টিম মালিক অভিষেক বচ্চন তাঁকে ভালবাসেন নিজের ছোট ভাইয়ের মতো। আন্ধেরি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে পুয়ের্তোরিকোর বিরুদ্ধে ভারতের ম্যাচ দেখতে গিয়ে তাঁর থেকেই টিম জার্সি চেয়ে গায়ে চড়ান জুনিয়র বচ্চন।
এ বার অভিষেকের টিমের কোচ মার্কো মাতেরাজ্জিও আইএসএল-থ্রি শুরুর আগে পুরোদস্তুর মজে গিয়েছেন তাঁর উপর! আর তা এতটাই যে তিনি এখন মার্কো মাতেরাজ্জির চোখে ‘ভারতের আইকন’।
কে তিনি? তিনি জেজে লালপেখলুয়া— মিজোরামের ছেলে। গত দু’মরসুম ধরে চেন্নাইয়ান, ভারত ও মোহনবাগান জার্সিতে গোলের পর গোল করে সতীর্থ তো বটেই গোটা দেশের গোলমেশিন হয়ে গিয়েছেন। এ বারের আইএসএলেও গোলের জন্য চেন্নাই কোচ তাকিয়ে তাঁর দিকেই।
শনিবার দুপুরে রাজারহাটের অভিজাত হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে মাতেরাজ্জি বলেই দিলেন, ‘‘জেজে শুধু একজন ভাল স্ট্রাইকারই নয়। ভারতের সেরা ফুটবলার। আমাদের টিমে খেলে বলে এ কথা বলছি না। ভারতীয় ফুটবলে ও এখন আইকন।’’
যা শুনে জেজে লালপেখলুয়ার আবার মুখ লাল হয়ে যায় লজ্জায়। হাসতে হাসতে ক্যাটরিনা কাইফের ভক্ত বলে বসেন, ‘‘কোচ ভালবাসেন বলেই হয়তো আইকন বলে ফেলেছেন।’’ পরক্ষণেই কপট গম্ভীর হয়ে বলে বসেন, ‘‘এ বার চাপটা তো আরও বাড়ল। এ বার মাঠে নেমে আরও পরিশ্রম করতে হবে এই ‘আইকন’ সার্টিফিকেটটা ধরে রাখার জন্য। না হলে তো আপনারাই পিছনে পড়ে যাবেন।’’
গত দু’মরসুম ধরে চেন্নাইয়ানের ‘পাওয়ার হাউজ’ ছিলেন কলম্বিয়ান স্টিভন মেন্দোজা। সেই মেন্দোজা এ বার নেই আইএসএলে। মার্কোও তাই মুক্ত মেন্দোজা-মোহ থেকে। সাংবাদিক সম্মেলনে মেন্দোজার কথা উঠতেই মাতেরাজ্জি তাঁর চেনা মেজাজে প্রথমে বললেন, ‘‘ও তো আমাদের শয্যাসঙ্গী ছিল না! কাজেই ওকে নিয়ে এত ভাবার কী আছে?’’
আর জেজে? পাহাড়ি ছেলের নাম শুনেই মুখ আলো করা হাসি জিদানকে টক্কর নেওয়া ইতালিয়ানের মুখে। বললেন, ‘‘দারুণ ফুটবলার। জেজে আমার টিমের ভরসা। গত দু’বছরে ওর পারফরম্যান্স গ্রাফ যে ভাবে উঠছে সেটা দেখেছেন!’’
আইএসএলে চেন্নাইয়ানের নীল জার্সি গায়ে গত দু’বছরে ১০ গোল রয়েছে মিজোরামের এই ফুটবলারের। এর মধ্যে প্রথম বছর চার গোল। দ্বিতীয় বছর ছ’গোল। যার মধ্যে রয়েছে গত বছর সেমিফাইনালের প্রথম লেগে কলকাতার বিরুদ্ধে গোলও। দেশের জার্সি গায়েও শেষ সাত ম্যাচে সাতটা গোল রয়েছে তাঁর। আই লিগেও মোহনবাগানের হয়ে গত মরসুমে ফেড কাপে ৮ গোল, আই লিগে চার গোল করেছেন জেজে।
ট্রেডমার্ক টার্নিংয়ে ঘুরেই এক শটে গোল করতে সিদ্ধহস্ত। ছোট চেহারার জন্য সেন্টার অব গ্র্যাভিটি নীচের দিকে। তাই ভারসাম্য সহজে হারান না। ফিনিশিংটা গত দু’বছরে আশ্চর্যজনক ভাবে উন্নত করেছেন। এতটাই যে বিপক্ষের দু’তিন জনের মধ্য দিয়ে বলের কাছে পৌঁছে গোলটা ঠিক করে আসছেন।
তবে এ দিন বিকেল থেকে রীতিমতো ম্যাচ মোডে ঢুকে পড়েছেন চেলসির ভক্ত এই ভারতীয় স্ট্রাইকার। বলছিলেন, ‘‘শুক্রবার কলকাতা আসার পর থেকেই সবাই গত বারের এটিকে ম্যাচের কথা বলছে। আরে ওই ম্যাচ তো অতীত। রবিবার নতুন ম্যাচ। সেই ম্যাচে গোল করে টিমকে জেতাতে চাই। কারণ লম্বা টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ জিতলে কনফিডেন্স বাড়বে। আর সেটা যদি কলকাতা ম্যাচে হয়, তা হলে তো কথাই নেই।’’
পুণের মার্কি সিসোকো
মার্কি ফুটবলার গুডজনসন চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছিল আগেই। সোমবারই মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র ডার্বি দিয়ে এ বারের আইএসএল অভিযান শুরু করতে চলেছে আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের এফসি পুণে সিটি। আর সেই ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে নতুন মার্কির নামও জানিয়ে দিল পুণে। হাবাসের দলের নতুন মার্কি মালির মিডফিল্ডার। মহম্মদ সিসোকো। দেশের হয়ে ৩৪টি ম্যাচে নেমেছেন তিনি। এ ছাড়াও ইউরোপে লিভারপুল, জুভেন্তাস ও প্যারিস সাঁ জাঁ-র হয়ে শতাধিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি।