ইডেনেই ঘুম দিলেন শার্দূল। ছবি: আইপিএল
লোকে তাঁকে চেনে মূলত বোলার হিসাবেই। কিন্তু ব্যাটটাও যে খুব একটা খারাপ করেন না, শার্দূল ঠাকুর সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন বৃহস্পতিবার রাতে। ইডেন গার্ডেন্সে বিরাট কোহলিদের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে তাঁর তাণ্ডব দেখেছেন কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। ম্যাচের পর সেই ইডেনেই শুয়ে পড়লেন শার্দূল। সামনে ছিল তাঁর জেতা চারটি ট্রফি।
দলের বিপদের সময়ে একার হাতে কলকাতাকে টেনে তোলেন শার্দূল। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সাহায্যে ২৯ বলে ৬৮ রানের সাহায্যে কলকাতাকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেন। তার পরে বল হাতে ২ ওভারে ১৫ রানে একটি উইকেট তুলে নেন। স্বাভাবিক ভাবেই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার তাঁকে ছাড়া আর কাউকে দেওয়া সম্ভবও ছিল না।
পুরস্কার বিতরণীতে তিনিই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছেন। তবে একটি পুরস্কারেই থেমে থাকেননি। পকেটে ঢুকেছে আরও তিনটি। ম্যাচের সবচেয়ে মূল্যবান ক্রিকেটার, ইলেকট্রিক স্ট্রাইকার এবং ম্যাচে সবচেয়ে বেশি চার মারার পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। মোট চারটি ট্রফি সামনে নিয়ে ইডেনের সবুজ ঘাসে আরাম করে শুয়ে পড়লেন তিনি।
শার্দূলের ইনিংসে রয়েছে ৯টি চার এবং ৩টি ছক্কা। তিনি যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন ৮৯ রানে পাঁচ উইকেট চলে গিয়েছে। চরম বিপদের মুখে দাঁড়িয়েছিল কলকাতা। সেখান থেকে দলকে উদ্ধারই করেননি, কলকাতার রান দুশো পার করিয়ে দিয়েছেন। সেই চাপ সামলাতে পারেনি আরসিবি।
বৃহস্পতিবার শার্দূল যখন ব্যাট করতে নামেন তখন অন্য দিকে ব্যাট করছিলেন রিঙ্কু সিংহ। তাঁর প্রথম বল ব্যাটের কানায় লেগে বাউন্ডারিতে যায়। কিন্তু তার পরে সব বল ব্যাটের মাঝে খেলেন শার্দূল। আরসিবি বোলারদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করলেন। তাতেই কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেল বিরাট কোহলিদের বোলিং আক্রমণ।
পেসার, স্পিনার কাউকে রেয়াত করেননি শার্দূল। মাঠের চারদিকে শট খেলেন। হাওয়ায় শট মারার পাশাপাশি মাটি ঘেঁষা ক্রিকেটীয় শটও খেলেন। মাত্র ২০ বলে নিজের অর্ধশতরান করে ফেলেন শার্দূল। এ বারের আইপিএলে এটি দ্রুততম অর্ধশতরান। শেষ পর্যন্ত ৬৮ রানের ইনিংসে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। শার্দূলের ব্যাটে রোশনাই ছড়ায় ইডেনে।এই ইনিংস খেলে জোড়া নজিরও গড়েন শার্দূল। আইপিএলে ৭ নম্বর বা তার নীচে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় সর্বাধিক রান করলেন তিনি। তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন কলকাতারই আন্দ্রে রাসেল। ২০১৮ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ৩৬ বলে অপরাজিত ৮৮ রান করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন চেন্নাইয়ের ডোয়েন ব্র্যাভো। ২০১৮ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৩০ বলে ৬৮ রান করেছিলেন ব্র্যাভো।
আইপিএলে ষষ্ঠ উইকেট বা তার নীচে সব থেকে বেশি রানের জুটির তালিকাতেও তিন নম্বরে রয়েছেন শার্দূল ও রিঙ্কু। ২০১২ সালে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের অম্বাতি রায়ডু ও কাইরন পোলার্ড জুটি করেছিলেন ১২২ রান। তাঁরাই শীর্ষে রয়েছেন। ২০০৮ সালে কেকেআরের বিরুদ্ধে পঞ্জাব কিংসের ডেভিড হাসি ও ঋদ্ধিমান সাহা মিলে ১০৪ রান করেছিলেন। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন শার্দূলরা।