নীতীশ রানার অধিনায়কত্ব নিয়ে উঠছে অনেক প্রশ্ন। — ফাইল চিত্র
আর কবে হুঁশ ফিরবে নীতীশ রানার?
আইপিএলে ৯টা ম্যাচ খেলে ফেলল কলকাতা। তার মধ্যে হারতেই হয়েছে ছ’টি ম্যাচ। জয় এসেছে মাত্র তিনটিতে। শনিবার গুজরাত টাইটান্সের কাছে ঘরের মাঠে হেরে গিয়েছে কেকেআর। কম রানের পুঁজি নিয়েও জয়ের স্বপ্ন একটা সময় পর্যন্ত ছিল। কিন্তু নীতীশ রানার খামখেয়ালি সিদ্ধান্তে ডুবল কেকেআর।
শ্রেয়স আয়ারের জায়গায় রানাকে মরসুমের শুরুতে যখন অধিনায়ক করা হয়েছিল তখন অনেকেই সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। দেখা যাচ্ছে, সেই সমালোচনা আদৌ যুক্তিহীন ছিল না। ঘরোয়া ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিলেও আইপিএল যে সম্পূর্ণ অন্য জগৎ সেটা এ বার রানার বোঝার সময় এসেছে। প্রতি ম্যাচে হারলেই তাঁর মুখে একটা বাধাধরা বুলি রয়েছে, ‘‘আমরা উইকেট বুঝতে পারিনি।’’ বিপক্ষের মাঠে না হয় মানা গেল, ঘরের মাঠেও যদি অধিনায়ক উইকেট বুঝতে ভুল করেন, তা হলে আদৌ তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে কিনা, সেটা বোঝার সময় এসেছে এ বার।
শনিবারের ম্যাচেই রানার ভুলগুলোর দিকে নজর দেওয়া যাক। ম্যাচের আগে টসের সময় রানা জানালেন, প্রথম একাদশে নেওয়া হয়েছে শার্দূল ঠাকুরকে। অনেকেই খুশি হলেন। ভাবলেন ব্যাটে-বলে শার্দূলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স হয়তো দেখা যাবে। চমক তখনও বাকি ছিল। আচমকাই শার্দূলকে পাঠিয়ে দেওয়া হল তিনে। তিনি কি আদৌ তিন নম্বরে ব্যাট করার যোগ্য? শার্দূল যে রকম ব্যাটার তাতে পরের দিকে নেমে চালিয়ে খেলে রান করতে পারেন। কিন্তু তিন নম্বরে নামার চাপ সামলাতে পারবেন কি না, সেটা তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কি?
উত্তর অজানাই থাকবে। ঠিক যেমন জানা যাবে না কেন শার্দূলের মতো সফল বোলারকে দিয়ে এ দিন একটা ওভারও বল করানো হল না। স্ট্রাইক বোলার হিসাবে তিনি খ্যাত। অর্থাৎ, শুরুর দিকে উইকেট নিতে পারেন। সেখানে বল করছেন হর্ষিত রানার মতো বোলার! প্রথম দু’ওভারে ২২ রান দিলেন। খুবই স্বাভাবিক। পরে একটি উইকেট নিলেও তত ক্ষণে ম্যাচ কলকাতার হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে।
বল করানো হল না ডেভিড উইজ়াকে দিয়েও। ব্যাট করে ৬ বলে ৮ রান করলেন। অথচ তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে অলরাউন্ডার হিসাবে। ইডেনের পিচে তাঁর মিডিয়াম পেস বোলিং অনায়াসে কাজে লাগতে পারত। তা হলে বল করতে দেওয়া হল না কেন?
গুজরাতের কাছে হারের পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, অধিনায়ক রানা অথবা কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত আদৌ কি জানেন যে কোন ক্রিকেটার কী করতে পারেন? সতীর্থদের দক্ষতার উপর রানার পূর্ণ আস্থা রয়েছে তো? না হলে কেন প্রতি ম্যাচে বার বার কলকাতাকে দল বদলাতে হবে? কেন হঠাৎ করে নামিয়ে দিতে হবে এক অখ্যাত বোলারকে? কেনই বা জেতার জন্য প্রতি ম্যাচে ভরসা করতে হবে ১৯ বছরের এক ক্রিকেটারের উপর?
উত্তর এখনও জানা নেই। খুঁজতে খুঁজতে কেকেআরের আইপিএলই প্রায় শেষ।