রাহুল দ্রাবিড়। —ফাইল চিত্র।
সারা বছর ভাল খেলেও ভারতীয় ক্রিকেট দল আইসিসির প্রতিযোগিতায় কাঙ্খিত সাফল্য পাচ্ছে না। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এক দিনের বিশ্বকাপ, টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনাল— সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা। আইপিএলের পর আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ভারতীয় দলকে সফল হওয়ার উপায় বলে দিলেন আইপিএলের অন্যতম সফল কোচ চেন্নাই সুপার কিংসের স্টিফেন ফ্লেমিং।
ফ্লেমিংয়ের মতে, একটা দল কীভাবে খেলতে চায় সেটা সবার প্রথমে ঠিক করে নেওয়া দরকার। সেই মতো দল নির্বাচন করতে হবে। তা হলেই প্রত্যাশিত ফল আসতে পারে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারতকে ঠিক এটাই করতে হবে। বিশ্বকাপে কেমন ক্রিকেট খেলবে দল, তা দল নির্বাচনের আগে ঠিক করে নেওয়া উচিত রাহুল দ্রাবিড়দের।
চেন্নাই কোচ বলেছেন, ‘‘অন্য দেশে বিশ্বকাপ খেলতে হবে। সেটা মাথায় রেখে কেমন ক্রিকেট খেলতে চায় বা কোন ধরনের ক্রিকেট তাদের জন্য ভাল হবে, সেটা আগে ঠিক করে নিতে হবে। সেই মতো ক্রিকেটারদের বেছে নিয়ে দল তৈরি করা উচিত। আগে দল বেছে তাদের দিয়ে নির্দিষ্ট ধরনের ক্রিকেট খেলালে সঠিক ফল পাওয়া কঠিন। কারণ, একেক জনের খেলার ধরন একেক রকম হয়। দলের খেলতে চাওয়া ধরনের সঙ্গে যাদের খেলার ধরন মিলবে, তাদেরই রাখা উচিত। দল তৈরির সময় খেয়াল রাখা দরকার, যাদের নেওয়া হবে তারা যেন সবাই ভাল ফর্মে থাকে। বিশ্বকাপে গিয়ে ফর্ম ফিরে পাবে এই ধারণা ঠিক নয়। বিদেশের পিচ, মাঠ, পরিবেশের দিকটাও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’’ ভারতের নির্বাচকদের কাজটা বেশ কঠিন বলে মনে করেন ফ্লেমিং। নিউ জ়িল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘এটা সম্ভবত বিশ্বের সব থেকে কঠিন কাজগুলোর একটা। ভারতে প্রচুর ক্রিকেট প্রতিভা। সবাই খেলার জন্য তৈরি। ওদের মধ্যে পার্থক্যও খুব কম। এ সব দেখে নিউ জ়িল্যান্ডের মানুষ হিসাবে আমার একটু ঈর্ষাই হয়।’’ এই প্রসঙ্গে চেন্নাইয়ের তরুণ ক্রিকেটার শিবম দুবের উদাহরণ দিয়েছেন ফ্লেমিং। চেন্নাই কোচ বলেছেন, ‘‘শিবমকে দেখুন। ওর শক্তিশালী শটগুলো আমার দারুণ লাগে। মনে হতে পারে আমি পক্ষপাতদুষ্ট। কিন্তু তা নয়। আসলে কোনও ক্রিকেটারের বিশেষ কোনও ক্ষমতা থাকলে তার পাশে থাকার চেষ্টা করি।’’
২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও ভারতীয় দলে স্থায়ী জায়গা করে নিতে পারেননি শিবম। দেশের হয়ে এখনও পর্যন্ত ২১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এবং একটি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন মুম্বইয়ের ক্রিকেটার। কারণ হিসাবে শিবমের ফর্মে না থাকার কথা বলেছেন ফ্লেমিং। চেন্নাই কোচের বক্তব্য, ‘‘সত্যি বলতে গত মরসুমে প্রচুর পরিশ্রম করেছিল শিবম। ওর সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। আইপিএলের নতুন নিয়ম (ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার) কাজে লাগাতে ওকে যাতে ব্যবহার করা যায়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছিলাম। সেটাই কাজে দিয়েছে। ওর মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে। সুযোগ কখন আসবে বা অপেক্ষা কতটা দীর্ঘ হবে, বলা যায় না। তবে সুযোগ এলে সেটা কাজে লাগানো যায়। শিবম ঠিক এটাই করার চেষ্টা করছে।’’
ফ্লেমিংয়ের মতে, সব রকম বল সমান দক্ষতায় মাঠের বাইরে পাঠাতে পারেন শিবম। এই দক্ষতাই চেন্নাইয়ের ব্যাটারকে বাকিদের থেকে আলাদা করেছে। এ বারের আইপিএলে শিবম এখনও পর্যন্ত পাঁচটি ম্যাচ খেলে করেছেন ১৭৬ রান। ১৬০ স্ট্রাইক রেট। তাঁর গড় ৪৪। সর্বোচ্চ ৫১। কমলা টুপির দৌড়ে ১১ নম্বরে রয়েছেন তিনি।