উদগ্রীব: আইপিএলে মাঠে নামতে মুখিয়ে আছেন কামিন্স। ছবি: টুইটার।
পাকিস্তান সফর শেষ হওয়ার পরেই তিনি চলে আসছেন ভারতে। নেমে পড়বেন আইপিএলের দ্বৈরথে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সি গায়ে খেলতে কতটা মুখিয়ে আছেন প্যাট কামিন্স, তা রবিবার বোঝা গেল অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়কের সঙ্গে আলাপচারিতায়।
আজ, সোমবার থেকে লাহোরে শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের মধ্যে শেষ টেস্ট। তার ২৪ ঘণ্টা আগে আনন্দবাজার-সহ ভারতের বাছাই করা কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জ়ুম কলে কথা বললেন কামিন্স। যেখানে আইপিএলের প্রসঙ্গ উঠতেই হাসি মুখে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার বলে উঠলেন, ‘‘খুবই উত্তেজিত হয়ে আছি আইপিএল খেলার জন্য। সবার সঙ্গে আবার দেখা হবে। কেকেআরে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছে। যাদের সঙ্গে দেখা করার তর সইছে না।’’
পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট শেষ হওয়ার কথা ২৫ মার্চ। আইপিএলে কেকেআর নামছে পরের দিন, ২৬ মার্চ। অর্থাৎ, চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা নেই কামিন্সের। নতুন চেহারার এই কেকেআরকে নিয়ে কী ভাবছেন তিনি? কামিন্সের জবাব, ‘‘খুব যে বদল হয়েছে, তা কিন্তু নয়। আমাদের দলটা মোটামুটি ধরে রাখা হয়েছে। শুধু ক্রিকেটারদেরই নয়, সাপোর্ট স্টাফের ক্ষেত্রেও কথাটা খাটে।’’ যোগ করেন, ‘‘বেশির ভাগ ক্রিকেটার খুব ভাল করে চেনে সাপোর্ট স্টাফ এবং দলের বাকিদের।’’
কেকেআরের দায়িত্বে এ বার নতুন অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার। কী ধারণা আপনার অধিনায়ক শ্রেয়সকে নিয়ে? কামিন্স জানাচ্ছেন, এর আগে তৎকালীন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে থাকার সময় তিনি শ্রেয়সের সতীর্থ ছিলেন। কামিন্সের কথায়, ‘‘আমি এর আগে দিল্লিতে শ্রেয়সের সঙ্গে খেলেছি। ওকে ভালই চিনি। আমাদের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক।’’
আগের অভিজ্ঞতা থেকে কামিন্সের বিশ্বাস, ঠান্ডা মাথায় দলকে সামলাতে পারবেন শ্রেয়স। নাইটদের অন্যতম অস্ত্র বলে দিলেন, ‘‘শ্রেয়স খুবই ঠান্ডা মাথার ছেলে। ঠান্ডা মাথায় সব সামলাবে। এই মুহূর্তে ও খুব ভাল ছন্দে আছে। আবার বলছি, দলের সঙ্গে যোগ দিতে মুখিয়ে আছি।’’
ক্রিকেটবিশ্বে বিরাট কোহলি-বাবর আজ়মের তুলনা অনেক দিন থেকেই হচ্ছে। করাচি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ম্যাচ বাঁচানোর পরে সেই তুলনা আরও বেশি করে উঠছে। আপনি দু’জনের বিরুদ্ধেই বল করেছেন। আপনার কি মত দু’জনকে নিয়ে? কামিন্সের জবাব, ‘‘ওরা দু’জনেই পরিপূর্ণ ব্যাটার। তা যে কোনও ফর্ম্যাটেই হোক না কেন। সব সময় কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয় বিপক্ষকে। আমি এক জনকে এক নম্বর, অন্য জনকে দু’নম্বর— এই ভাবে র্যাঙ্কিং করতে চাই না।’’ বলে চলেন, ‘‘এটুকু বলব, দু’জনের বিরুদ্ধেই বল করা কঠিন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিরাট-বাবর, দু’জনেরই বড় সেঞ্চুরি আছে।’’ বাবরের করাচির ইনিংস নিয়ে কামিন্সের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ও সত্যিই একটা অসাধারণ ইনিংস খেলল। বাবর কোনও সুযোগই দেয়নি। চারশোর ওপর বল খেলেছে। শুধু তো ব্যাটিং দক্ষতাই নয়, ওর মনঃসংযোগও অসাধারণ ছিল। সব দলেই দু’এক জন করে মহাতারকা আছে। পাকিস্তানে বাবর হল সে রকম এক জন ব্যাটার।’’
বিরাট, বাবর, কেন উইলিয়ামসনদের মতো ব্যাটারদের মধ্যে মিলটা কোথায়? ‘‘ওরা দারুণ ভাবে নিজেদের খেলাটা জানে। কখনও ঘাবড়ে যায় না। দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাট করতে পারে। সব সময় সুযোগ খোঁজে দ্রুত খাতা খুলতে। ওদের বিরুদ্ধে প্রথম বল থেকেই নিশানায় থাকতে হয়। না হলে দেখা যাবে ওরা দ্রুত উইকেটে জমে গিয়েছে,’’ ব্যাখ্যা কামিন্সের।
এমসিসি সদ্য জানিয়েছে, লালা ব্যবহার করে আর বল পালিশ করা যাবে না। এতে কি সুইং বোলাররা সমস্যায় পড়বে না? কামিন্স তা মনে করছেন না। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আমার মনে হয় না এই নিষেধাজ্ঞা বিশেষ কোনও সমস্যা তৈরি করবে বলে। গত দু’বছর ধরেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। সবাই যে রকম ভেবেছিল, এতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হবে, সেটা হয়নি। আমরা ঘামটা ব্যবহার করতে পারছি। এটা বিরাট কোনও সমস্যা নয়।’’
পাক সফরে নিষ্প্রাণ পিচে খেলতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে। এই ধরনের পিচ নিয়ে কী বলবেন? কামিন্স বলেন, ‘‘আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে এই নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমরা যে পিচে খেলছি, বিপক্ষও সেই একই পিচে খেলছে। তবে সবাই ম্যাচে হার-জিত দেখতে চায়। আশা করব, শেষ টেস্টে ভাল উইকেট পাব।’’ এও বলে গেলেন, ‘‘এখানে রিভার্স সুইং একটা বড় অস্ত্র হতে পারে। কিন্তু কতটা রিভার্স সুইং পাব, তা নির্ভর করবে পিচ কতটা শুকনো, তার উপরে।’’