মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ছবি: আইপিএল।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি মানেই আলাদা উন্মাদনা। চেন্নাই সুপার কিংসের ইনিংসের শেষ দিকে যখন ব্যাট করতে নামছেন, প্রতি ম্যাচেই সে সময় দর্শকদের চিৎকার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাঁর জনপ্রিয়তা দেখে মুগ্ধ বিদেশি ক্রিকেটারেরাও।
শুক্রবার লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ধোনি ব্যাট করতে নামার সময় একনা স্টেডিয়ামে শব্দের মাত্রা ছাড়িয়েছিল ৯৫ ডেসিবেল। টানা ১০ মিনিট এই মাত্রায় শব্দ হলে যে কোনও মানুষ অস্থায়ী ভাবে বধির হয়ে যেতে পারেন। ধোনির জনপ্রিয়তা এবং তাঁকে নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের এই উন্মাদনার প্রমাণ ধরা পড়েছে লখনউয়ের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার কুইন্টন ডিককের স্ত্রী সাসা ডিককের স্মার্ট ঘড়িতে। বিস্মিত সাসা ধোনির ব্যাট করতে নামার সময়ে তাঁর ঘড়ির স্ক্রিনের ছবি সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
সাসা ডিককের পোস্ট। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারের স্ত্রী নন, ধোনির তুমুল জনপ্রিয়তায় বিস্মিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের নিকোলাস পুরানও। তিনি বলেছেন, ‘‘শুধু এই মরসুমে নয়, প্রত্যেক মরসুমে একই জিনিস দেখছি। ধোনি ব্যাট করতে নামার সময় গ্যালারির দিকে তাকালে মনে হয় হলুদ সমুদ্রের মাঝে রয়েছি। এটা একটা অসাধারণ দৃশ্য। ভারতে ধোনি জাতীয় নায়কের সম্মান পায়।’’ পুরান আরও বলেছেন, ‘‘ব্রায়ান লারার সঙ্গে খেলার সুযোগ হয়নি আমার। আমাদের দেশে সকলে লারার অন্ধ ভক্ত। তবে ধোনির এই জনপ্রিয়তা দেখাও একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। দারুণ অনুভূতি হয়। ধোনির মতো ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। এই মুহূর্তগুলো ভোলা সম্ভব নয়। আমার সন্তানদের জন্য তো বটেই ভবিষ্যতে নাতি-নাতনিদেরও গল্প শোনাতে পারব। না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।’’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লখনউ অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও মেনে নিয়েছেন ধোনি ব্যাট করতে নামলে পরিস্থিতি মুহূর্তে বদলে যায়। দলমত নির্বিশেষে দর্শক সমর্থন এমন জায়গায় পৌঁছে যায়, বোলারেরা চাপে পড়তে বাধ্য। রাহুল বলেছেন, ‘‘একটা সময় মনে হয়েছিল চেন্নাইকে ১৬০ রানের মধ্যে আটকে রাখতে পারব। কিন্তু ধোনি ভাই নামার পর সব হিসাব গুলিয়ে গিয়েছে। আমাদের বোলারেরা চাপে পড়ে যায়। ধোনি ভাইকে দেখলে প্রতিপক্ষের বোলারেরা কিছুটা ঘাবড়ে যায়। আমাদের তরুণ বোলারদেরও তাই হয়েছিল দর্শকদের প্রবল চিৎকারের মাঝে। তাতে ১৫-২০ রান বেশি খরচ করে ফেলেছে ওরা।’’ ধোনিকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত রাহুল আরও বলেছেন, ‘‘লখনউয়ে খেলা হয়েছে। অথচ গ্যালারি দেখে মনে হচ্ছিল আমরা মিনি চেন্নাইয়ে খেলছি। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা সব সময় আলাদা। আমাদের দলটা তরুণ। অনেকের বয়স কম। এমন দর্শকদের সামনে খেলার সুযোগ পেয়ে সবাই খুশি। এটাও একটা অভিজ্ঞতা।’’
এ বার আইপিএল শুরুর আগে চেন্নাইয়ের নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন ধোনি। ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ মনে করছেন, প্রতিযোগিতা শেষ হলে অবসর নিয়ে নেবেন জোড়া বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক। তাই দেশের সব মাঠেই ধোনিকে ঘিরে উন্মাদনার মাত্রা এ বার অনেকটাই বেশি। যা বিস্মিত করছে বিদেশি ক্রিকেটার এবং তাঁদের স্ত্রীদের। চাপে ফেলে দিচ্ছে প্রতিপক্ষ দলকেও।