পরাস্ত: বিষ্ণোইয়ের বলে স্টাম্প উড়ে গেল রাসেলের। জয়ের আশায় বড় ধাক্কা নাইটদের। শনিবার ইডেনে। নিজস্ব চিত্র।
মাত্র এক রানের জন্য কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচ হারলেও ইডেনের নায়ক সেই রিঙ্কু সিংহ। কেকেআর থেকে লখনউ সুপার জায়ান্টস, দুই দলের সমর্থকেরাই রিঙ্কুর জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন শেষ ওভারে। প্রয়োজন ছিল ২১ রান। মাত্র এক রানে হারে কেকেআর।
ম্যাচ শেষে রিঙ্কুর থেকে তাঁর ব্যাট চেয়েছিলেন লখনউ ওপেনার করণ শর্মা। কিন্তু রিঙ্কু নিজের ব্যাট দিতে চাননি। সাংবাদিক বৈঠকে এসে সরল রিঙ্কু বলেন, ‘‘নিজের ব্যাট কেন ওকে দেব? এই ব্যাটে এত রান করেছি। সেটা কী করে ওকে দিয়ে দিই?’’
শেষ ওভারে যখন ২১ রান প্রয়োজন ছিল, কী চলছিল নাইটদের নায়কের মাথায়? রিঙ্কুর উত্তর, ‘‘গুজরাতের বিরুদ্ধে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে যে ম্যাচ জিতিয়েছিলাম, সেই ম্যাচই আমাকে সাহস দিয়েছে। মাথায় ঘুরছিল যে, সেই ম্যাচে পারলে এখানে কেন পারব না?’’
কেকেআরের যাত্রা এই মরসুমের মতো এখানেই শেষ। রিঙ্কুর সামনে এখন বড় রাস্তা। ভারতীয় নির্বাচকদের মনে নিঃসন্দেহে জায়গা করে নিয়েছেন। প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রীও ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় বলছিলেন, ‘‘রিঙ্কুকে এ বার ভারতীয় দলে ভাবা উচিত।’’ যা শুনে আপ্লুত দিনের নায়ক। তাঁর মুখে এক গাল হাসি। বলছিলেন, ‘‘কেউ যখন আমাকে নিয়ে প্রশংসা করে, নিঃসন্দেহে ভাল লাগে। কিন্তু ভারতীয় দল নিয়ে এখনই ভাবছি না। আইপিএল এ বারের মতো শেষ। আবার আগের মতো পরিশ্রম শুরু করে দেব। এখানেই থামছি না।’’ রিঙ্কুর কণ্ঠে প্রত্যয়ের সুর। তিনি নিশ্চয়ই আন্দাজ করেছেন, এই জায়গা থেকে খালি হাতে আরফিরতে হবে না।
একটি মরসুম তাঁর কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। এক ম্যাচের বিস্ময় তিনি নন। যা আবারও প্রমাণ করলেন ইডেনে। তিনি মানছেন জীবন বদলে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘পরিবারের সকলে খুব খুশি। বন্ধুরাও আমাকে নিয়ে গর্বিত। সমর্থকেরা আমাকে নিয়ে খুশি। ক্রিকেটার হিসেবে এগুলোই তো প্রাপ্তি। কিন্তু এই কথা ভেবে বয়ে যেতে চাই না। এই ছন্দ চালিয়ে নিয়েযেতে হবে।’’
শেষ দু’ওভারে যখন ৪১ রান বাকি ছিল, লখনউ সুপার জায়ান্টসের ডাগ-আউটে বসে থাকা অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারও নিশ্চিত জয়ের আশায় শান্ত হয়ে বসে থাকতে পারেননি। রিঙ্কুর বিধ্বংসী ইনিংস কপালে ভাঁজফেলেছিল তাঁরও।
লখনউয়ের হেড কোচ ফ্লাওয়ার বলছিলেন, ‘‘১৫ ওভার পর্যন্ত আমরা খুব ভাল খেলেছি। কিন্তু রিঙ্কু সত্যি আমাদের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছিল। ও নিঃসন্দেহে ভারতের ভবিষ্যতের তারকা। তবে আমাদের বোলাররা শেষ পর্যন্ত চাপ ধরে রাখতে না পারলে বিপদ হত। লখনউয়েরজন্য আমি গর্বিত।’’
নাইটদের প্লে-অফ যাত্রার আশা হয়তো অপূর্ণ থেকে গেল। কিন্তু ভবিষ্যতের রাজা শেষ দিনেওদাপিয়ে গেলেন।