সংসারে নিত্য অনটন। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় বললে খুব একটা ভুল হবে না। কিন্তু ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দৌলতে স্বপ্নটা সত্যি হল। ক্রিকেট খেলেই বাড়ির পাশে দাঁড়ালেন ২১ বছরের তরুণ। এরকমই একজন ক্রিকেটার খেলছেন এ বারের আইপিএলে, নাইটদের সংসারে। তিনি রিঙ্কু সিংহ।
আলিগড়ের বছর কুড়ির এই ক্রিকেটার চরম দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে উঠে এসেছেন সংবাদের শিরোনামে। ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের ত্রাসের কারণও তিনি।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর ডেবিউ হয় ২০১৬ সালে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ডেবিউ হয় ২০১৪ সালে। ঝোড়ো ইনিংস খেলে মন জয় করে নেন তিনি।
প্রথম যখন খেলতে এলেন, বাড়িতে তখন ৫ লক্ষ টাকা ধার। অনূর্ধ্ব ১৯ খেলে সেই ধার একটু একটু করে তিনিই মিটিয়েছিলেন।
রিঙ্কুর বাবা খানচন্দ্র সিংহ গ্যাস বাড়ি বাড়ি সিলিন্ডার বিলি করতেন।
রিঙ্কুর দাদা অটোরিকশা চালান। আর এক ভাই কোচিং সেন্টারে কাজ করেন। তিন জন সাকুল্যে যা রোজগার করতেন, তাতে সংসার চালানো দায়।
২০১৮ সালে আইপিএলে ২০ লক্ষের এই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান নিলামের দুনিয়ায় হয়ে যান ৮০ লাখের ক্রিকেটার। তাঁকে কিনে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স।
সংসারের তাই যাবতীয় আশা-ভরসা হয়ে ওঠেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। আইপিএল নিলামের পরে বলেছিলেন, ‘‘দাদার বিয়েতে সাহায্য করব, ঘরে অবিবাহিত বোন আছে। তাঁর বিয়ে দিতে হবে। তাই মন দিয়ে ক্রিকেট খেলতে চাই।’’
চলতি বছরে কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলছেন রিঙ্কু সিংহ। প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং মুগ্ধ করেছিল জাক কালিসদের। এর আগে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়েও খেলেছেন তিনি।
সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে উত্তরপ্রদেশের জার্সিতে প্রশংসিত হয়েছে তাঁর ব্যাটিং। শেষ ম্যাচে ১৫ বলে ১৯ রান করে আউট হন।
লখনউয়ে রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে তাঁর রাজ্য উত্তরপ্রদেশের হয়ে মাঠে নেমে ১৫০ রান করেছিলেন ১৮১ বলে।
রিঙ্কুর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট বলছে, “স্বপ্ন তখনই সত্যি হয়, যখন তুমি জেগে উঠে সেই স্বপ্নকে তাড়া কর। আত্মতুষ্ট হলেই পারফরম্যান্সের দফারফা। বাধা বলে কিছু নেই। তা থাকে মানুষের মনের ভিতর।” এ ভাবেই এগিয়ে চলেছেন তিনি। স্বপ্ন দেখছেন, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার।