হুঙ্কার: শূন্যে লাফ বিধ্বংসী ওয়ার্নার ও বেয়ারস্টোর। টুইটার
প্রতি বছর আইপিএল এলে আমার মনে প্রশ্ন জাগে, বেঙ্গালুরুর এই দলটা বানায় কে? প্রথম দল সাজানোর পরিকল্পনা কার মগজ থেকে বেরোয়?
উত্তরে অনেকেই বলবেন, দলের অধিনায়ক যখন বিরাট কোহালি, তখন সব পরিকল্পনা ওর মস্তিষ্কপ্রসূত। এই মন্তব্যের সঙ্গে আমি সহমত নই। আইপিএলে ভাল দল হওয়ার শর্ত আমার মতে, ভাল পরিকল্পনা করা। যে ভাবে পরিকল্পনা করে দল গড়ে চেন্নাই সুপার কিংস, কলকাতা নাইট রাইডার্স। যেখানে পাওয়ার প্লে, ডেথ ওভার বোলিং, মিডল অর্ডার, অলরাউন্ডার, স্পিনার সব অঙ্ক কষে যেন দলভুক্ত করা হয়। নিলামে সেটাই তো করে না আরসিবি। তারই খেসারত দিতে হয় প্রতি বার।
আরসিবি দলটায় না আছে অলরাউন্ডার, না আছে পরিকল্পনা, না আছে ভাল বোলার। আর তারই সুযোগ নেয় সব প্রতিপক্ষ। রবিবার হায়দরাবাদে যেমন নিল ডেভিড ওয়ার্নাররা। কুড়ি ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান তুলল সানরাইজার্স।
দলটার সব পরিকল্পনা যেন বিরাট কোহালি আর এ বি ডিভিলিয়ার্সকে নিয়ে। ওরা খেললেই যেন দল জিতে যাবে। বিরাট বা ডিভিলিয়ার্স নিজেদের সেরাটা দেয়। কিন্তু রোজ রোজ এই দু’জনের পক্ষে জেতানো সম্ভব না কি? দলটার পাঁচ বা ছ’নম্বর ব্যাটসম্যান কে?
তিনটে ম্যাচ খেলে তিনটেতেই হারল আরসিবি। দলটায় নেই কোনও চিন্তাভাবনা। দলটার পিছনে আশিস নেহরা ও গ্যারি কার্স্টেনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক থাকলেও তিন ম্যাচেও ঠিক করতে পারেনি পার্থিব পটেলের সঙ্গী ওপেনার কে? কোনও দিন বিরাট কোহালি, কোনও দিন মইন আলি! আজ যেমন সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে খেলানো হল সিমরন হেটমায়ারকে। টিম সাউদির মতো পেসার, ওয়াশিংটন সুন্দরের মতো স্পিনার বসে থাকে। তার বদলে রান ক্ষুধার্ত ডেভিড ওয়ার্নারের সামনে হঠাৎ খেলিয়ে দেওয়া হল বাংলার ১৬ বছরের ক্রিকেটার প্রয়াস রায়বর্মনকে। বেচারা প্রয়াস মারমুখী জনি বেয়ারস্টো (১১৪) ও ডেভিড ওয়ার্নারের (ন.আ ১০০) বিরুদ্ধে ৪ ওভারে দিল ৫৬ রান। আমি নিশ্চিত ওকে পরের ম্যাচে খেলানো হবে না। তা হলে আত্মবিশ্বাস থাকবে কী করে? কেন কে এল রাহুলকে রাখা হয়নি?
বোলার হিসেবে উমেশ যাদব আগের ফর্মে নেই। একা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম বা যুজবেন্দ্র চহাল কী করবে। ফলে বিপক্ষ বুঝে যাচ্ছে আরসিবির বোলিংকে আক্রমণ করা যায়। উল্টো দিকে, বিরাট (৩) বা ডিভিলিয়ার্স (১) আউট হলে কোন ব্যাটসম্যান সামাল দেবে, সেই চিন্তাভাবনা নেই আরসিবি আধিকারিকদের। তাই ১১৩ রানে অলআউট হয়ে ১১৮ রানে হারের লজ্জা বইতে হল কোহালির দলকে।