চমক ধরানো সব সাফল্য। দরজা খুলেছিল জাতীয় দলেরও। কিন্তু, জাতীয় দলে তেমন কিছু করতে পারেননি। বাদ পড়েন দল থেকে। আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে থাকেন নির্বাচকদের রেডার থেকেই। এরকমই একজনের কথা বলব আজ।
রাজস্থানের পেসার পঙ্কজ সিংহের কথা মনে পড়ে? রাজস্থানের এই লম্বা-ছিপছিপে বোলারটির ঘরোয়া ক্রিকেটে চমকে দেওয়া সাফল্য রয়েছে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের সম্ভাব্য দলে অনেকে দেখেছিলেন পঙ্কজকেও। ২০০৩ সালের অগস্টে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ডেবিউ হয় তাঁর।
পেস বোলিংয়ে তাঁর বৈচিত্র দেখে অনেকেই বলেছিলেন, জাতীয় দলে জাভাগাল শ্রীনাথের জায়গা নিতে চলেছেন তিনি। কারণ পঙ্কজ খুব শৃঙ্খলাবদ্ধ ছিলেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন তিনি।
অনূর্ধ্ব ১৯ থেকে ভারতীয় এ দলে সুযোগ পান তিনি। ২০০৭ সালে ভারত এ-র হয়ে জিম্বাবোয়ে-কেনিয়া সফরে মোট ১৮টি উইকেট দখলে ছিল তাঁর।
২০১০-২০১১, ২০১১-২০১২ রঞ্জি ট্রফিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন পঙ্কজ। তাঁর সতীর্থ ছিলেন আকাশ চোপড়া। ২০০৫-০৬ মরসুমে প্লেট গ্রুপ থেকে ফাইনাল খেলার পিছনেও পঙ্কজের অবদান ছিল৷ ২০০৯ সালে রঞ্জি ট্রফিতে উইকেটশিকারীদের মধ্যে সেরাদের মধ্যেই ছিলেন তিনি।
২০১০ সালের জুন মাসে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দেশের হয়ে একটিই একদিনের ম্যাচ খেলেন তিনি। পঙ্কজ সাত ওভার বল করে ৪৫ রান দিয়েছিলেন। পাননি কোনও উইকেট।
দেশের হয়ে দু’টি টেস্টও খেলেছেন তিনি। ২০১৪ সালের অগস্টে সাউদাম্পটনে টেস্টে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন পঙ্কজ। রাজস্থানের অধিনায়ক হৃষিকেশ কানিতকর বলেছিলেন, “পঙ্কজ হল সেই ধরনের বোলার যাঁরা শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভালবাসেন৷”
প্রথম ম্যাচে উইকেট না পেলেও পঙ্কজের বল খেলতে সমস্যা হয়েছিল ব্যাটসম্যানদের। ম্যাঞ্চেস্টারের ম্যাচে দু’টি উইকেট পান তিনি। উচ্চতার জন্য ভাল বাউন্স আদায় করতে পারতেন পঙ্কজ।
পঙ্কজের জন্মস্থান উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর জেলার বেহাতি গ্রাম৷ ‘কর্মস্থল’ রাজস্থান৷ আর পেশাদার ক্রিকেট শুরুর রাজ্য বাংলা।
কলকাতা থেকে পঙ্কজ গিয়েছিলেন চেন্নাইয়ে এমআরএফ পেস ক্যাম্পে৷ সেখান থেকে চলে যান জয়পুর৷ উত্তরপ্রদেশের পরিবর্তে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন রাজস্থানের হয়ে৷ প্রথম আইপিএলে তাঁর টিম ছিল রাজস্থান রয়্যালস৷ তবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে পরের আইপিএলে খেলেন তিনি।
হাওড়া ইউনিয়নে লম্বা চেহারার পঙ্কজের ডাকনাম ছিল ‘জ্যাভেলিন থ্রোয়ার’। রাজস্থানের হয়ে এখনও খেলছেন, তবে জাতীয় দলে ফেরার সম্ভাবনা প্রায় নেই। চোটের সমস্যাও রয়েছে।