জনের ১২ জনই বিদেশি। ফেড কাপ বা আই লিগে বিদেশিরাই খেলার চেহারা বদলে দেয়। কিন্তু এ দিন সেটা দেখলাম না। কারণ, আইএসএলের বিদেশিদের বেশির ভাগের বয়স বেশি। চেন্নাইয়ের মাতেরাজ্জির বয়স প্রায় ৪১। সিলভেস্ত্রের বয়স ৩৭। কলকাতার গার্সিয়া ৩৬-এ পা দিয়েছে। স্বভাবতই ওদের গতি কমে গিয়েছে। হয়তো সে জন্যও প্রত্যাশা পূরণ হল না।
হাবাস বেঞ্চে থাকলে কলকাতাকে অন্য রকম দেখাত
নিজে কোচিং করাই বলে জানি, রিজার্ভ বেঞ্চে কোচের থাকা কতটা গুরত্বপূর্ণ। সেটা এ দিন প্রমাণিত। ৩২ মিনিটেই দশ জন হয়ে গিয়েছিল চেন্নাইয়ান। গার্সিয়ার পেনাল্টি গোলে এগিয়েও যায় কলকাতা। তার পরেও কেন আক্রমণে জোর না দিয়ে রক্ষণ সামলাতে বেশি ব্যস্ত থাকল, সেটাই প্রশ্ন! রিজার্ভ বেঞ্চে কোচ হাবাস থাকলে হয়তো ওই সময় স্ট্র্যাটেজি পাল্টাতেন।
চেন্নাইয়ানের পেনাল্টি বিতর্কিত
শিল্টনের লালকার্ড আর কলকাতার পেনাল্টি সঠিক। কিন্তু যে ফাউলে চেন্নাইয়ান পেনাল্টি থেকে ইনজুরি টাইমে গোল শোধ করে হার বাঁচাল, সেই পেনাল্টি রেফারি না দিলেও পারতেন। কিংশুকের ওই ফাউলে পেনাল্টি হয় না। মেন্ডোজাকে ইচ্ছাকৃত মারেনি। বরং অর্ণবের যে হ্যান্ডবলের আবেদন করেছিল চেন্নাইয়ান, সেটায় পেনাল্টি পেতে পারত।
এত মিস পাস কেন
প্রথম পনেরো মিনিটেই কলকাতার ন’টা মিস পাস। চেন্নাইয়ের সাতটা। এত মিস পাস হলে খেলার ছন্দই নষ্ট হয়ে যায়। দু’দলই অহেতুক লং বল-ও খেলেছে। প্রথম পনেরো মিনিটে আটলেটিকো ন’টা আর চেন্নাইয়ান পাঁচটা লং বল খেলল।
মেন্ডি-এলানো দারুণ, ভাল অর্ণব-বলজিত্।
চেন্নাইয়ানকে পরিচালনা করল সেই মিডিও এলানো। পাঁচ ম্যাচে ছয় গোল হয়ে গেল। ফ্রি কিক মাস্টার পেনাল্টিটাও দারুণ মেরেছে। গোলকিপার বেটেকে উল্টো দিকে ফেলে। মেন্ডিও নজর কাড়ল। আক্রমণে যেমন তরতর করে উপরে উঠছিল, তেমনই আটলেটিকোর কাউন্টার অ্যাটাকের সময় দ্রুত নেমে ঠিক নিজের ডিফেন্সিভ জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছিল। ইস্ট-মোহন ফুটবলাররাও কিন্তু সমানে পাল্লা দিল বিশ্বকাপার বা বিদেশিদের সঙ্গে। দু’প্রধানে খেলার চাপ নিতে ওরা অভ্যস্ত। কিংশুক-বলজিত্ বা পরে নেমে চেন্নাইয়ানের বলবন্ত চমকে দিল। আইএসএলের এটা একটা ভাল ব্যাপার।
আটলেটিকো দে কলকাতা: বেটে, বিশ্বজিত্, অর্ণব, হোসেমি, কিংশুক, নাতো, বোরহা, হোফ্রে, বলজিত্ (মাসি), গার্সিয়া (আর্নাল), রফি (সঞ্জু)।