লিগের ফার্স্ট বয়ের বিরুদ্ধে আজ বাগানের অস্ত্র সেটপিস

মোহনবাগান তাঁবুতে চোখ ঘোরালে, তাঁকে হয়তো সশরীরে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু তিনি না থেকেও যেন ভীষণ ভাবে আছেন! সবুজ-মেরুনের আশা আর আশঙ্কা— সবেতেই। তিনি করিম বেঞ্চারিফা। সদ্য পুণে এফসি-র দায়িত্ব নিলেও, মোহনবাগান তাঁর হাতের তালুর মতোই চেনা। আর হয়তো সে জন্যই শুক্রবার সাতসকালে বাগান তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, সর্বত্র তাঁরই চর্চা। এমনকী সবুজ-মেরুন কোচ সঞ্জয় সেন ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন করলেও বেশ কিছু কর্তার তখন আশঙ্কা—‘করিমচাচা’র গুপ্তচর নেই তো কোথাও মাঠের আশেপাশে!

Advertisement

প্রীতম সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৯
Share:

নতুন ব্রাজিলীয় ফিজিওর নতুন ঘরানার ট্রেনিংয়ে বাগানের দুই দেশজ ফুটবলার। ছবি: উৎপল সরকার

সেই ঐতিহাসিক লন!

Advertisement

গ্যালারি।

ড্রেসিংরুম।

Advertisement

প্র্যাকটিস মাঠ।

এমনকী ক্যান্টিনও!

মোহনবাগান তাঁবুতে চোখ ঘোরালে, তাঁকে হয়তো সশরীরে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু তিনি না থেকেও যেন ভীষণ ভাবে আছেন! সবুজ-মেরুনের আশা আর আশঙ্কা— সবেতেই।

তিনি করিম বেঞ্চারিফা। সদ্য পুণে এফসি-র দায়িত্ব নিলেও, মোহনবাগান তাঁর হাতের তালুর মতোই চেনা। আর হয়তো সে জন্যই শুক্রবার সাতসকালে বাগান তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, সর্বত্র তাঁরই চর্চা। এমনকী সবুজ-মেরুন কোচ সঞ্জয় সেন ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন করলেও বেশ কিছু কর্তার তখন আশঙ্কা—‘করিমচাচা’র গুপ্তচর নেই তো কোথাও মাঠের আশেপাশে!

করিমকে বাড়তি ‘মার্কিং’-এ রাখার রহস্য শুধু এটা নয় যে, তিনি ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে বিদেশি কোচদের মধ্যে অন্যতম, যিনি বাগানকে খুব কাছ থেকে চেনেন। বরং তাঁর দল পুণে এফসি-র সাম্প্রতিক আই লিগ ফর্ম আরও বেশি চিন্তা বাড়িয়েছে সনি-কাতসুমিদের। পরিসংখ্যান বলছে, আপাতত পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে পুণে (৪ ম্যাচে ১০)। লিগের প্রথম দশ সর্বোচ্চ গোলদাতার মধ্যে তাদেরই চার জন-- হাওকিপ, ডার্কো, সুয়োকা, লুসিয়ানো। তাই সঞ্জয়ও বলছিলেন, “পুণে এ বারের আই লিগের সবচেয়ে ব্যাল্যান্সড টিম। ফেড কাপের পরে ওরা যে দু’টো বিদেশি টিমে নিয়েছে, তাতে ওরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আরাতা আর হাওকিপকে আমাদের একটু বেশি নজরে রাখতে হবে। তার উপর আরাতা থাকায় ওরা তো কাগজে-কলমে পাঁচ জন বিদেশি খেলাতে পারছে!”

অনেক শক্তির মধ্যে কি কোনও দুবর্লতা নেই করিমের দলে? আছে। আর সেটাই পুণের আগের মুম্বই এফসি ম্যাচের ভিডিও দেখে খুঁজে বার করেছেন সঞ্জয়। এবং তার সম্ভাব্য প্রতিষেধক বার করার চেষ্টাও দেখা গেল বাগান প্র্যাকটিসে। সঞ্জয়ের জোড়া নির্যাস— পুণে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গোল (১২) করলেও, ছ’টা গোলও খেয়েছে। মুম্বই ম্যাচে করিমের দলের বিরুদ্ধে যে তিনটে গোল হয়েছে, তার দু’টোই কর্নার থেকে। শনিবার যুবভারতীতে এই দুটো দুর্বল জায়গায় সজোরে আঘাত করতে চাইছে বাগান।

কী ভাবে? পুণে গোলের জন্য মরিয়া অ্যাটাকিং ফুটবল খেললে, কাউন্টার অ্যাটাকে উঠবেন নর্ডিরা। করিমের ডিফেন্সে কাঁপুনি ধরাতে সাবিথ-জেজে জুটিকে কাজে লাগাতে চাইছেন বাগান কোচ। পিছন থেকে দুই উইঙ্গার নর্ডি-কাতসুমি। অর্থাৎ ৪-৪-২, প্রতি-আক্রমণের সময় হয়ে যাবে ৪-২-৪। তবে বিপক্ষের ছোট বক্সে পুণে যে-হেতু সেটপিসের উপর বেশি নিভর্রশীল, তাই নিজের ডিফেন্সকেও সঞ্জয় বাড়তি গুরুত্ব দিলেন এ দিনের প্র্যাকটিসে। আলাদা করে সেটপিস অনুশীলন হল, শুধু ডিফেন্ডারদের (শৌভিক-প্রীতম-বেলো-কিংশুক) নিয়ে। সঞ্জয়ের কথায়, “আমাদের শুরুর পনেরো-কুড়ি মিনিট দেখে খেলতে হবে। তার পরে অ্যাটাকে যাব। আমার লজিক, অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স।” তবে শনিবারের ম্যাচেও বাগান কোচের অন্যতম আক্রমণকারী বোয়া অনিশ্চিত।

বাগান কোচের প্রস্তুতিতে কোনও কমতি নেই। কিন্তু বিপক্ষ টিমের কোচও যে হাত গুটিয়ে বসে নেই! করিম আবার মাঠের ভিতরে তো বটেই, মাঠের বাইরের মনস্তাত্ত্বিক চাপটাও সমান ভাবে বজায় রাখতে চাইছেন। তখনও কারও জানা ছিল না, বাগানের পরের ম্যাচ, যেটা ডার্বি, তা নির্দিষ্ট দিনে হচ্ছে না। ফলে সেই মহাম্যাচের তাস ফেলে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডকে আপাত শনিবারের ম্যাচে মনস্তাত্ত্বিক চাপে রাখতে চাইছিলেন করিম।

এ দিন যুবভারতীতে পুণের প্র্যাকটিসের পরে করিম বললেন, “দু’হাজার আট থেকে দশ মোহনবাগানে আমার সেরা সময়। তিনটে ট্রফি, দু’টোয় রানার্স। তাই কলকাতা ডার্বির গুরুত্ব কী অপরিসীম, সেটা আমার থেকে বেশি হয়তো কেউ জানে না। কালকের ম্যাচ ডার্বির আগে ওদের শেষ ম্যাচ। মোহনবাগান অলআউট ঝাঁপাবে। ড্রেস রিহার্সাল সেরে নিতে চাইবে। কিন্তু আমিও তৈরি।”

শনিবারে আই লিগ

মোহনবাগান : পুণে এফসি (যুবভারতী, ৪-৩০)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement