জুটি: ম্যাচ চলাকালীন ধোনিকে পরামর্শও দিতেন বিরাট। ফাইল চিত্র
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির পরে কোনও মন্ত্রবলে রাতারাতি তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব পাননি। এই গুরুদায়িত্ব পাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ধোনিকে কাছ থেকে দেখা, শিক্ষাগ্রহণ এবং আস্থা অর্জনের মতো ব্যাপারও। সতীর্থ আর অশ্বিনের সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম চ্যাটে এ কথাই বললেন বর্তমান ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি।
একটি জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক পত্রিকার বিচারে সম্প্রতি বিশ্বের সর্বাধিক উপার্জনকারী ১০০ জন ক্রীড়াবিদের মধ্যে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে স্থান পেয়েছেন কোহালি। শনিবার সতীর্থ অশ্বিনের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে তার অধিনায়ক হিসেবে উত্তরণের কারণ হিসেবে বিরাট তুলে ধরেন টানা ছ-সাত বছর খুব কাছ থেকে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিহ ধোনিকে পর্যবেক্ষণ করার ঘটনাও। এ ছাড়াও, দায়িত্ব পেয়ে তা সফল ভাবে সামলানোর ব্যাপারটিও এ ক্ষেত্রে তাঁকে নেতৃত্ব পেতে সাহায্য করেছে বলে মত বিরাটের।
ভারত অধিনায়কের কথায়, ‘‘ধোনির খুব কাছে থাকতে পারাটাই অধিনায়ক হিসেবে উত্তরণের বড় কারণ। এর ফলে অনেক কিছু শিখেছি। যা চোখে পড়েছিল অনেকেরই। ব্যাপারটা এ রকম নয় যে ধোনি অধিনায়কত্ব থেকে সরে যাওয়ার পরে নির্বাচকেরা বলে দিলেন, এ বার তুমি অধিনায়ক।’’ যোগ করেন, ‘‘আগের অধিনায়ক অনেক দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে, পরবর্তী নেতা এই ছেলেটিই। আমার অধিনায়ক হওয়ার পিছনে তাঁরও অনেক ভূমিকা রয়েছে। আর এই বিশ্বাসটা তৈরি হয়েছিল টানা ছ-সাত বছরে। রাতারাতি একেবারেই নয়।’’
আরও পড়ুন: ‘ওই রকম একটা মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিলাম বহু দিন’
পাশাপাশি, প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে ধোনির মগজাস্ত্রের প্রয়োগ শেখার ব্যাপারটিকেও উল্লেখ করছেন বিরাট। বলেছেন, ‘‘উত্তরণের ব্যাপারটি ভাল ভাবে ঘটতে শুরু করে যখন প্রথম স্লিপে দাঁড়াতে শুরু করলাম। ফলে খেলার মাঝে অধিনায়কের সঙ্গে মত বিনিময়ের দরজাটাও খুলে গিয়েছিল। কারণ, তখন আগের অধিনায়কের কানের কাছেই থাকতাম আমি।’’ আরও বলেন, ‘‘অধিনায়কের পাশে দাঁড়িয়ে আমি বলেই যেতাম, এটা করতে পারতে, ওটা করতে পারতে। কোনও কঠিন পরিস্থিতিতে কী ভাবছি, এসব। কিছু মত বাতিল হত। কিন্তু অনেক বিষয়ই আলোচনা হত। ফলে আমার প্রতি ধোনির আস্থাটা তৈরি হয়েছিল যে, ওর পরে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব সামলাতে পারব।’’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নেপথ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৮৩ রানের ইনিংসকেই উল্লেখ করেছেন বিরাট। ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে সেটাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ রান। ২০১২ এশিয়া কাপের স্মৃতি উস্কে বিরাট বলেন, ‘‘পাকিস্তান খুব শক্তিশালী ছিল। ৩৩০ রান তাড়া করতে হত আমাদের। আফ্রিদি, সৈয়দ আজমাল, উমর গুলের মতো বোলারের বিরুদ্ধে। সেই ইনিংস প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে।’’
ভারত অধিনায়ক বিরাটকে নিয়ে এ দিন তাঁর মুগ্ধতা ব্যক্ত করেছেন আম্পায়ার ইয়ান গোল্ডও। তাঁর কথায়, ‘‘বিরাট একজন মজার মানুষ। যে ক্রিকেট খেলাটা আদ্যোপান্ত বোঝে। জানে েখলাটার ইতিহাসও। ওর খেলা দেখতে দারুণ লাগে। অনেকটা সচিন তেন্ডুলকরের মতো গোটা ভারতীয় দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়।’’
গোল্ড যোগ করেন, ‘‘ক্রিকেটের ইতিহাস জানার পাশাপাশি, সবার প্রতি ও শ্রদ্ধাশীলও।’’
আরও পড়ুন: এর পর কি আমি, প্রশ্ন কোকোর