কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচে নাইট শিবিরের নায়ক কে? প্রত্যেকেই এক বাক্যে বলছেন শুভমন গিল। তবে এই ম্যাচে অন্য এক নায়কও কিন্তু ছিলেন। তাঁর সম্পর্কেই জেনে নেওয়া যাক।
মাত্র ৩১ রান দিয়ে ২ উইকেট পান ইনি। ম্যাচে লোকেশ রাহুলকে ফেরানোর কিছুক্ষণ পরে ভয়ঙ্কর গেলকেও ডাগ আউটের পথ দেখান এই তরুণ এই ডানহাতি পেসার। এই দুই তারকা ব্যাটসম্যান আউট হওয়ায় কিছুটা হলেও নাইটদের কাজ সহজ হয়ে গেছিল।
এই ক্রিকেটারের নাম সন্দীপ ওয়ারিয়র। অথচ তাঁকে শুরু থেকে দলে নেওয়া হয়নি। কমলেশ নাগারকোটি এবং শিভম মাভি চোট পাওয়ায় পর তিনি নাইট শিবিরে সুযোগ পান। কেরলের পেসার সন্দীপ এই মরসুমে শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচটা খেললেন।
যদিও আইপিএলে তিনি নতুন নন। ২০১৩-১৫ তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের স্কোয়াডে ছিলেন। তবে কোনও ম্যাচে খেলেননি।
ঘরোয়া ক্রিকেটে কেরলের হয়ে দুরন্ত পারফর্ম করে নজর কেড়েছেন তিনি। ১০ ম্যাচে পেয়েছেন ৪৪ উইকেট। গড় ১৭.৫৪।
টি২০ ম্যাচের ক্ষেত্রেও ফর্ম ধরে রেখেছিলেন গ্রুপ পর্বে অন্ধ্রের বিরুদ্ধে একটি হ্যাটট্রিক-সহ ছয় ম্যাচে আট উইকেট দখল করেন তিনি। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ছ’টি ম্যাচে আটটি উইকেট পেয়েছিলেন। ৫.৮১ ইকনমি রেট ছিল তাঁর।
সন্দীপ কিন্তু কেরলের ছেলে হলেও জন্মেছেন মুম্বইয়ে। ১৯৯১ সালে জন্ম সন্দীপের। বাবা ব্যাঙ্ককর্মী। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে কেউ ভাবেননি ছেলে ক্রিকেটার হবেন। স্কুলে ভর্তি হন সন্দীপ। খেলতে শুরু করেন স্কুল টিমের হয়ে।
১৬ বছর বয়সে পরিবার ফিরে আসে কেরলে। খেলার সঙ্গে চলতে থাকে পড়াশোনাও। বিজ্ঞান নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশও করলেন। ২০১২-২০১৩ সালে তিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে শুরু করলেন। গোয়ার বিরুদ্ধে মালাপ্পুরমে কেরলের হয়ে দারুন খেললেন।
২০ বছর বয়সে রঞ্জি ট্রফিতে পাঁচটি ম্যাচ খেলে পেয়েছেন ২৪ উইকেট। গড় ১৯.২০। এ দিকে সন্দীপ তখন ভর্তি হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।
ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ৭৯ রানে নিলেন ৮ উইকেট। কেরল জিতে গেল এক ইনিংসে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র কলেজ ড্রপ করলেন। খেলাকেই বেছে নিলেন পেশা হিসাবে।
রঞ্জিতে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের পর এসিসি টুর্নামেন্টে সিঙ্গাপুরে সুযোগ পেলেন খেলতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ অ্যাওয়ার্ডও পেলেন।
২০১৮-২০১৯ সালে বিজয় হাজারে ট্রফি থেকে তিন ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড হন সন্দীপ। সচিনে বেবির বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ এসেছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনের নিয়মিত সদস্য তিনি। ছোটদের প্রশিক্ষণও দেন। নিজের পারফর্ম্যান্সের জন্য সব কৃতিত্ব কোচ এম সেনথিলনাথনকে দেন তিনি।