দুরন্ত: পর্তুগালের বিরুদ্ধে জোড়া গোলে প্রত্যাবর্তন বেঞ্জেমার। পিটিআই।
তাঁর দুই গোলের সুবাদে পর্তুগালের সঙ্গে ম্যাচ ২-২ ড্র করে ইউরোর শেষ ষোলোয় উঠে গিয়েছে ফ্রান্স। ছ’বছর পরে জাতীয় দলে ফিরে এসেই নায়ক করিম বেঞ্জেমা। তাঁর এই প্রত্যাবর্তনের নেপথ্যে অবশ্যই দিদিয়ে দেশঁর হাত রয়েছে। কিন্তু ফ্রান্সে ফোন করে জানা গেল, সে দেশের মানুষ বেঞ্জেমার প্রত্যাবর্তনের পিছনে একজনকেই কৃতিত্ব দিতে চান। তাঁর নাম
জ়িনেদিন জ়িদান।
রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে বেঞ্জেমাকে আরও ধারালো করে দেওয়াই শুধু নয়, ইউরোয় এই স্ট্রাইকারের সুযোগ পাওয়ার নেপথ্যেও জ়িদানের হাত আছে বলে জানা যাচ্ছে। ফরাসি ফুটবলের সঙ্গে জড়িত এক উচ্চপদস্থ কর্তা ফোনে বলছিলেন, ‘‘সরকারি ভাবে জ়িদান বা দেশঁ, কেউই স্বীকার করেনি ব্যাপারটা। এমনকি, দু’এক জায়গায় এই প্রশ্ন উঠলে অস্বীকারও করেছিল। কিন্তু ঘটনা হল, আমরা যতদূর জানি, বেঞ্জেমার ফিরে আসার নেপথ্যে জ়িদানেরও হাত আছে। সরাসরি না হলেও ওর বার্তাটা পৌঁছেছিল দেশঁর কাছে। তার পরেই বরফ গলে।’’
২০১৫ সাল নাগাদ বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার পরে দল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল বেঞ্জেমাকে। জানা যাচ্ছে, এত দিন দলের বাইরে থাকার জন্য দেশঁকেই দায়ী করে এসেছেন এই স্ট্রাইকার। ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ‘দেশঁ বর্ণবিদ্বেষী। আমার চামড়ার রংটা ওর পছন্দ নয়।’ উল্টো দিকে ফরাসি কোচও গোঁ ধরে ছিলেন, বেঞ্জেমাকে ফেরাবেন না।
কিন্তু রিয়ালের হয়ে গত মরসুমে বেঞ্জেমার দুরন্ত ফর্ম ছবিটা বদলে দিতে থাকে। গত মরসুমে লা লিগায় ২৩টি গোল করেন তিনি। ন’টি ক্ষেত্রে গোল করতে সাহায্য করেছিলেন। ফরাসি জনতার আবেগও তখন বেঞ্জেমামুখী হতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে দেশঁ ক্রমে বুঝতে পারছিলেন, ইউরোয় তাঁকে জাতীয় দলের বাইরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
ফরাসি ফুটবলের সঙ্গে জড়িত ওই কর্তাটির মন্তব্য, ‘‘যে রকম ফর্মে বেঞ্জেমা ছিল, তাতে ওকে উপেক্ষা করলে সমস্যায় পড়ত দেশঁ।’’ এমনিতে দেঁশর সঙ্গে জ়িদানের সম্পর্ক যে দারুণ ভাল, সে রকম কিছু নয়। কিন্তু বেঞ্জেমার দলে ফেরার পথে সেটা আর বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
জানা যাচ্ছে, বেঞ্জেমাকে দলে নেওয়ার আগে তাঁকে নিয়ে আলাদা করে বৈঠকও করেন দেশঁ। কর্তাটি বলছিলেন, ‘‘দেশঁ বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিল, দলে নিলেও কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না, কোচের কথাই হবে শেষ কথা। দু’জনের মধ্যে ঘণ্টা খানেকের বেশি কথাবার্তা হয়েছিল সে দিন। তার পরেই দল ঘোষণা হয়।’’
বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্সকে ইউরোর শেষ ষোলোয় তোলার পরে ফরাসি ফুটবলপ্রেমীদের কাছে অবশ্যই নায়ক হয়ে উঠেছেন বেঞ্জেমা। কিন্তু জ়িদানকেও ভুলছেন না তাঁরা। ‘‘ফ্রান্সে জ়িদান প্রায় ঈশ্বরের সমান। দেশঁর জনপ্রিয়তা ওর কাছে কিছুই নয়। সবাই বুঝতে পারছে, বেঞ্জেমাকে ক্ষুরধার করে তুলতে জ়িদানের অবদানটা কী,’’ বলে দিলেন ফরাসি ফুটবল
সংস্থার কর্তাটি।