IPL 2023

শুভমনে মোহিত গুজরাত! ফাইনালে ধোনির চেন্নাইয়ের সামনে হার্দিক, রশিদরা, স্বপ্নভঙ্গ রোহিতদের

পাঁচ বারের আইপিএলজয়ী মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে দিল গুজরাত টাইটান্স। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে আমদাবাদেই ফাইনাল খেলবেন হার্দিকরা। গত বারের খেতাব ধরে রাখার লড়াই তাঁদের সামনে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ২৩:৫৮
Share:

শতরানের পর রোহিতের শুভেচ্ছা শুভমনকে। ছবি: পিটিআই।

আইপিএলের ফাইনালে উঠতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হত। শুক্রবার সেই ম্যাচের শুরুটাই দুর্দান্ত করল গুজরাত টাইটান্স। শুভমন গিলের শতরান তাদের বড় রান তুলতে সাহায্য করে। কথায় আছে, সকালটাই বুঝিয়ে দেয়, দিনটা কেমন যাবে। হার্দিক পাণ্ড্যরাও বুঝিয়ে গিয়েছিলেন ম্যাচটা তাদের দিকেই যাচ্ছে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই খেলল গুজরাতের বোলাররা। মুম্বইকে ৬২ রানে হারিয়ে আইপিএলের ফাইনালে গুজরাত। টানা দু’বার।

Advertisement

শুক্রবার আমদাবাদে বিকেল থেকে বৃষ্টি। টসই করা গেল না সন্ধে ৭টার সময়। ৪৫ মিনিট পিছিয়ে দেওয়া হয় টস। খেলা শুরু হয় রাত ৮টায়। শুভমন এবং ঋদ্ধিমান সাহা ওপেন করতে নেমে প্রথম ছ’ওভারে শেষ ভাবে বড় শট খেলতে পারেননি। শুভমন ইনিংসের মাঝে বলেন, “নতুন বলটা খেলতে একটু সমস্যা হচ্ছিল। তবে দু’ওভার পর থেকেই বল ভাল ভাবে ব্যাটে আসছিল।” সাময়িক অসুবিধা কাটাতে যদিও বেশি সময় নেননি শুভমন। ১৬ বলে ১৮ রান করে ঋদ্ধিমান আউট হন। পীযূষ চাওলা গুজরাতের ওপেনিং জুটি ভাঙেন। এর মাঝে শুভমনের ক্যাচ ফেলেন টিম ডেভিড। পীযূষের বলেই স্টাম্পের সুযোগ ফস্কান ঈশান কিশন। দু’বার জীবন ফিরে পাওয়া শুভমন সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগালেন। ৩২ বলে ৫০ রানে পৌঁছে যান তরুণ ওপেনার। এর পর ঝড় তুললেন তিনি। ৫০ থেকে ১০০ রানে পৌঁছাতে নিলেন মাত্র ১৭টি বল। গত ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়া আকাশ মাধোয়াল এই ম্যাচ ভুলে যেতে চাইবেন। শুভমনের সামনে তাঁকে বার বার অসহায় লাগল। ৪ ওভারে ৫২ রান দিয়ে গেলেন আকাশ। শুভমনের উইকেটটিও তিনি নেন। কিন্তু ৬০ বলে ১২৯ রান করে ডেভিডের হাতে যখন ক্যাচ দিলেন শুভমন, গুজরাতের স্কোরবোর্ডে তখন ১৯২ রান।

শুভমন যখন ১০টি চার এবং সাতটি ছক্কা দিয়ে নিজের ইনিংস সাজাচ্ছেন, উল্টো দিকে সাই সুদর্শন তখন সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। চাপ মুক্ত ভাবে শুভমনকে স্ট্রাইক দিচ্ছেন, কখনও আবার বোলারের মাথার উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাচ্ছেন। ৩১ বলে ৪৩ রান করেন তিনি। ১৩৮ রানের জুটি গড়েন শুভমন এবং সুদর্শন।

Advertisement

দর্শনীয় ইনিংস খেলে শুভমন ফেরার পর মুম্বইয়ের লক্ষ্য ছিল বড় রান তোলা। তাই সুদর্শনকে তুলে নিয়ে রশিদ খানকে নামিয়ে দেয় তারা। দু’টি বল খেলা আফগান অধিনায়ক পাঁচ রান করেন। অধিনায়ক হার্দিক করেন ১৩ বলে ২৮ রান। তিনি দু’টি ছক্কা এবং দু’টি চার মারেন। ২৩৩ রান তোলে গুজরাত। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ের ম্যাচে যা চাও আরও বাড়িয়ে দেয় রোহিতদের।

টস জিতেছিলেন রোহিত। মনে করেছিলেন রানের লক্ষ্য দেখে তাড়া করবেন। নিজেদের হাতে রাখবেন ম্যাচের রাশ। বৃষ্টি পড়ায় সেই সময় তাঁর সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হয়েছিল। কিন্তু শুভমনের দাপটে সেই সব আশা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে যোগ হয় ঈশানের চোট। মাঠে সতীর্থ ক্রিস জর্ডনকে বাহবা জানাতে গিয়ে তাঁর কনুইয়ে আঘাত লাগে ঈশানের। সঙ্গে সঙ্গে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। ব্যাট করতেও নামতে পারেননি। তাঁর জায়গায় মুম্বই নামায় বিষ্ণু বিনোদকে। রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নেহাল ওয়াদেরা। তাঁরা কেউই বড় রান করতে পারেননি। এর মাঝে কনুইয়ে চোট লাগে ক্যামেরন গ্রিনের। তিনি প্রথমে উঠে গেলেও পরে আবার ব্যাট করতে নেমেছিলেন। তাতেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি।

মুম্বইয়ের হয়ে রান তাড়া করার কাজটা করেন তিলক এবং সূর্যকুমার। তিলক ১৪ বলে ৪৩ রান করেন। সূর্য করেন ৩৮ বলে ৬১ রান। জিততে হলে এই দু’জনের এক জনকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হত। সেটাই পারলেন না তাঁরা। কখনও রশিদ খান, কখনও জস লিটল মুম্বইয়ের জুটি ভেঙে দিলেন। আর শেষের কাজটা করলেন মোহিত শর্মা। তাঁকে প্রথম দিকে বলই করাননি হার্দিক। ডেথ ওভারের জন্য রেখে দিয়েছিলেন মোহিতকে। সত্যিই মৃত্যু ফাঁদ পাতলেন তিনি। ২.২ বলে পাঁচ উইকেট নিলেন মোহিত। দিলেন ১০ রান। শুভমন যেটা শুরু করেছিলে, মোহিত সেটাই শেষ করলেন। ফাইনালে পৌঁছে গেল গুজরাত। সামনে এ বার ধোনির চেন্নাই। রবিবার সেই লড়াই দেখার জন্য ভিড় হবে আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement