পাঠচক্র পাঠ ভুলল সবুজ-মেরুনের কামোর হ্যাটট্রিকে

ম্যাচ শেষে মোহনবাগানের সেই চুয়াল্লিশ নম্বর জার্সিধারী ফুটবলার কামো স্টিফেন বায়োর কাছে প্রশ্ন উড়ে আসছিল তাঁর গোল-উৎসবের এই অভিনব ভঙ্গিমা নিয়েই।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪২
Share:

উৎসব: হ্যাটট্রিকের পরে কামোর সেই নাচ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

মোহনবাগান ৫ : পাঠচক্র ২

Advertisement

হ্যাটট্রিক করেই ছুট লাগিয়েছিলেন কানায় কানায় পূর্ণ সবুজ-মেরুন গ্যালারির দিকে। তার পর সে দিকে তাকিয়ে শুরু করে দিলেন তার গোল উদযাপনের বিশেষ নাচ।

ম্যাচ শেষে মোহনবাগানের সেই চুয়াল্লিশ নম্বর জার্সিধারী ফুটবলার কামো স্টিফেন বায়োর কাছে প্রশ্ন উড়ে আসছিল তাঁর গোল-উৎসবের এই অভিনব ভঙ্গিমা নিয়েই। সবুজ-মেরুন শিবিরের এই আইভরিয়ান ফুটবলার তখন টেনে আনলেন তাঁর প্রতিবেশী দেশের তারকা ফুটবলার ঘানার আসামোয়া গিয়ানকে। বলে দিলেন, ‘‘ওই নাচটা ঘানার অধিনায়ক আসামোয়া গিয়ানকে দেখে শেখা। গত আই লিগেও গোল করে এ ভাবেই আনন্দ করতাম। সমর্থকরা তো আনন্দ পেতেই মাঠে আসে। এটা ওদের জন্যই।’’

Advertisement

দশর্কদের জন্য কামো ধার করতে পারেন আসামোয়ার নাচ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার অর্থ ড্রেসিংরুমে ফিরে দিয়ে দেন কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীকে।

কিন্তু তাঁর নিজের জন্য?

সেক্ষেত্রে দেখার কামোর জেদটাই। চব্বিশ ঘণ্টা আগেও তাঁকে নিয়ে গুঞ্জন চলছিল ময়দানে। কলকাতা লিগের পর আই লিগে তাঁকে ছেড়ে দিতে পারে মোহনবাগান। সে কথা কেউ কানে তুলে দিয়েছিলেন আইজলকে আই লিগ দিয়ে আসা এই ফুটবলারের। এ দিন হ্যাটট্রিক-সহ চার গোল করে মোহনবাগানের পাঠচক্র বধ তো তাঁরই সৌজন্যে। তাও আবার শুরুতেই এক গোলে পিছিয়ে গিয়ে। চার গোলের সুবাদে কামো চলে গেলেন কলকাতা লিগে গোলদাতাদের শীর্ষ স্থানে। বিদেশি হিসেবে মোহনবাগান জার্সিতে এক ম্যাচে চার গোল করে ছুঁয়ে ফেললেন এডে চিডির রেকর্ডও।

মাঠ থেকে তাঁবুতে ফেরার সময় এ দিনের ম্যাচ সেরা কামো বলে গেলেন, ‘‘সাত বছর পর কলকাতা লিগটা মোহনবাগানকে দিতে চাই। আই লিগ নিয়ে এখনই ভাবছি না। আরও গোল করতে হবে আমাকে।’’

আরও পড়ুন:৪৪ পাসে বিস্ময় গোল রিয়ালের

কামোর ঝলমলে পারফরম্যান্সের দিনে মোহনবাগানের অপর গোলদাতা আনসুমানা ক্রোমা। মূলতঃ কা-ক্রো জুটির দাপটেই এ দিন মোহনবাগান মাঠে উড়ে গেল এরিক ব্রাউন-দের পাঠচক্র। এক সপ্তাহ আগেই যারা মহমেডানকে হারিয়ে সাড়া ফেলেছিল। কিন্তু এ দিন সেই ছন্দ শ্যামনগরের দলটি দেখাতে পারল কোথায়? কামোর দাপটেই এ দিন পাঠ ভুলল তারা।

আত্মবিশ্বাসী মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী রবিবারই বলে দিয়েছিলেন, গোলের জন্য তাঁর চিন্তা নেই। এ দিন শুরু থেকে পাঠচক্র কোচ জোয়েল সানডেকে না নামানোয় মোহনবাগানের ম্যাচে ফেরার কাজটা আরও সহজ হয়ে গিয়েছিল।

দ্বিতীয়ার্ধে সানডে নামলেও ততক্ষণে ম্যাচ নিজেদের পকেটে পুরে নিয়েছে মোহনবাগান। এ দিন জিতলেও মোহনবাগান রক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। পাঠচক্রের প্রথম গোলের সময় বক্সে উড়ে আসা বল কিংশুক ও কিঙ্গসলে ঠিক মতো নজরে রাখেননি। শেষ বেলায় কিঙ্গসলে-কে কাঁধে নিয়েই হেডে গোল করে গেলেন সানডে। এ ছাড়াও সানডে পেনাল্টি নষ্ট না করলে ব্যবধান কমতে পারত।

মোহনবাগান কোচ তাই বলছেন, ‘‘পাঁচ গোলে আত্মবিশ্বাস বাড়লেও বিপক্ষের দু’গোল তাতে কাঁটা ফোটাচ্ছে।’’

মোহনবাগান শিল্টন পাল (শিবিনরাজ কুন্নাইল), অরিজিৎ বাগুই, কিংশুক দেবনাথ (বিক্রমজিৎ সিংহ), কিংঙ্গসলে বুমনেমে, রিকি লাল্লনমওমা, আজহারউদ্দিন মল্লিক (পিন্টু মাহাতো), শিল্টন ডি’সিলভা, রেনিয়ার ফার্নান্দেজ, চেস্টারপল লিংডো, কামো স্টিফেন বায়ি, আনসুমানা ক্রোমা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement