আগের দিন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কিন্তু জোর ধাক্কা দিয়ে গেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর-কে। এতটাই যে, একটা হ্যাটট্রিকেও ম্যাচটা জিততে পারল না ওরা। চোট সারিয়ে ফিরে এসে বিরাট কোহালি যতটা পারল, করল। কিন্তু সেটাও ওর টিমকে জেতানোর পক্ষে যথেষ্ট ছিল না। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে গেলে আরসিবি-কে কিন্তু এ বার সেরাটা বার করে আনতে হবে।
রবিবারের রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টের বিরুদ্ধে ম্যাচটা বাদ দিয়ে দেখছি, চারটের মধ্যে তিনটে ম্যাচে আরসিবি হেরেছে। বাকি দশটা ম্যাচের মধ্যে পাঁচটা ঘরের মাঠে। ওদের ঘরের মাঠে দু’টো ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। সেটা দেখে মনে হয়েছে পিচটা বেশ স্লো। এ রকম পিচে আরসিবি-র মেগা ব্যাটিং লাইন আপ সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা হল, আপনি পার্টির জন্য পুরোপুরি তৈরি, কিন্তু পার্টিতে যাওয়ার আমন্ত্রণপত্রের বদলে আপনাকে শোকবার্তা পাঠানো হচ্ছে! সমস্যা তো হবেই।
দু’টো হোম ম্যাচের একটা দিন-রাতের আর একটা রাতের ম্যাচ ছিল। এই কপিটা লেখার সময় আরসিবি-পুণে ম্যাচটা শুরু হয়নি। তার আগের ম্যাচটায় দেখেছি বল ভাল ব্যাটে আসছে না। যা ক্রিস গেইলের কাছে মোটেই কাঙ্ক্ষিত জিনিস নয়। ওর এমন পিচ দরকার যেখানে বাউন্সটা সমান থাকবে আর বল ভাল ব্যাটে আসবে। শুধু গেইল কেন, আরসিবি-র টপ অর্ডারও সে রকমই পিচ পছন্দ করে। তবে একটা কথা বলতে চাই। পিচ যে রকমই হোক বা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ওপেনার যে রকম ফর্মেই থাকুক না কেন, গেইলকে খেলিয়ে যাওয়া উচিত আরসিবি-র।
আরও পড়ুন: ঘরের মাঠে গতির সঙ্গে যুদ্ধ গোতির
আরও যে দামি বিদেশি এ বার আরসিবি টিমে আছে, সেই টাইমাল মিলসকে দেখে মনে হচ্ছে ছন্দে নেই। ইংল্যান্ডের এই ফাস্ট বোলারকে মনে হচ্ছে, যেন কোনও মেরু ভালুককে সাহারায় ছেড়ে দিয়ে বলা হয়েছে, এখানে তোমাকে বাঁচতে হবে। মিলসের যেটা সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল, সেই ভয়ঙ্কর গতিটা চিন্নাস্বামীর স্লো পিচে ভোঁতা হয়ে গিয়েছে।
তবে আরসিবি-র দু’জন নিশ্চয়ই জীবনটা খুব উপভোগ করছে। যুজবেন্দ্র চহাল এবং স্যামুয়েল বদ্রী। চহালকে অবশ্য ওর লেংথটা একটু বদলাতে হবে। ও ফুল লেংথে বল করতে ভালবাসে। এ বারের চিন্নাস্বামী-তে কিন্তু ওকে সামনে টেনে আনতে হবে ব্যাটসম্যানদের। টুর্নামেন্ট যত এগোবে, পবন নেগিও কিন্তু বড় বাজি হয়ে উঠবে আরসিবি-র জন্য। ওর মনোবলটা ঠিক রাখতে হবে শুধু।
চিন্নাস্বামীর পিচ কিউরেটরের কাছে এটা প্রায় বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত যে, আরসিবি যে রকম পিচ চায়, সে রকম পিচই দেওয়া। প্রয়োজনে এই নতুন পিচের ডিএনএ বদলে দিতে হবে! ঘরের মাঠের দর্শকদের যে করে হোল গেইল-ঝড় উপহার দিতেই হবে।
তবে এত সবের পরেও বলতে হবে, অন্য টিমগুলো কিন্তু আরসিবি-কে নিয়ে চিন্তায় থাকবে। এই টিমটা কিন্তু যে কোনও টিমকে আঘাত করতে পারে।
সমস্যা একটাই। হোম টিমের ব্যাটসম্যানরা কিন্তু ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ পাচ্ছে না। ঘরের মাঠটা আরসিবি-র কাছে শত্রু হয়ে উঠেছে।