প্রস্তুতি: কেকেআরের পুল সেশনে অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। ছবি: টুইটার
নিজের ঘরের মাঠে ম্যাচ জেতাটা বরাবরই একটা বড় চ্যালেঞ্জ গৌতম গম্ভীরের কাছে। সোমবার ফের সেই চ্যালেঞ্জে কেকেআর অধিনায়ককে সামলাতে হবে তিন জন ফর্মে থাকা দিল্লি ডেয়ারডেভিলস পেসারকে।
কোনও সন্দেহ নেই যে, কোটলায় আজ, সোমবার আসল লড়াইটা গম্ভীর-উথাপ্পাদের সঙ্গে দিল্লির পেসারদের। যে দলে আছেন স্বয়ং দিল্লি অধিনায়ক জাহির খান। যিনি এই আইপিএলে অভাবনীয় ফর্ম দেখাচ্ছেন। তিন ম্যাচে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। আছেন ক্রিস মরিস। যিনি তিন ম্যাচে নিয়েছেন সাত উইকেট। দু’জনেরই কিন্তু গম্ভীর এবং উথাপ্পার বিরুদ্ধে ভাল সাফল্য রয়েছে। এঁদের সঙ্গে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক্সপ্রেস গতির বোলার প্যাট কামিন্স।
ক্রিকেট মহলে এটা আর কোনও অজানা তথ্য নয় যে, দ্রুতগতির শরীরের দিকে ধেয়ে আসা বল খেলতে পছন্দ করেন না কেকেআর ব্যাটিংয়ের দুই ফর্মে থাকা, দুই স্তম্ভ গম্ভীর এবং উথাপ্পা। গতির সামনেই তাঁদের অসহায় দেখায়। এ বারে দু’জনে একসঙ্গে ওপেন করতে নামছেন না। গম্ভীর শুরুতে নামছেন সুনীল নারাইনের সঙ্গে। উথাপ্পা আগের দিন তিন নম্বরে নেমে রান পেয়েছেন। দিল্লিতে ফিরোজ শা কোটলার পিচের চরিত্র মন্থর গতির হলেও জাহির-রা শরীর লক্ষ্য করে আক্রমণ করতে পারে গম্ভীর-উথাপ্পাকে। সেই দ্বৈরথ তাঁরা জিততে পারেন কি না, দেখার।
গম্ভীরকে মোট পাঁচ বার আউট করেছেন জাহির। মরিস তিন বার তাঁকে ফিরিয়েছেন। মরিসের বিরুদ্ধে রান করতে গিয়ে সমস্যা পড়েন গম্ভীর। কয়েক দিন আগেই অবশ্য গম্ভীর নিজের শহরে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘‘আইপিএল কেরিয়ারটা দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলে শেষ করাটা আমার স্বপ্ন।’’ সেই স্বপ্ন তাঁর পূরণ হবে কি না, কেউ জানে না। কিন্তু কোটলায় ভাল পারফরম্যান্স ও জয়, দুটোই তাঁর চাই-ই চাই। যা গতবার হয়নি। কিন্তু তার আগের দু’বার হয়েছে। রবিবার দিল্লিতে ফোন করে জানা গেল, দুপুরে নিজের শহরে পৌঁছে টিম হোটেলে মালপত্র রেখে নাইট অধিনায়ক পৌঁছে যান রাজেন্দ্র নগরে নিজের বাড়িতে। সোমবারের ম্যাচের জন্য ভরপুর অক্সিজেন নিতে। যদিও তাঁর দল বেশ মসৃণ ভাবে এগোচ্ছে এ বারের আইপিএলে। একটাই ম্যাচ হেরেছে তারা। তাও একেবারে শেষ মুহূর্তে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে। সুনীল নারাইনকে ওপেন করতে পাঠানোর ফাটকাও প্রথম দিনই লেগে যায়।
আরও পড়ুন: পোলার্ড-রোহিতের দাপটে সহজ জয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের
পেসাররা যেমন শুরুটা ভাল করছেন, বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার কাজটা দিব্যি করছেন স্পিনাররা। অবস্থা এমনই যে সাকিব আল হাসানের মতো স্পিনার অলরাউন্ডারকে বাইরে বসে থাকতে হচ্ছে। কুলদীপ, চাওলাদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে হচ্ছে। নাথান কুল্টার নাইলকেও নামানো যায়নি এখন পর্যন্ত। দলের এই স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা নিয়ে গম্ভীর অবশ্য বেশ খুশি। তাঁর খুশির আরও একটা কারণ, রবিন উথাপ্পা-সহ তাঁর মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ক্রমশ ফর্মে ফিরছেন। শনিবারই ইডেনে সে কথা জানান নাইট অধিনায়ক।
এ বার কোটলার পরীক্ষায় সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পালা। কোটলায় পাটা উইকেট। দু’দিন আগেই দিল্লি প্রথমে ব্যাট করে ১৮৮ রান তুলেছে। তাই দলে একাধিক পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই বলেই নাইটদের অন্দরমহল থেকে শোনা গেল। তবে শেষ মুহূর্তে কিছু হবে কি না, কিছুই বলা যায় না।
এ দিন ছিল নাইটদের ছুটির দিন। দুপুরে তাই সবাই মিলে হইহই করে টিম হোটেলের সুইমিং পুলে নেমে পড়েন। আগের রাতেই দলে যোগ দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে অলরাউন্ডার রভম্যান পাওয়েল। যাঁকে আন্দ্রে রাসেলের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায় বলে বলছেন অনেকে। তাঁদের দেশের ঘরোয়া সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বেশ দাগ কেটেছেন পাওয়েল। তাঁকেও দিল্লিতে আনা হয়েছে দলের সঙ্গে। ক্রিস ওকসের জায়গায় দিল্লির বিরুদ্ধে তাঁকে খেলিয়ে একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে কি না, সেই ভাবনা-চিন্তাও চলছে দলের মধ্যে।