গ্রিনপার্কে নাইটদের প্রস্তুতি। বুধবার।-নিজস্ব চিত্র
‘ইট ইজন’ট ওভার টিল ইটস ওভার’।
যতক্ষণ না সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ লড়াই থামবে না।
নাইটদের শিবিরে এখন এটাই মূলমন্ত্র।
কিন্তু লড়াইয়ের সেরা আগ্নেয়াস্ত্রই যখন অকেজো হয়ে পড়ে, তখন সাফল্য নিয়ে অনিশ্চয়তা তো থাকবেই।
এমন সময়ে কেকেআর শিবিরে চোটের খাঁড়া নেমে এল, যখন তাদের জয় ছাড়া এগোনোর কোনও রাস্তা নেই। দুটোর মধ্যে একটা ম্যাচে হারা মানে প্লে অফের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে অন্য দলের ওঠা-পড়ার দিকে তাকিয়ে থাকা। দুটোর কোনওটাই না জিততে পারলে তো দরজাটাই বন্ধ হয়ে যাবে। বারো নম্বর রাউন্ড পর্যন্ত দু’নম্বরে থাকা দল ১৪ নম্বরের পর ছিটকে যাওয়ার চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে।
নাইটদের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডলে যাঁকে নিয়ে লেটেস্ট পোস্টটা হল ‘ব্যাটসমেন ফিয়ার, হোয়েন রাসেল ইজ নিয়ার’, সেই আন্দ্রে রাসেল বৃহস্পতিবার তো বটেই, রবিবারও খেলতে পারবেন কি না, তাও কেকেআর শিবিরে কেউ জোর দিয়ে বলতে পারছেন না। তাঁর চোটটা ঠিক কী, তা জানিয়ে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কোনও অফিসিয়াল রিলিজ নেই কেকেআরের তরফ থেকে। তেমন গুরুতর চোট নয় বলা হচ্ছে অবশ্য। কিন্তু সত্যিই গুরুতর না হলে এত রাখঢাক কেন, সেটাও প্রশ্ন।
কানপুরে বৃহস্পতিবার যে রাসেল নেই তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। কারণ, তাঁকে কানপুরে নিয়েই যাওয়া হয়নি। যাঁর ঝুলিতে ১৫ উইকেট আর ১৮৮ রান, তাঁর বিকল্প বাছতে এখন হিমশিম খাচ্ছেন গৌতম গম্ভীর, জাক কালিসরা। বুধবার অপর ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডারকে প্রাক-ম্যাচ সাংবাদিক বৈঠকে পাঠানো এবং নেটে তাঁর অনেকক্ষণ বোলিং ও ব্যাটিং করার খবর পেয়ে মনে হচ্ছিল বটে যে তিনিই হয়তো গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন। কিন্তু রাতে নাইটদের শিবির থেকে খবর পাওয়া গেল, গ্রিন পার্কের পাটা ও রানে ভরা উইকেট দেখে কলিন মানরোকে খেলানোর ভাবনাও রয়েছে গম্ভীরদের। কিউরেটর শিব কুমারের বক্তব্য, ‘‘ব্যাটসম্যানরাই এই উইকেটে সুবিধা পাবে। আগে ব্যাট করবে যারা, তারা ঠিকঠাক ব্যাটিং করলে ১৮০ তুলতে পারে।’’
বাঁ-হাতি এই কিউয়ি ব্যাটসম্যান ও ডান-হাতি মিডিয়াম পেসার নাইটদের হয়ে দু’টো ম্যাচ খেলেছেন ইডেনে। দিল্লির বিরুদ্ধে ব্যাট করার সুযোগ পাননি। বল করে উইকেটও পাননি। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে মাত্র চার করেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে অবশ্য ৩২ বলে ৪৬ করেছিলেন। হোল্ডারের সেই পারফরম্যান্সও নেই। দুই বিদেশির মধ্যে শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নিয়ে মাঠে নামানো হবে, সেটাই বড় প্রশ্ন।
সুরেশ রায়না তাঁর সদ্যোজাত সন্তান গ্রেসিয়াকে দেখতে নেদারল্যান্ডস গিয়েছিলেন বলে গত ম্যাচে খেলতে পারেননি। আইপিএলে এই প্রথম কোনও ম্যাচে তিনি খেলতে পারলেন না। ক্যাপ্টেন এসে যাওয়ায় লায়ন্স শিবির ফের চার্জড। লিগ তালিকায় চার নম্বর দলের অধিনায়ক এ দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বারো রাউন্ডের পরেও যে কেউ প্লে-অফ নিশ্চিত করতে পারেনি, এটাই এ বার অবাক করার মতো ব্যাপার। আমাদের চাপটাও তাই কম। তবে দু’দলেরই যেহেতু একই অবস্থা, তাই ম্যাচটা হাড্ডাহাড্ডি হবে মনে হয়।’’
সুরেশ রায়নার যেমন এটা ঘরের মাঠ, তেমনই পীযূষ চাওলারও। দু’জনের মধ্যে লড়াইটাও
আইপিএলে সমান সমান। পরিসংখ্যান বলছে, চাওলার বিরুদ্ধে ১৪২ রান আছে রায়নার। আবার রায়নাকে চার বার আউটও করেছেন চাওলা।
বৃহস্পতিবার অবশ্য গম্ভীরদের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে কানপুরের কাঠফাটানো গরমও। ম্যাচ শুরুর সময়ই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়সের পূর্বাভাস রয়েছে। বুধবার তাঁরা প্র্যাকটিস করতে নামেন ৪২ ডিগ্রির গরমের মধ্যে। তার চেয়েও চিন্তার বিষয় মাত্র ১৮ থেকে ২০ শতাংশ আর্দ্রতা।
গম্ভীরদের শেষ আইপিএল রাস্তাটুকুতে ফুলের চেয়ে কাঁটাই যেন বেশি।
আজ আইপিএলে
গুজরাত লায়ন্স বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স কানপুর, রাত ৮-০০