মহড়া: ভরসা তিনিই। লখনউ ম্যাচের জন্য তৈরি রাসেল। আইপিএল
তাঁদের প্লে-অফে ওঠার দৌড় আজ, বুধবারই শেষ করে দেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষ ডাগ আউটে এমন এক জন অপেক্ষা করে থাকবেন, যাঁর হাত ধরে প্রথম বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
তিনি— লখনউ সুপার জায়ান্টসের মেন্টর গৌতম গম্ভীর।
ক্রমশ ম্লান হয়ে আসা প্লে-অফ স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে কেকেআর আবার তাকিয়ে থাকবে এমন এক জনের দিকে, যিনি একার হাতেই অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন শাহরুখ খানের দলকে।
তিনি— ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল।
প্লে-অফে ওঠার দৌড়ে টিকে থাকার রাস্তায় নাইটদের সামনে অঙ্কটা খুব সহজ। বুধবার লখনউ সুপার জায়ান্টসকে হারাতেই হবে এবং বড় ব্যবধানে হারাতে হবে। যাতে নেট রানরেটে দিল্লি ক্যাপিটালসের (০.২৫৫) উপরে চলে যাওয়া যায়। নাইটদের নেট রানরেট এখন ০.১৬০। আর প্রার্থনা করতে হবে নিজেদের শেষ ম্যাচে যেন হেরে যায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও দিল্লি ক্যাপিটালস। এমনকি শেষ ম্যাচে জিতলেও বিশাল ব্যবধানে জেতা চলবে না পঞ্জাব কিংস এবং সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদকে। সব শর্ত পূরণ হলে ১৪ পয়েন্টে এসে শেষ করা দলগুলোর মধ্যে নেট রানরেটের হিসেবে প্লে-অফে উঠে যাবে কেকেআর।
যাবতীয় অঙ্ক অবশ্য শেষ হয়ে যাবে কে এল রাহুলের লখনউয়ের কাছে হারলেই। সেটা যাতে না হয়, তা দেখার দায়িত্ব পড়বে রাসেলের উপরেই। চলতি আইপিএলে নাইটদের বেশির ভাগ জয়ের নেপথ্যে রয়েছে ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের অবদান। ১৩ ম্যাচে রাসেলের সংগ্রহ ৩৩০। স্ট্রাইক রেট ১৮২.৩২! মেরেছেন ৩২টি ছয়। আবার বল হাতে তুলে নিয়েছেন ১৭টি উইকেট।
আগের ম্যাচে সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে উঠে রাসেল হুঙ্কার দিয়েছিলেন, ‘‘শেষ ম্যাচ আমাদের কাছে ফাইনাল। ওই ম্যাচও জিততে চাই।’’ লখনউয়ের বিরুদ্ধে নামার আগে অবশ্য ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন এই বিস্ফোরক ব্যাটার। নাইটদের তরফে ইউটিউবে তুলে দেওয়া এক ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, চট জলদি ২০টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। যেখানে রাসেল নিজের সর্বকালের প্রিয় ক্রীড়াবিদ হিসেবে বেছে নিয়েছেন কিংবদন্তি ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে। তবে তাঁর পছন্দের বলিউড অভিনেতা কে, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি রাসেল। বলেছেন, ‘‘কোনও মন্তব্য করব না। অনেকেই আমার প্রিয় অভিনেতা।’’
গ্রুপের শেষ ম্যাচে একটা পরিবর্তন করতেই হবে নাইটদের। চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন ওপেনার অজিঙ্ক রাহানে। তাঁর জায়গায় বাবা ইন্দ্রজিৎকে ফিরিয়ে আনা হয়, না কি সুনীল নারাইনকে দিয়ে আর এক বার ওপেন করিয়ে দেখা হয়, সেটাই প্রশ্ন।
লখনউ সুপার জায়ান্টসের মসৃণ দৌড়টা হঠাৎ ধাক্কা খেয়েছে পর পর দু’টো ম্যাচ হেরে। দলের আত্মসমর্পণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না লখনউয়ের মেন্টর গম্ভীর। ড্রেসিংরুমে তিনি ক্রিকেটারদের ডেকে বলেছেন, ‘‘হারটা মানা যায়। কিন্তু লড়াই না করে হারটা কোনও ভাবেই মানা যায় না।’’
গম্ভীরের এই লড়াইয়ের বার্তা তাঁর নতুন দলকে পুরনো দলের বিরুদ্ধে কতটা তাতিয়ে তুলতে পারে, সেটা অনেকেই দেখতে চাইবেন। কেকেআরকে হারাতে পারলেই কিন্তু প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলবেন রাহুলরা।
‘র্যাপিড ফায়ার’ প্রশ্নোত্তর পর্বে রাসেলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেকেআরের হয়ে সেরা মুহূর্ত আপনার কাছে কোনটা? রাসেল বলে গেলেন, ‘‘২০১৪ সালে যখন কেকেআরের হয়ে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হই।’’ নতুন কোনও স্মৃতি এ বার রাসেলের সংগ্রহে থাকে কি না, সেটাই এখন দেখার।